ঢাকা | জুলাই গণ-অভ্যুত্থানে নেতৃত্বদানকারী তরুণদের নতুন রাজনৈতিক দল জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি) আত্মপ্রকাশ করেছে। শুক্রবার রাজধানীর মানিক মিয়া অ্যাভিনিউয়ে এক বিশাল জনসমাবেশের মাধ্যমে দলটি তাদের আনুষ্ঠানিক যাত্রা শুরু করে। নতুন সংবিধান প্রণয়ন ও ‘সেকেন্ড রিপাবলিক’ প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে গণপরিষদ নির্বাচনের দাবি জানিয়েছে দলটি।
জুলাই অভ্যুত্থানের অন্যতম নেতা নাহিদ ইসলাম এনসিপির আহ্বায়ক এবং জাতীয় নাগরিক কমিটির সদস্যসচিব আখতার হোসেনদলের সদস্যসচিব হিসেবে দায়িত্ব পেয়েছেন। তাঁরা বলেন, নতুন দল রাজনৈতিক, সামাজিক ও অর্থনৈতিক সংস্কারের মাধ্যমে একটি গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র বিনির্মাণের স্বপ্ন দেখছে।
দলের আত্মপ্রকাশ অনুষ্ঠানে নাহিদ ইসলাম বলেন, “আমরা আজকের এই মঞ্চ থেকে শপথ করছি—বাংলাদেশকে আর কখনোই বিভাজিত হতে দেব না। ভারতপন্থী বা পাকিস্তানপন্থী কোনো রাজনীতি বাংলাদেশে টিকে থাকতে পারবে না।”
নাহিদ ইসলাম বলেন, “আমরা বিদ্যমান ব্যবস্থার পরিবর্তন চাই। গণপরিষদ নির্বাচনের মাধ্যমে জনগণই নতুন সংবিধান প্রণয়ন করবে, যা হবে জনগণের অধিকারভিত্তিক একটি গণতান্ত্রিক সংবিধান।”
ঘোষণাপত্রে বলা হয়, দুর্নীতিমুক্ত, সাম্য ও মানবিক মর্যাদার ভিত্তিতে একটি নতুন রাষ্ট্রব্যবস্থা গঠনই এনসিপির মূল লক্ষ্য।সাধারণ মানুষের অধিকার রক্ষায় সামাজিক ন্যায়বিচার, শক্তিশালী প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা ও দুর্নীতি প্রতিরোধে কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণ করবে দলটি।
দলের আত্মপ্রকাশ অনুষ্ঠানে বিএনপি, জামায়াতে ইসলামী, গণসংহতি আন্দোলনসহ বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের প্রতিনিধিরা উপস্থিত ছিলেন। এতে অংশ নেন নাগরিক ঐক্যের সভাপতি মাহমুদুর রহমান মান্না, জেএসডির তানিয়া রব, খেলাফত মজলিসের নেতারা ও বেশ কয়েকটি ইসলামী দলের নেতারা।
অন্তর্বর্তী সরকারের উপদেষ্টা পরিষদ থেকে পদত্যাগ করা নাহিদ ইসলাম বলেন, “আমরা একটি নতুন বাংলাদেশ গড়ার শপথ নিয়েছি। এটি কোনো স্বপ্ন নয়, এটি আমাদের প্রতিজ্ঞা।”
জাতীয় নির্বাচনের আগে এনসিপি কীভাবে তাদের অবস্থান শক্ত করবে এবং অন্যান্য রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে জোট বাঁধবে কিনা—তা এখন সময়ই বলে দেবে।
জুলাই গণ-অভ্যুত্থানে নেতৃত্বদানকারী তরুণদের নতুন রাজনৈতিক দল জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি) আনুষ্ঠানিকভাবে আত্মপ্রকাশ করেছে। শুক্রবার রাজধানীর মানিক মিয়া অ্যাভিনিউয়ে এক বিশাল জনসমাবেশের মাধ্যমে দলটির আনুষ্ঠানিক যাত্রা শুরু হয়। নতুন সংবিধান প্রণয়ন ও ‘সেকেন্ড রিপাবলিক’ প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে গণপরিষদ নির্বাচনের দাবি জানিয়েছে দলটি।
দলের কেন্দ্রীয় কমিটির নেতারা জানিয়েছেন, দেশের চলমান রাজনৈতিক অস্থিরতা, দুর্নীতি, দুঃশাসন ও বৈষম্যের বিরুদ্ধে নতুন এক রাজনৈতিক শক্তি গড়ে তোলার লক্ষ্যে এনসিপির জন্ম হয়েছে। তাঁরা প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন, এই দল হবে সাধারণ মানুষের কণ্ঠস্বর, যেখানে অর্থ ও পেশিশক্তির কোনো জায়গা থাকবে না।
নাহিদ ইসলাম বলেন, “বাংলাদেশে এতদিন যারা রাজনীতি করেছে, তারা নিজেদের স্বার্থ দেখেছে, জনগণের স্বার্থ দেখেনি। আমরা জনগণের জন্য রাজনীতি করতে চাই, ক্ষমতার জন্য নয়।”
তিনি আরও বলেন, “আমরা আজকের এই মঞ্চ থেকে শপথ করছি—বাংলাদেশকে আর কখনোই বিভাজিত হতে দেব না। ভারতপন্থী বা পাকিস্তানপন্থী কোনো রাজনীতি বাংলাদেশে টিকে থাকতে পারবে না। আমরা বাংলাদেশপন্থী একটি রাজনীতি প্রতিষ্ঠা করব।”
নাহিদ ইসলাম বলেন, “আমরা বিশ্বাস করি, বর্তমান শাসনব্যবস্থা জনগণের প্রতিনিধিত্ব করে না। বিদ্যমান ব্যবস্থার পরিবর্তন প্রয়োজন। গণপরিষদ নির্বাচনের মাধ্যমে জনগণই নতুন সংবিধান প্রণয়ন করবে, যা হবে জনগণের অধিকারভিত্তিক একটি গণতান্ত্রিক সংবিধান।”
দলের ঘোষণাপত্রে বলা হয়েছে, দেশের বিদ্যমান রাজনৈতিক ব্যবস্থা জনগণের মৌলিক চাহিদা পূরণে ব্যর্থ হয়েছে। ক্ষমতাসীন দল ও বিরোধী দল উভয়ের মধ্যে চলছে দোষারোপের রাজনীতি, যেখানে সাধারণ মানুষ কেবল ভুক্তভোগী। এনসিপি প্রতিশ্রুতি দিয়েছে, তারা একটি ন্যায্য, স্বচ্ছ ও জবাবদিহিমূলক রাজনৈতিক ব্যবস্থা গড়ে তুলবে, যেখানে জনগণই হবে সর্বোচ্চ ক্ষমতার অধিকারী।
জাতীয় নাগরিক পার্টির কেন্দ্রীয় কমিটির ঘোষণা অনুযায়ী, একটি দুর্নীতিমুক্ত, সাম্য ও মানবিক মর্যাদার ভিত্তিতে নতুন রাষ্ট্রব্যবস্থা গঠনই দলটির মূল লক্ষ্য।
এনসিপির ঘোষণাপত্রে উল্লেখ করা হয়েছে, দলটি নিম্নলিখিত বিষয়ে কাজ করবে—
- সামাজিক ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠা: ধনী-গরিবের ব্যবধান কমিয়ে জনগণের মৌলিক অধিকার নিশ্চিত করা।
- শক্তিশালী প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা: জাতীয় নিরাপত্তা রক্ষায় প্রয়োজনীয় সংস্কার ও নতুন পদক্ষেপ গ্রহণ।
- দুর্নীতি প্রতিরোধ: প্রশাসন ও আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীতে কঠোর জবাবদিহিতা নিশ্চিত করা।
- শিক্ষা ও স্বাস্থ্যখাতে আমূল পরিবর্তন: বিনামূল্যে উচ্চশিক্ষা ও উন্নত চিকিৎসা নিশ্চিত করা।
- অর্থনৈতিক সংস্কার: ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্পের প্রসার ঘটিয়ে আত্মনির্ভরশীল অর্থনীতি গড়ে তোলা।
দলের আত্মপ্রকাশ অনুষ্ঠানে বিএনপি, জামায়াতে ইসলামী, গণসংহতি আন্দোলনসহ বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের প্রতিনিধিরা উপস্থিত ছিলেন। নাগরিক ঐক্যের সভাপতি মাহমুদুর রহমান মান্না, জেএসডির তানিয়া রব, খেলাফত মজলিসের নেতারা এবং বিভিন্ন ইসলামী দলের প্রতিনিধিরাও অনুষ্ঠানে যোগ দেন।
একজন রাজনৈতিক বিশ্লেষক বলেন, “জাতীয় নাগরিক পার্টির আত্মপ্রকাশ দেশের রাজনীতিতে নতুন মাত্রা যোগ করেছে। দলটি কিভাবে জনগণের আস্থা অর্জন করবে এবং নির্বাচনী প্রক্রিয়ায় নিজেদের অবস্থান তৈরি করবে, সেটাই এখন দেখার বিষয়।”
এনসিপির নেতারা জানিয়েছেন, তারা দেশের প্রতিটি জেলায় সাংগঠনিক কাঠামো গড়ে তুলতে চান। তরুণদের নেতৃত্বে রাজনীতিতে নতুন ধারা আনার লক্ষ্যেই এই দল গঠন করা হয়েছে।
নাহিদ ইসলাম বলেন, “আমরা এমন একটি বাংলাদেশ গড়তে চাই, যেখানে নাগরিকদের অধিকার নিশ্চিত থাকবে, কেউ বৈষম্যের শিকার হবে না। এটি কোনো স্বপ্ন নয়, এটি আমাদের প্রতিজ্ঞা।”
দলের কেন্দ্রীয় কমিটি শিগগিরই সাংগঠনিক কার্যক্রম শুরু করবে এবং দেশের বিভিন্ন স্থানে গণসংযোগ চালাবে বলে ঘোষণা দেওয়া হয়েছে।
জাতীয় নির্বাচনের আগে এনসিপি কিভাবে তাদের অবস্থান শক্ত করবে এবং অন্যান্য রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে জোট বাঁধবে কিনা—তা এখন সময়ই বলে দেবে। তবে অনেক বিশ্লেষক মনে করছেন, এই নতুন দল দেশের রাজনীতিতে উল্লেখযোগ্য পরিবর্তন আনতে পারে।