ওয়াশিংটন, ডিসি: ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি শিগগিরই যুক্তরাষ্ট্র সফর করতে পারেন বলে জানিয়েছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। মূলত দুই দেশের মধ্যে খনিজ সম্পদ সংক্রান্ত একটি গুরুত্বপূর্ণ চুক্তি স্বাক্ষরের লক্ষ্যে এই সফর অনুষ্ঠিত হতে পারে।
মঙ্গলবার হোয়াইট হাউসে এক সংবাদ সম্মেলনে ট্রাম্প বলেন, “আমরা ইউক্রেনের সঙ্গে দীর্ঘমেয়াদি সম্পর্ক গড়ে তুলতে চাই। প্রেসিডেন্ট জেলেনস্কি আমাদের আমন্ত্রণ গ্রহণ করেছেন এবং আমরা একটি গুরুত্বপূর্ণ খনিজ সম্পদ চুক্তি স্বাক্ষর করতে যাচ্ছি। এটি দুই দেশের জন্যই লাভজনক হবে।”
ট্রাম্প প্রশাসনের মতে, এই চুক্তির মাধ্যমে ইউক্রেনের প্রাকৃতিক সম্পদ আহরণ এবং উন্নত প্রযুক্তির ব্যবহারে যুক্তরাষ্ট্র সহযোগিতা করবে। বিশেষত, ইউক্রেনের লিথিয়াম, নিকেল ও অন্যান্য দুর্লভ খনিজের খনন ও প্রক্রিয়াকরণে যুক্তরাষ্ট্রের বিনিয়োগের সম্ভাবনা রয়েছে।
বিশ্লেষকদের মতে, এই চুক্তি শুধুমাত্র অর্থনৈতিক দিক থেকেই গুরুত্বপূর্ণ নয়, বরং ভূরাজনৈতিকভাবেও তা বিশেষ গুরুত্ব বহন করে। ইউক্রেন বর্তমানে রাশিয়ার বিরুদ্ধে যুদ্ধরত অবস্থায় রয়েছে এবং এর অর্থনীতি বহুমুখী চ্যালেঞ্জের সম্মুখীন। তাই যুক্তরাষ্ট্রের বিনিয়োগ দেশটির জন্য একটি বড় সুবিধা হতে পারে।
ওয়াশিংটনের একটি কূটনৈতিক সূত্র জানিয়েছে, এই চুক্তির ফলে ইউক্রেন যুক্তরাষ্ট্রের কাছ থেকে উন্নত খনিজ আহরণ প্রযুক্তি ও অবকাঠামোগত সহায়তা পেতে পারে। এতে ইউক্রেনের অর্থনীতি আরও শক্তিশালী হবে এবং তা রাশিয়ার ওপর নির্ভরশীলতা কমাতে সাহায্য করবে।
ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট অফিস থেকে বলা হয়েছে, প্রেসিডেন্ট জেলেনস্কি এই চুক্তিকে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ মনে করছেন এবং এটি ইউক্রেনের অর্থনৈতিক বিকাশে নতুন দিগন্ত উন্মোচন করবে বলে আশাবাদী। জেলেনস্কি বলেন, “এই চুক্তির মাধ্যমে আমাদের দেশ শক্তিশালী অর্থনৈতিক ভিত তৈরি করতে পারবে এবং আন্তর্জাতিক সহযোগিতা আরও সুদৃঢ় হবে।”
বিশ্লেষকরা বলছেন, এই চুক্তি স্বাক্ষর হলে তা রাশিয়ার জন্য একটি কৌশলগত চ্যালেঞ্জ সৃষ্টি করবে। ইউক্রেনের খনিজ সম্পদে যুক্তরাষ্ট্রের বিনিয়োগ বাড়লে রাশিয়ার ভূরাজনৈতিক প্রভাব কমতে পারে।
ইউরোপীয় ইউনিয়নের কর্মকর্তারাও এই চুক্তির প্রতি আগ্রহ প্রকাশ করেছেন। তারা বলছেন, ইউক্রেনের অর্থনৈতিক উন্নয়ন নিশ্চিত করা হলে তা ইউরোপীয় বাজারের জন্যও ইতিবাচক ফল বয়ে আনবে।
প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প ও প্রেসিডেন্ট জেলেনস্কির আসন্ন বৈঠক এবং সম্ভাব্য খনিজ সম্পদ চুক্তি দুই দেশের জন্যই একটি বড় অর্জন হতে পারে। এই চুক্তি শুধু অর্থনৈতিক নয়, রাজনৈতিক এবং কৌশলগতভাবে গুরুত্বপূর্ণ বলে মনে করা হচ্ছে। এখন সবাই অপেক্ষা করছে দুই নেতার সাক্ষাৎ ও আনুষ্ঠানিক চুক্তি স্বাক্ষরের জন্য, যা ইউক্রেন ও যুক্তরাষ্ট্রের সম্পর্ককে নতুন উচ্চতায় নিয়ে যেতে পারে।