সিলেট ব্যুরো:
সিলেট নগরীর বালুচরে একটি মার্কেট দখল নিয়ে পাল্টাপাল্টি অভিযোগ পাওয়া গেছে। মার্কেটের মালিক যুক্তরাজ্য প্রবাসী শামীম আহমদেরের কেয়ারটেকার সুহেল আহমদ এ ব্যাপারে শাহপরান থানায় সাধারন ডায়েরী করেছেন। অপর দিকে সাধারন ডায়েরীতে যাকে অভিযুক্ত করেছেন তিনি বলছেন এসব ঘটনা সম্পর্কে তিনি কিছুই জানেন না।
জানা যায়, নগরীর বালুচর নতুন বাজারের ইমন প্লাজার মালিক শামীম আহমদ যুক্তরাজ্য প্রবাসী। বালুচর নতুন বাজারে মার্কেটসহ তার বেশ কিছু জমি রয়েছে। মার্কেটে রয়েছে তার ভাড়াটে ও আবাসিক লোকজন।
শামিম আহমদের কেয়ারটেকার জগন্নাথপুর উপজেলার ইনাতনগর গ্রামের আরিফ উল্লাহর ছেলে সুহেল আহমদ মার্কেট দখলের অভিযোগ এনে গত ৫ ফেব্রুয়ারী শাহপরাণ থানায় সাধারন ডায়রি করেছেন, ডায়রি নং ২৩৩। ডায়েরীতে তিনি বালুচর এলাকার ইনতাজুর রহমান চৌধুরীর ছেলে লাহিন আহমদ চৌধুরী ও তার লোকজনকে অভিযুক্ত করেছেন।
এদিকে সুহেল আহমদেরের অভিযোগ সম্পুর্ণ মিথ্যা ও বানোয়াট বলে জানান লাহিন আহমদ চৌধুরী। তিনি বলেন, মুল ঘটনাকে আড়াল করে তার বিরুদ্ধে অপপ্রচার চালানো হচ্ছে। লাহিন আহমদ জানান, সুহেল আহমদ সাবেক জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি ও সিলেট সিটি করপোরেশনের ৩৬ নং ওয়ার্ডে সাবেক কাউন্সিলর ও বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সময় ছাত্র-জনতার উপর হামলাসহ বেশ কয়েকটি মামলার পলাতক আসামী হিরন মাহমুদ নিপুর আত্মীয়।
তিনি বলেন, বিগত ফ্যাসিস্ট সরকার ক্ষমতায় থাকাকালিন ঐ মার্কেটে আমার ব্যবসায়িক ও দলীয় অফিস ছিল। যা মার্কেটের মালিকের হুকুমে ২০১৫ সালে হিরন মাহমুদ নিপুর নেতৃত্বে আমার অফিস ও ব্যবসায়িক প্রতিষ্টানে ভাঙ্গচুর করা হয়। এসময় কয়েক লাখ টাকার ক্ষতিসাধন করা হয়। হিরন মাহমুদ নিপু সে সময় ক্ষমতাশীল দলের নেতা হওয়ায় তিনি কোন ন্যায় বিচার পাননি। ভাংচুরের ঘটনায় তিনি মামলা দায়ের করলেও সে মামলা আলোর মুখ দেখেনি।
তিনি জানান, মার্কেটের মালিককে দেয়া তার অগ্রিমের টাকা এখনও ফেরত পাননি। অফিস ও দোকান ভাংচুরের পর লাহিন আহমদ আর মার্কেটে জাননি।
সরেজমিনে মার্কেটে গিয়ে দেখা যায়, ভিন্ন দৃশ্য। মার্কেট ও এলাকার বিভিন্নজনের সাথে আলাপ হয় এ প্রতিবেদকের। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক ব্যবসায়ী ও এলাকাবাসী জানান, মার্কেট দখল বা হামলা এ ধরনের কোন ঘটনা তাদের জানা নেই। তারা বলেন, লাহিনও এই মার্কেটের একজন ব্যবসায়ী ছিলেন, তাকে মার্কেট থেকে সরিয়ে দেয়া হয়েছে।
সুত্র জানায়, লাহিন আহমদ ফের ঐ মার্কেটে দোকান কোঠা যাতে ভাড়া নিতে না পারে সে জন্য মার্কেট দখলের নামে নাটক সাজানো হয়েছে। সেই সাথে তার রাজনৈতিক ইমেজ নষ্ট করার জন্য অপচেষ্টা চালানো হচ্ছে।
লাহিন আহমদ জানান, আমাকে কোনঠাসা করতে হিরন মাহমুদ নিপু অজ্ঞাতস্হান থেকে তার লোকজন দিয়ে আমার নামে মিথ্যা অভিযোগ দিয়ে রাজনৈতিক ইমেজ নষ্ট করার পায়তারা করছে।
তিনি বলেন, হিরন মাহমুদ নিপু এলাকায় ছিনতাই, ডাকাতি মাদক ব্যবসাসহ নানা অসামাজিক কর্মকান্ডে লিপ্ত ছিল। আমি এসবে বাধা দিলে আমার উপর সে ক্ষেপে যায়। এবং আমার অফিস ও ব্যবসা প্রতিষ্টানে হামলা চালিয়ে ভাংচুর করে। গত ৫ আগষ্ট আওয়ামিলীগ সরকারের পতন হওয়ার পর সে গা ঢাকা দেয়। এখন নতুন করে তার আত্বীয় স্বজন দিয়ে মিথ্যা অভিযোগ দিয়ে আমাকে হেয়প্রতিপন্ন করার অপচেষ্টা চালাচ্ছে। তিনি বলেন, জাতীতাবাদী সেচ্ছাসেবকদলের সবাইকে নিয়ে এসব আওয়ামিলীগের ফ্যসিবাদদের বিরুদ্ধে প্রতিরোধ গড়ে তোলা হবে।
এ ব্যাপারে সাধারন ডায়েরীর তদন্তকারী কর্মকর্তা সৈয়দ ফখরুল ইসলাম জানান, প্রবাসীর পক্ষ থেকে জিডি করা হয়েছে। বিষয়টির সত্য মিথ্যা তারা তদন্ত করছেন।