শান্তিগঞ্জে ২১ পূজা মণ্ডপে উদযাপন হবে শারদীয় দুর্গাপূজা, চলছে প্রস্তুতি
শান্তিগঞ্জ প্রতিনিধি :
সনাতন ধর্মাবলম্বীদের সবচেয়ে বড় ধর্মীয় উৎসব শারদীয় দুর্গাপূজা শুরু হতে আর মাত্র ৫ দিন বাকী। ইতোমধ্যে পূজার সব ধরণের প্রস্তুতি শুরু করে দিয়েছেন ভক্তকূল। বছরান্তে মা দুর্গাকে বরণ করে নিতে কোনো ধরণের কমতি রাখতে চান না মায়ের সন্তানেরা। পঞ্জিকা অনুযায়ী, দেবী দুর্গা এ বছর হিমালয়ের কৈলাশ থেকে মর্ত্যের পিত্রালয়ে আসবেন দোলা বা পালকিতে করে। আর ফিরবেন গজ বা হস্তির পিঠে চড়ে। হিন্দু শাস্ত্র মতে, দোলায়াং মকরং ভবেৎ’ অর্থাৎ দোলায় বা পালকিতে আসা মকরতূল্য বা মহামারীর ইঙ্গিত। যার ফল অশুভ। হিন্দু ধর্মমতে, এতে পৃথিবীতে দুর্ভোগ, দুর্যোগের আশঙ্কা থাকে। অপরদিকে, বিজয়া দশমীর দিন বিসর্জনের মধ্য দিয়ে দশহস্তী দুর্গতিনাশিনী কৈলাশে ফিরবেন গজ বা হস্তিতে করে। গজ হল দেবীর সবচেয়ে উৎকৃষ্ট বাহন। দেবীর গমন হাতিতে হলে ‘গজে চ জলদা দেবী শস্যপূর্ণা বসুন্ধরা’। ফলে শস্যপূর্ণ ধরিত্রী প্রাপ্তির সম্ভাবনা রয়েছে। যার ফল শুভ।
দেবী দুর্গার আরাধনা করতে এ বছর শান্তিগঞ্জ উপজেলায় আট ইউনিয়নের মধ্যে সাতটিতে স্থাপন করা হবে পূজামণ্ডপ। সাত ইউনিয়নে সর্বমোট ২১টি মণ্ডপে পালিত হবে শারদীয় দুর্গা পূজা। যা গত বছরের তুলনায় ৩টি কম। গত বছর উপজেলায় ২৪টি মণ্ডপে পূজা উদযাপন হয়েছিলো।
পূজা উদযাপন পরিষদের সাথে কথা বলে জানা যায়, জয়কলস ইউনিয়নে এ বছর সর্বোচ্চ আটটি মণ্ডপে উদযাপিত হবে দুর্গাপূজা। দ্বিতীয় সর্বোচ্চ মণ্ডপ হবে পশ্চিম পাগলা ইউনিয়নে। পশ্চিম বীরগাঁওয়ে ৩টি, পূর্ব বীরগাঁও ও দরগাপাশায় ২টি করে ৪টি, পূর্ব পাগলা ও পাথারিয়ায় ১ করে ২টি মণ্ডপে মায়ের পায়ে আরতি দেবেন ভক্তরা। নিশ্ছিদ্র নিরাপত্তার জন্য প্রতিটি মণ্ডপে বসানো হবে সিসি ক্যামেরা। থাকবেন আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী ও স্বেচ্ছাসেবীরা। আপাতত আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী ও প্রশাসনের সন্তোষজনক ভূমিকা থাকলেও এই ভূমিকা শেষ পর্যন্ত দেখতে চান সনাতন ধর্মাবলম্বী মানুষেরা।
মির্জাপুর সার্বজনীন পূজা মণ্ডপের সভাপতি মানিক রঞ্জন তালুকদার ও মৌগাঁও সনাতন সংঘ সার্বজনীন পূজা মণ্ডপের সভাপতি সঞ্জয় বৈদ্য কালা বলেন, এখন প্রতীমা তৈরির কাজ শেষ পর্যায়ে। আমাদের প্রস্তুতি চলছে। আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর লোকজন ও প্রশাসনের লোকজন আমাদের সাথে যোগাযোগ শুরু করেছেন। নিরাপত্তা নিয়ে আমরা মোটামুটি সন্তোষ্ট।
শান্তিগঞ্জ পূজা উদযাপন পরিষদের সভাপতি জ্যোতি ভূষণ তালুকদার ঝন্টু ও সাধারণ সম্পাদক সুরঞ্জিত চৌধুরী টপ্পা বলেন, আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর ভূমিকা এখনো পর্যন্ত সন্তোষজনক। প্রতিটি মণ্ডপে থাকবে সিসি টিভি ক্যামেরা। যদিও এখনো আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সাথে আমাদের কোনো মিটিং এখনো হয়নি তবে তারা যোগাযোগ রাখছেন।
শান্তিগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো: আকরাম আলী বলেন, পূজা নিয়ে আমাদেরও প্রস্তুতি চলছে। আগামী দু‘এক দিনের মধ্যে পূজা উদযাপনের সবাইকে নিয়ে বসবো। পুলিশ সুপার স্যারের নির্দেশনা মতো আমরা কাজ করবো। সর্বোচ্চ নিরাপত্তায় থাকবে পুলিশ।