ওয়াশিংটন, ডিসি — হোয়াইট হাউসে এক গুরুত্বপূর্ণ বৈঠকে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প এবং ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল ম্যাক্রোঁ ইউক্রেন যুদ্ধ নিয়ে আলোচনা করেছেন। এই বৈঠকটি এমন এক সময়ে অনুষ্ঠিত হয়েছে যখন রাশিয়ার ইউক্রেন আক্রমণের তৃতীয় বর্ষপূর্তি পালিত হচ্ছে। আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের দৃষ্টি ছিল এই বৈঠকের দিকে, কারণ এটি ইউক্রেন সংকটের ভবিষ্যৎ নির্ধারণে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখতে পারে।
শান্তি প্রতিষ্ঠার শর্ত
সংবাদ সম্মেলনে ফরাসি প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল ম্যাক্রোঁ স্পষ্ট করে বলেন, “শান্তি মানে ইউক্রেনের আত্মসমর্পণ নয়। এটি হবে ন্যায়বিচারের ভিত্তিতে একটি সমাধান। আমরা এমন একটি শান্তি চাই যেখানে ইউক্রেনের সার্বভৌমত্ব ও আঞ্চলিক অখণ্ডতা অক্ষুণ্ণ থাকবে।”
ম্যাক্রোঁর এই বক্তব্য ইউক্রেনের জন্য গুরুত্বপূর্ণ বার্তা বহন করে। ইউরোপীয় ইউনিয়ন এবং ন্যাটো সদস্যরা দীর্ঘদিন ধরে ইউক্রেনকে সমর্থন দিয়ে আসছে, এবং ম্যাক্রোঁর মন্তব্য সেই প্রতিশ্রুতিকেই পুনর্ব্যক্ত করেছে।
ট্রাম্পের কূটনৈতিক অবস্থান
অন্যদিকে, প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প কূটনৈতিক সমাধানের ওপর গুরুত্ব দেন। তিনি বলেন, “আমরা যুদ্ধ বন্ধ করতে চাই, তবে এটি হতে হবে উভয় পক্ষের জন্য গ্রহণযোগ্য শর্তে। যুক্তরাষ্ট্র শান্তি স্থাপনের জন্য সম্ভাব্য সকল প্রচেষ্টা চালিয়ে যাবে।”
ট্রাম্প প্রশাসন ইউক্রেনকে সামরিক সহায়তা প্রদান অব্যাহত রেখেছে, তবে তিনি যুদ্ধ দীর্ঘায়িত না করার জন্য কূটনৈতিক আলোচনার পক্ষে জোর দেন। এর আগে, তিনি ইউক্রেন সংকট সমাধানে রাশিয়ার সঙ্গে সরাসরি আলোচনার সম্ভাবনাও উত্থাপন করেছিলেন।
ইউক্রেনের ভবিষ্যৎ ও আন্তর্জাতিক প্রতিক্রিয়া
বৈঠকে উভয় নেতা ইউক্রেনের সামরিক সহায়তা, অর্থনৈতিক পুনর্গঠন এবং যুদ্ধ বন্ধের কৌশল নিয়ে আলোচনা করেন। ন্যাটো এবং ইউরোপীয় ইউনিয়নের সদস্য রাষ্ট্রগুলোও এ বিষয়ে একমত যে ইউক্রেনের সমর্থন অব্যাহত রাখা জরুরি।
বিশ্লেষকদের মতে, এই বৈঠকের ফলাফল আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ ইঙ্গিত বহন করে। ইউক্রেনের ভবিষ্যৎ নির্ধারণে যুক্তরাষ্ট্র ও ইউরোপীয় শক্তিগুলোর ভূমিকা কেমন হবে, তা এই আলোচনা থেকে স্পষ্ট হয়ে উঠেছে।
বৈঠকের শেষে দুই নেতা একমত হন যে যুদ্ধের অবসান হওয়া উচিত, তবে সেটি যেন ন্যায়সঙ্গত এবং দীর্ঘস্থায়ী হয়। কূটনৈতিক প্রচেষ্টা বাড়ানোর পাশাপাশি সামরিক ও মানবিক সহায়তা অব্যাহত রাখার প্রতিশ্রুতি দেওয়া হয়েছে।
এই বৈঠককে ইউক্রেন সংকট সমাধানে একটি গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ হিসেবে দেখা হচ্ছে। যুদ্ধ শেষ করতে এবং একটি স্থায়ী সমাধান খুঁজে বের করতে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় কীভাবে ভূমিকা রাখতে পারে, তা নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা হয়েছে।