শ্রী শ্রী তারকব্রহ্ম হরিণাম সংকীর্ত্তন মহাযজ্ঞ অনুষ্ঠানে এমপি ইকবাল হোসেন
স্টাফ রিপোর্টার:
শরীয়তপুর জেলা প্রশাসক কতৃক উদ্ধারকৃত ধানুকা মনসা বাড়ির. ৮৯ একর শতবর্ষী গোসাইর দিঘি দখলদার মুক্ত হওয়ার বিষয়ে এমপি ইকবাল হোসেন অপু তিনি হুশিয়ার করে বলেন, আমি আজকে ঘোষণা দিয়ে গেলাম। কেউ যদি এই মন্দিরের জায়গা বা ধানুকা মনসা বাড়ির জায়গা, কেউ যদি দখল করার চেষ্টা করে। আপনারা প্রতিবাদ করবেন, প্রতিরোধ করবেন। সমস্ত শক্তি দিয়ে, আপনারা এই জায়গায় ব্যয় করবেন। আমি আপনাদের পাশে আছি।
৯ জানুয়ারি মঙ্গলবার রাত সাড়ে ৯ টায় শরীয়তপুর পৌর সভার ৭ নং ওয়ার্ডে অবস্থিত ঐতিহাসিক ধানুকা মনসা মন্দির গোসাইর দিঘিতে অখন্ড শ্রী শ্রী তারকব্রহ্ম হরিণাম সংকীর্ত্তন মহাযজ্ঞ অনুষ্ঠানে দ্বিতীয় বারের নির্বাচিত এমপি ইকবাল হোসেন অপু একথা বলেন।
এসময় তিনি আরও বলেন,আমাদের সেই আদি যুগের মতো, মা-চাচিরা যেভাবে সিঁদুর লাগিয়ে, এবং শাঁখা বাজিয়ে-বাজিয়ে! ভোট কেন্দ্রে গিয়ে, ভোট দিতে বলেছিলাম। আপনারা সেই কাজটিই করেছেন। এবং আমাদের মুরুব্বিদের বলেছিলাম, ধূতি পাঞ্জাবি পরে আপনারা ভোট কেন্দ্রে যাবেন। আপনারা চেষ্টা করেছেন, অনেকেই গেছেন। কারণ আমি অনেক ভোট কেন্দ্রে গিয়েছি। আমি আপনাদের দেখে এতো আনন্দিত হয়েছি,যা ভাষায় প্রকাশ করা যাবে না। এই কারণে আমি আজকে এই জায়গায় এসে, এতো লোক পেয়ে, আজকে আমি আনন্দিত। আমি আজকে অন্তত আপনাদের কাছে কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করার সুযোগ পেয়েছি।
এসময় তিনি আরও বলেন, এইদেশটা আমাদের, আমরা কেন ভয় পাবো। জাতির পিতার ডাকে,যখন মুক্তিযুদ্ধে সবাই অংশ গ্রহণ করেছে। তখন কে হিন্দু, কে মুসলিম এটা কি কেউ খেয়াল করেছে। সবাই যুদ্ধে অংশ গ্রহণ করেছে। সবাই এই দেশকে,এই পবিত্র ভূমিকে রক্ষা করার জন্য। আমার মুসলিম ধর্মের যতটুকু অধিকার, ঠিক একজন অন্য ধর্মের মানুষের ঠিক ততটুকু অধিকার। এটার ভেতর কোন সন্দেহ আছে? তিনি সবাইকে অনুরোধ করে বলেন, এই মাটিতো আমাদের জন্ম হয়েছে। আমাদের সকলেরি জন্ম হয়েছে। আমাদের শেষ যাত্রা, এই মাটিতেই যেন হয়। এই মাটিকে আকাঁড়ে ধরে আমরা যাতে বসবাস করতে পারি। দেখ-ভয় কি সে!অসাম্প্রদায়িক বাংলাদেশে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী কিন্তু সকলকে, হিন্দু, মুসলমান, বোদ্ধ, খৃষ্টান না। ধর্ম বর্ণ নির্বিশেষে, সকলকে এক শ্রেণীতে করে সমান মর্যাদা দিয়েছে। তাই আমি একটা কথা বলবো, এই দেশটাকে যেন, আমাদের দেশ মনে করি। কারও কথাতে আমরা যেন ভয়ে ভীতু না হই। আমি আছি আপনাদের পাশে। কেউ যদি আপনাদের কোন সমস্যা করার চেষ্টা করে থাকে। আমি আছি, আমাকে জানাবেন। আমি আপনাদের পাশে মৃত্যুর আগ পর্যন্ত,যতদিন আমার শক্তি সমর্থ আছে। আমি বেঁচে থাকবো,আমি আপনাদের সন্তান হিসাবে আপনাদের পাশে আছি।
সব শেষে তিনি সদ্য দখলমুক্ত গোসাইর দিঘি সম্পর্কে হুশিয়ার করে বলেন, যে এই জমি-টা। এই জমিটার ব্যাপারে আমি বলে যাই! (গোসাইর দীঘি, বালু মাঠ), যত বড় শক্তিধর লোক হোক, সে যে জায়গারি লোক হোক, আপনারা এক ইঞ্চি মাটিও ছাড়বেন-না। আমি আজকে ঘোষণা দিয়ে গেলাম। কেউ যদি এই মন্দিরের জায়গা বা ধানুকা মনসা বাড়ির জায়গা, কেউ যদি দখল করার চেষ্টা করে। আপনারা প্রতিবাদ করবেন, প্রতিরোধ করবেন, সমস্ত শক্তি দিয়ে আপনারা সেই জায়গায় ব্যায় করবেন। আমি আপনাদের পাশে আছি। সব শেষে সবার কাছে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী জন্য দোআ চেয়ে বলেন, তিনি যদি বেঁচে থাকেন। তাহলে এই বাংলাদেশ আরও সুন্দর হবে। তা হলে আমরা যাতি ধর্ম নির্বিশেষে ভালো থাকতে পারবো। ধর্ম যার-যার, উৎসব সবার। আমার উৎসবে আপনার আসবেন,আপনার উৎসবে আমরা আসবো। এটাই আমাদের চিরাচরিত নিয়ম। আমাদের এই ঐতিহ্যকে পরাজিত হতে দিব না। আমাদের গায়ে এক বিন্দু রক্ত থাকতে।
এসময় মহাযজ্ঞ অনুষ্ঠানে জেলা আওয়ামিলীগ নেতা এড.জাহাঙ্গীর হোসেন এর আরোগ্যলাভের জন্য প্রার্থনা করা হয়। এসময় উপস্থিত ছিলেন, জেলা আওয়ামিলীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ও জেলা কোর্টের বিজ্ঞ জিপি মির্জা হযরত আলী, জেলা আওয়ামিলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক কামরুজ্জামান উজ্জল, পূজা উদযাপন কমিটির সভাপতি এড. অমিত ঘটক চৌধুরী, হিন্দু বোদ্ধা পরিষদের সভাপতি সংঙ্কর প্রসাদ, মনসা মন্দির কমিটির সভাপতি সমীর কিশোর দে ও সাধারণ সম্পাদক অরুন কুমার সাহা প্রমুখ।