হোমনায় অন্তঃসত্ত্বা গৃহবধূসহ ট্রিপল মার্ডার, এলাকায় শোকের ছায়া
কুমিল্লা প্রতিনিধি:
কুমিল্লার হোমনার বড় ঘাগুটিয়া গ্রামে ভূইয়া বাড়িতে ৫ মাসের অন্তঃসত্ত্বা গৃহবধূ ও তার ছেলে সহ ৩ জনকে শ্বাসরোধে হত্যার অভিযোগ পাওয়া গেছে।
উপজেলার ২নং ঘাগুটিয়া ইউনিয়নের বড় ঘাগুটিয়া গ্রামের শাহপরানের স্ত্রী অন্তঃসত্ত্বা মাহফুজা বেগম (২৫) ও তার ছেলে শাহেদ(৮) পাশের বাড়ির তার মামাতো ভাসুর রেজাউল করিমের মেয়ে তিশামনি(১৫)কে বুধবার রাতে দু্র্বৃ্ত্তরা খুন করে পালিয়ে যায়।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানাগেছে, নিহত মাহফুজা বেগম(২৫)ও তার ছেলে শাহেদ কে নিয়ে বাড়িতে থাকেন। তার স্বামী শাহপরান ঢাকায় একটি জুতা ফ্যাক্টরিতে চাকরি করেন। বাড়িতে তার স্ত্রী মাহফুজা ছেলেকে নিয়ে থাকেন মাঝে মধ্যে রাতে তার মামাতো ভাই রেজাউল করিমের মেয়ে তিশা মনি মাহফুজা বেগমের সাথে থাকতেন।
গতকাল বুধবার রাতে খাবার খাওয়ার পর শাহপরানের ঘরে তার কাকি মাহফুজার সাথে থাকতে আসে। কিন্ত বৃহস্পতিবার (৫ সেপ্টেম্বর) সকাল ৮ টার দিকে রেজাউল করিম তার মেজমেয়ে মিমকে পাঠায় তিশামনিকে ডেকে আনতে।মিম এসে দেখে ঘরের পিছনের দরজা খোলা খাটের উপর ৩ জনের রক্তাক্ত মৃতদেহ পড়ে আছে। এ খবর মিম তার বাবা রেজইল করিম জানালে তাদের শোর চিৎকারে আশে পাশের লোকজন জড়ো হয়।
পরে স্থানীয় চেয়ারম্যান ও থানায় খবর দেয়া হলে সেনাবাহিনি সহ হোমনা মেঘনা সার্কেলের সিনিয়র এএসপি মীর মুহসীন মাসুদ রানা,ও হোমনা থানা ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা জয়নাল আবেদীনসহ পুলিশের একটি টিম ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়। পুলিশ লাশের সুরতাল রিপোর্ট করেন। জেলা সদর থেকে পুলিশ সুপার, সিআইডি, পিবিআই, RAB ঘটনাস্থল পরিদর্শন শেষে ময়না তদন্ত করার জন্য লাশ মর্গে পাঠানো হয়।
আজ শুক্রবার (৬ সেপ্টেম্বর) বিাকেলে বড় ঘাগুটিয়া ঈদগাহ মাঠে নিহত ৩ জনের নামাজে জানাযা শেষে গ্রামের কবরস্থানে দাফন করা হয়েছে।
নিহত মাহফুজা বেগমের স্বামী শাহপরান জানান, আমি ঢাকায় থাকি। আমার স্ত্রী বাড়িতে থাকে। আমি বাড়ি না থাকলে মাঝে মধ্যে আমার ভাতিজি তিশা মনি রাতে আমার বাড়িতে থাকে। আজ সকালে খবর পেয়ে বাড়িতে আসছি। আমার সাথে কারোর কোন শত্রুতা নেই। সঠিক তদন্ত সাপেক্ষে আমি এর বিচার চাই।
এ দিকে নিহত তিশামনির বাবা মো. রেজাউল করিম বলেন, ‘ আমি দুলালপুর বাজারে ব্যবসা করি। তিশা মনি মাঝে মধ্যে রাতে আমার ফুফাতো ভাই শাহাপরানের ঘরে তার স্ত্রী সাথে রাতে থাকে।সকালে ৮ টার দিকে আমার মেজ মেয়ে মিমকে পাঠালে এ খবর জানতে পারি।’
ওসি জয়নাল আবেদীন বলেন, সুরতহাল রিপোর্টে দেখা গেছে মাথায় আঘাতের চিহৃ আছে। ধারনা করা হচ্ছে রাতের কোন এক সময়ে তাদের শ্বাসরোধ করে হত্যা করা হয়েছে।
হোমনা মেঘনা সার্কেলের সিনিয়র সহকারি পুলিশ সুপার( এএসপি) মীর মুহসীন মাসুদ রানা জানান, ঘটনাটি পূর্বশত্রুতা না প্রেম ঘটিত, এর কারণ অনুসন্ধানের চেষ্টা চলছে। এই চাঞ্চল্যকর ট্রিপল মার্ডার ঘটনায় এলাকায় এখন শোকের ছায়া নেমে এসেছে।