দেওয়ান মাসুকুর রহমান
নিজস্ব প্রতিবেদক | শ্রীমঙ্গল (মৌলভীবাজার), ১৬ ফেব্রুয়ারি ২০২৫ : মিথ্যা মামলায় হয়রানির অভিযোগ করেছেন শ্রীমঙ্গলের এক ভুক্তভোগী। হয়রানি থেকে রেহাই পেতে সংবাদ সম্মেলন করেছেন তিনি।
আজ রবিবার (১৬ ফেব্রুয়ারি ২০২৫) দুপুরে এক বিএনপি নেতার বিরুদ্ধে শ্রীমঙ্গল প্রেসক্লাবে সংবাদ সম্মেলন করেন মো: জাফর আলী। এ ভুক্তভোগী শ্রীমঙ্গল উপজেলার ইসলামপুর গ্রামের মৃত আকবর আলীর পুত্র।
সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে মো: জাফর আলী বলেন, শ্রীমঙ্গল উপজেলার ৪নং সিন্দুরখান ইউনিয়ন এর শ্রীগাঁও গ্রামের শেখ মো: জিতু মিয়া-এর পুত্র শেখ মো: জসিম উদ্দীন (৪২)-এর কবল থেকে রক্ষা পেতে আমি/আমরা আপনাদের মানবিক ও নৈতিক সহযোগিতা এবং রাষ্ট্রীয় সুরক্ষা প্রাপ্তির জন্য আপনাদের মাধ্যমে জনপ্রশাসন, পুলিশ প্রশাসন ও জনসাধারণকে অবহিত করা এবং সকল প্রকার সহযোগিতা পাবার জন্য আজ এ সংবাদ সম্মেলন আহবান করেছি।
সংবাদ সম্মেলনে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল বিএনপির শ্রীমঙ্গল উপজেলা আহ্বায়ক কমিটির সদস্য ও বিএনপির অঙ্গ সংগঠন জাসাসের মৌলভীবাজার জেলা শাখার সাবেক যুগ্ম সম্পাদক শেখ জসিম উদ্দীন মামলা দিয়ে হয়রানী ও ভয়ভীতি দেখাচ্ছেন বলে তিনি জানান।
এ সংবাদ সম্মেলনে মো: জাফর আলী আরও বলেন, ফ্রান্স প্রবাসী মো: হাফিজুর রহমান ষাড়েরগজ মৌজায় বাউন্ডারী ওয়াল দিয়ে ফার্মের কাজ শুরু করেন। ফার্মের দায়িত্ব প্রদান করা হয় তার বড় ভাই মহিবুর রহমান ও খালাতো ভাই (আমি সংবাদ সম্মেলনকারী) জাফর-কে। ফার্মে শ্রমিকরা কাজ করতে গেলে শেখ জসিম উদ্দীন বাঁধা সৃষ্টি করে ২ লক্ষ টাকা চাঁদা দাবী করেন। এবং দাবীকৃত টাকা না দিলে উক্ত ফার্ম ভেঙ্গে ফেলার হুমকি দেন। বিষয়টি স্থানীয় গন্যমান্য লোকজনকে অবগত করা হলেও সমাধান না হওয়ার কারণে ফ্রান্স প্রবাসী মো: হাফিজুর রহমান বাদী হয়ে শেখ জসিম উদ্দিন (৩৫), শেখ ওয়াসিম উদ্দিন (৩০), শেখ কবির উদ্দিন (৪০) সহ অজ্ঞাতনামা ৪/৫জনকে আসামী করে বিজ্ঞ সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালত, মৌলভীবাজার (সিআর- মোকদ্দমা নং- ৩৭৩/২০২৪ইং (শ্রীঃ) দায়ের করেন। বিজ্ঞ আদালত উক্ত মামলা তদন্তের জন্য পিবিআই, মৌলভীবাজার-কে নির্দেশ প্রদান করেন। ফার্মে কাজ করতে হলে চাঁদা দাবী ও ভয়ভীতি দেখানোর সত্যতা পেয়ে পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই), সম্প্রতি মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা, দীর্ঘ তদন্ত শেষে অভিযোগের সত্যতা পেয়ে, বিজ্ঞ সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট, ২নং আমল গ্রহনকারী মৌলভীবাজার, আদালতে শেখ জসিম উদ্দিনের বিরুদ্ধে তদন্ত প্রতিবেদন দাখিল করেন। বর্তমানে উক্ত মামলা বিজ্ঞ আদালতে বিচারাধীন রয়েছে। শেখ জসিম উদ্দিনের বিরুদ্ধে সিআর মামলা নং-৩৬৯/২৪ (শ্রীঃ), নির্বাহী ম্যাজিঃ আদালতে মামলা নং- ৩২০/২৪ (শ্রীঃ), সাইবার মামলা নং- ২৪২/২৪ (মামলার বাদী- মো: পারভেজ মিয়া) সহ একাধিক মামলা বিজ্ঞ আদালতে বিচারাধীন ও তদন্তাধীন রয়েছে। কিন্তু, দুঃখজনক হলেও সত্য- শেখ জসিম উদ্দীন প্রতিহিংসা পরায়ন হয়ে আমাদেরকে হয়রানী, আর্থিক ও মানষিকভাবে ক্ষতিগ্রস্থ করার হীন চক্রান্তে লিপ্ত হয়ে মৌলভীবাজার সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিষ্টেট ২নং আমলী আদালতে একটি রাজনৈতিক মামলা, ঘটনার তারিখ ও সময় ০৫/০২/২০১৮ইং, সময় বিকাল ৫ ঘটিকা, স্থান: শ্রীমঙ্গল চৌমুহনা উল্লেখ করে (মোং- নং- সিআর- ৫৫/২০২৫ইং, (শ্রীঃ) দায়ের করে। স্বৈরশাসক সরকারের সাবেক কৃষিমন্ত্রী মো: আব্দুস শহিদ (৭০)-কে ১নং আসামীসহ মোট ৩৭ জনের নাম উল্লেখসহ আরো অজ্ঞাতনামা ৫০/৬০জন-কে আসামী করা হয়। সেখানে আমাকে আওয়ামীলীগের ওয়ার্ড সদস্য হিসাবে লিপিবদ্ধ করে ১০নং আসামী উল্লেখ করা হয়। তার বিরুদ্ধে (সাইবার মামলা নং- ২৪২/২৪ইং মামলার বাদী) মোঃ পারভেজ মিয়া কে ১২নং আসামী, ফ্রান্স প্রবাসী মো: হাফিজুর রহমান-এর বোন জামাই মো: নুরুল ইসলাম (৪০)-কে ১৩নং আসামী, তরুন শিল্প উদ্যোক্তা ফ্রান্স প্রবাসী (জসিমের বিরুদ্ধে আদালতে দায়েরকৃত মামলার বাদী) মো: হাফিজুর রহমানকে আওয়ামীলীগের সদস্য হিসাবে লিপিবদ্ধ করে ১৬নং আসামী, তার বড় ভাই মুহিবুর রহমান (জসিমের বিরুদ্ধে আদালতে দায়েরকৃত মামলার স্বাক্ষী)-কে ১৭নং আসামী, আমার চাচাতো ভাই (স্বাক্ষী) মো: দুলাল মিয়া-কে ২৩নং আসামী, বোন জামাই (জসিমের বিরুদ্ধে আদালতে দায়েরকৃত মামলার স্বাক্ষী) মো: শিপন মিয়া-কে ২৪নং আসামী ও গাঁছের সাথে চোঁখ বেঁধে নির্যাতন ও ভিডিও ধারন এর ঘটনায় তার বিরুদ্ধে দায়েরকৃত মামলার বাদী মো: রাজন মিয়াকে ২৫নং আসামী উল্লেখ করে মামলা দায়ের করেন। বিজ্ঞ আদালত উক্ত রাজনৈতিক মামলাটি পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই), মৌলভীবাজার-কে তদন্ত করে প্রতিবেদন দাখিলের জন্য নির্দেশ প্রদান করেছেন।
তিনি আরও বলেন, শেখ জসিম বিজ্ঞ আদালতে রাজনৈতিক মামলা দায়ের এর ঘটনার তারিখ ও সময় ০৫/০২/২০১৮ইং, উল্লেখ করেছে। অথচ, সেই সময় ১৬নং আসামী, তরুন শিল্প উদ্যোক্তা ফ্রান্স প্রবাসী মো: হাফিজুর রহমান- ফ্রান্স অবস্থান করেন। ২নং আসামী মো: সানুর মিয়া সৌদি আরব দেশে অবস্থান করেন। আমাকে আওয়ামীলীগের ওয়ার্ড সদস্য হিসাবে লিপিবদ্ধ করে ১০নং আসামী উল্লেখ করা হয়। অথচ, আমি উক্ত দলের কোন সদস্য নয়। সেই প্রমান সে দিতে পারবে না। আওয়ামীলীগের লোকজনদের হাতে আমি ও আমার পরিবার সবসময় নির্যাতন ও জুলুমের শিকার হয়েছি। ১২নং আসামী মো: পারভেজ মিয়া (জসিমের বিরুদ্ধে সাইবার আদালতে দায়েরকৃত মামলার বাদী), ১৩নং আসামী মো: নুরুল ইসলাম ফ্রান্স প্রবাসী মো: হাফিজুর রহমানের বোন জামাই (জসিমের বিরুদ্ধে আদালতে দায়েরকৃত মামলার স্বাক্ষী), ১৭ নং আসামী ফ্রান্স প্রবাসী মো: হাফিজুর রহমানের বড় ভাই মুহিবুর রহমান (জসিমের বিরুদ্ধে আদালতে দায়েরকৃত মামলার স্বাক্ষী), ২৩নং আসামী দুলাল মিয়া আমার চাচাতো ভাই, ২৪নং আসামী মো: শিপন মিয়া (জসিমের বিরুদ্ধে আদালতে দায়েরকৃত মামলার স্বাক্ষী) ও ২৫নং আসামী করা হয়েছে গাছের সাথে চোঁখ বেঁধে নির্যাতন ও ভিডিও ধারণ এর ঘটনায় তার বিরুদ্ধে দায়েরকৃত মামলার বাদী মো: রাজন মিয়াকে।
সংবাদ সম্মেলনে শেখ জসিম উদ্দীনের বিরুদ্ধে দলীয় পদ পদবী ব্যবহার করে আমাদেরকে হয়রানী ও ভয়ভীতি প্রদর্শন করে চলেছেন বলে জানান।
এ ভুক্তভোগী মো: ফজর আলী বলেন, শেখ জসিম উদ্দীন ও তার বাহিনীর লোকজনদের বিভিন্ন ধরনের হুমকি ধামকির কারনে আমি ও পরিবারের লোকজন নিরাপত্তাহীনতায় ভোগতেছি।