জয়পুরহাট জেলা প্রতিনিধি :
জয়পুরহাটের কালাই উপজেলার বাইগুনী বাজারে ব্যবসা প্রতিষ্ঠান ও ঘরবাড়িতে হামলা চালিয়ে ভাংচুর ও লুটপাটের অভিযোগ উঠেছে। ২৩ ফেব্রুয়ারী (রোববার) সকাল ১১টায় এ ঘটনা ঘটে।
স্থানীয় ও জালাল মিয়ার পরিবার সূত্রে জানাগেছে, কালাই উপজেলার উদয়পুর ইউনিয়নের বাইগুনি গ্রামের সফির উদ্দিনের ছেলে জালাল মিয়া স্থানীয় বাইগুনি বাজারে দীর্ঘদিন ধরে আলু ও বস্তার ব্যবসা করে আসছিলেন। এরই মধ্যে একই গ্রামের আব্দুর রাজ্জাকের ছেলে বিএনপি নেতা আমজাদ হোসেন আলু ও বস্তা ব্যবসায়ী জালাল মিয়ার কাছ থেকে ৬ লাখ টাকা চাঁদা দাবি করে। চাঁদার টাকা না পেয়ে ওই ব্যবসায়ীর দোকান ও ঘরবাড়িতে দলবল নিয়ে হামলা চালায় আমজাদ। এ সময় বাড়িতে থাকা নগদ টাকাসহ দোকানের মালামাল ও প্রয়োজনীয় কাগজপত্র লুট করে নিয়ে যায়।
এবিষয়ে জালাল মিয়া বলেন, আমজাদ ও তার দলবল আমার ঘরবাড়ি ও দোকানে হামলা চালিয়ে ভাঙচুর-ও লুটপাট করেছে। এ সময় বাড়িতে থাকা নগদ ৩৬ লাখ টাকাসহ দোকানের মালামাল লুট করে নিয়ে গেছে। আমি এই হামলার ন্যায় বিচার চাই।
তিনি আরও বলেন, ৫ আগস্ট এর পর থেকে আমার কাছ থেকে চাঁদা দাবি করে। আমজাদ প্রথমে দুই লাখ টাকা চাঁদা দাবি করে ৷ না দেওয়ায় দোকান ঘরে তালা ঝুলিয়ে ৬ লাখ টাকা দাবি করে। আগে চেয়েছিলাম ২ লাখ এখন তালা খুললে ছয় লাখ টাকা দিতে হবে। চাঁদা দেইনি বলে সকালে আমার দোকানঘর ও বাড়িতে হামলা-ভাঙচুর করে প্রয়োজনীয় মালামাল লুট করেছে৷ সাংবাদিকদের নিয়ে কালাই যাওয়ার পথে পাঁচশিরা বাজারের সামনে আমাকে বেধরক মারপিট করে ডান হাত ভেঙে দিয়েছে। বুকে কিল ঘুষি মেরে আমাকে জখম করেছে। গুরুতর অসুস্থ হয়ে আমি বগুড়া টিএমএসএস হাসপাতালে ৭নং বেডে চিকিৎসা নিচ্ছি৷ আমি কালাই উপজেলা কৃষক দলের সদস্য। আমার দলের ঊর্ধ্বতন নেতৃবৃন্দ ও প্রশাসনের দৃষ্টি আকর্ষণ করছি তারা যেন সঠিক বিচারটি আমাকে করে দেয়৷ এ ঘটনা আমি মামলার প্রস্তুতি নিয়েছি৷
উদয়পুর ইউনিয়ন পরিষদের সাবেক ইউপিঃ সদস্য আব্দুল মান্নান বলেন, আমজাদ ও তার দলবল জালালের দোকান ও ঘরবাড়িতে হামলা চালিয়ে লুটপাট করেছে। এ ঘটনা গ্রামের সকলেই দেখেছে৷ আমরা তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাই৷ চাঁদা না পেয়ে এরকম একজনের বাড়িতে হামলা করবে৷ দিনে-দুপুরে এই প্রথম আমি দেখলাম৷
চাঁদা দেওয়া ভুক্তভোগী সূত্রে জানাগেছে,
গত ৫ আগস্ট এর পর থেকে উদয়পুর ইউনিয়ন বিএনপি’র আহবায়ক আমজাদ পুনট হিমাগারের ক্যাশিয়ার এনামুলের থেকে জাহাঙ্গীরের মাধ্যমে ৮০ হাজার টাকা নিয়েছেন ও সাজাহানের স্ত্রী মহিফুলের কাছ থেকে ৩৫ হাজার টাকা নিয়েছেন আওড়া গ্রামের আব্দুল হাকিম এর কাছ থেকে ১০ হাজার টাকা চাঁদা নিয়েছেন৷ যাহার কল রেকর্ড এই প্রতিবেদকের সংরক্ষণে রয়েছে।
অভিযোগ অস্বীকার করে বিএনপি নেতা আমজাদ হোসেন বলেন, সামান্য ইস্যু নিয়ে আমার জামাই সফটওয়্যার ইঞ্জিনিয়ারকে জালাল বেদরক মারপিট করেছে। জামাইকে নিয়ে আমি মেডিকেলে চিকিৎসা দিচ্ছি৷ জালালের ঘরবাড়ি ভাংচুর ও চাঁদাবাজির বিষয়ে আমার বিরুদ্ধে অভিযোগটি সম্পূর্ণ মিথ্যা ও ভিত্তিহীন। আমি জালালের পরিবারের কাউকে মারধর করি নি৷
কালাই উপজেলা কৃষক দলের আহ্বায়ক জি এম বাবলু বলেন, জালালের উপরএমন হামলা ও তার বাড়িতে ভাঙচুর ও টাকা পয়সা লুটপাট করেছে। আমি তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাই৷ সঠিক তদন্তপূর্বক অভিযুক্তদের আইনের আওতায় এনে বিচার দাবি করছি সে যে দলেরই হোক৷
কালাই থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) বলেন, বিষয়টি আমার জানা নেই। তারা থানায় এসে অভিযোগ দিলে তদন্ত করে ব্যবস্থা নেওয়া হবে৷