সাভারে পরিচয় জানতে চাওয়ায় সাংবাদিককে পেটালো সাদা পোষাকে থাকা পুলিশ
সাভার প্রতিনিধি:
সাভারে কর্মরত ইংরেজী দৈনিক নিউজ নেশনের প্রতিবেদক মনিরুল ইসলামকে রাতের আধারে বেধড়ক পিটিয়েছেন সাভার মডেল থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) আল মামুন কবির, কনস্টেবল নাজমুল এবং পুলিশ সদস্য পরিচয় দেয়া আরো দুই যুবক।
বুধবার রাতে সাভার সদর ইউনিয়নের চাপাইন তালতলা মহল্লায় এক যুবককে বাসা থেকে সাদা পোশাকে উঠিয়ে নেয়ার সময় ঘটনার বিষয়ে জানতে চাইলে সাংবাদিকের ওপর চড়াও হন পুলিশ সদস্যরা।
এ সময় দেড়ঘন্টা আটকে রেখে তাকে নির্যাতনের পর ইয়াবার মামলা দিয়ে ফাসিয়ে দেয়ার হুমকি ও একপর্যায়ে সাদা প্রাইভেটকারে তুলে নেয়ারও চেষ্টা করে পুলিশ। পরে পুলিশের নির্যাতনে আহত আহত সাংবাদিক মনিরুল ইসলামকে সাভার উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসা দেয়া হয়।
ভুক্তভোগী সাংবাদিক মনিরুল ইসলাম জানান, সাভার সদর ইউনিয়নের চাঁপাইন তালতলা এলাকায় বাসার পাশের দোকানে তিনি চা খাচ্ছিলেন। এসময় প্রতিবেশী এক নারী কান্নাকাটি করে বলতে থাকেন- তার স্বামীকে পুলিশ পরিচয়ে আটকে রেখেছে সাদা পোশাকের কয়েকজন যুবক। বিষয়টি শোনার পর স্থানীয় দুইজন সহ ঘটনাস্থলে যান তিনি। তাদের দেখা মাত্রই খারাপ আচরণ শুরু করেন কনস্টেবল নাজমুল। এসময় নিজেকে সাংবাদিক পরিচয় দিলেও তার কলার ধরে মারধর শুরু করেন উপ-পরিদর্শক আল মামুন কবির।
এলাকাবাসী জানায়, রাতে শ্রমিক সজলকে আটকে রেখে তার স্ত্রীকে টাকা আনতে বলেন এসআই আল মামুন কবিরসহ তার সহযোগীরা। সজলরা গরীব এবং নিরপরাধ হওয়ায় এগিয়ে আসেন ওই সাংবাদিক। পুলিশ পরিচয়ে সাদা পোশাকে তাদের চাঁদাবাজির বিষয়টি আড়াল করতে এসময় সাংবাদিককে মারধর শুরু করে পুলিশের লোকজন। একপর্যায়ে ইয়াবার ব্যবসায়ী বলে সাংবাদিক মনিরকে সাদা রংয়ের প্রাইভেট কারে (ঢাকা মেট্রো-গ ১৩-৭০৭১) উঠিয়ে নেয়ার চেষ্টা করে সাদা পোশাকের পুলিশ সদস্যরা।
পরে অবশ্য স্থানীয় লোকজনের সামনেই ভুল স্বীকার করে সাংবাদিক মনিরুল ইসলামের কাছে ক্ষমা চান এসআই আল মামুন কবির ও কনস্টেবল নাজমুল।
পুলিশের নির্যাতনের শিকার শ্রমিক সজল জানান, আমি গরীব মানুষ, কাজ করে খাই। রাতে চারজন ব্যক্তি আমার বাসায় এসে মোবাইল আটকে রেখে পুরো বাড়িতে তল্লাসীর নামে ভয় দেখাতে থাকে। প্রতিবেশী ভাড়াটিয়ারা এর কারণ জানতে চাইলে তাদের লাথি মেরে বাইরে বের করে দেয়া হয়। পরে জানতে পারি তারা নাকি সাভার মডেল থানার পুলিশ।
এবিষয়ে ঢাকা জেলার পুলিশ সুপার মো. আসাদুজ্জামান বলেন, লিখিত অভিযোগ পাওয়ার পর তদন্ত করে দোষীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।