প্রকৃত ধনী ব্যক্তিরা অন্যদের থেকে আলাদা হন মূলত তাঁদের চিন্তাভাবনা, অভ্যাস আর অর্থ ব্যবহারের কৌশল দিয়ে। গবেষণায় দেখা গেছে, ধনীদের কিছু অভ্যাস শুনে অনেকেই থমকে যান, বিশেষ করে মধ্যবিত্তরা। কারণ, ধনী বললে অনেকের চোখে ভেসে ওঠে অঢেল টাকা, দেদার খরচ, অনিয়ন্ত্রিত জীবনযাপন। তাই জেনে নিন প্রকৃত ধনীদের এমন ৮টি অভ্যাস সম্পর্কে, যা মধ্যবিত্তদের চোখ এড়িয়ে যায়।
সম্পদের মানে
ধনীরা সব সময় কেনাকাটায় ব্যস্ত থাকেন না। তাঁরা খোঁজেন সম্পদ। নতুন গাড়ি বা ঘর সাজানোর চেয়ে তাঁরা টাকা খাটান শেয়ারবাজারে, রিয়েল এস্টেটে বা ব্যবসায়। তাঁদের চিন্তায় সব সময় থাকে কীভাবে টাকা দিয়ে টাকা বাড়ানো যায়।
কৌশলের খেলা
মধ্যবিত্তরা যেখানে নিরাপদ বাজেট, সঞ্চয়, অবসর নিয়ে ভাবেন, ধনীরা সেখানে অর্থকে দেখেন কৌশলের খেলা হিসেবে। তাঁরা ঝুঁকি নেন, বাজারের নতুন কৌশল শেখেন। ব্যর্থতা এলে তা থেকে শিক্ষা নেন, থেমে যান না।
বিশেষজ্ঞের জন্য খরচ
মধ্যবিত্তরা অনেক সময় ভাবেন, পরামর্শক বা কোচ ভাড়া করা একধরনের বিলাসিতা। ধনীদের কাছে এটাই হলো বিনিয়োগ। তাঁরা জানেন, সঠিক বিশেষজ্ঞের পরামর্শ তাঁদের সময় বাঁচাবে, ভুল এড়াতে সাহায্য করবে আর দীর্ঘ মেয়াদে আরও অর্থ এনে দেবে।
ধনীদের কাছে সময় হলো সবচেয়ে দামি সম্পদ। তাই তাঁরা বাড়ির কাজের জন্য সাহায্য নেন, এমনকি ফ্লাইটও প্রাইভেট চার্টার্ডে নেন। উদ্দেশ্য একটাই, সময় কাজে লাগানো। কারণ, তাঁদের মতে, অর্থ গেলে আবার আসবে। কিন্তু সময় চলে গেলে আর ফেরত আসবে না।
খোলামেলা আলাপ
আমাদের সমাজে অনেক পরিবার অর্থের প্রসঙ্গ এড়িয়ে চলে। ধনীরা উল্টো। তাঁরা এটা নিয়ে আলোচনা করেন, শেখেন, পরিকল্পনা করেন। সঙ্গীর সঙ্গে বসে বাজেট ঠিক করেন। সন্তানদের ছোটবেলা থেকেই শেখান বন্ধু ও সহকর্মীদের সঙ্গে অভিজ্ঞতা ভাগ করে নিতে। এতে জ্ঞান বাড়ে, সুযোগও তৈরি হয়।
মর্যাদাকে খরচের সঙ্গে মেশান না
প্রকৃত ধনী ব্যক্তিদের প্রায়ই দেখা যায় সাধারণ পোশাকে, পুরোনো গাড়িতে। কারণ, তাঁরা জানেন, মর্যাদা আসে স্বাধীনতা থেকে। কোথায় থাকবেন, কী করবেন, কার সঙ্গে সময় কাটাবেন—এসব সুযোগ পাওয়ার সুবিধা যদি জীবনে সব সময় থাকে, সেটাই আসল সম্পদ। চোখধাঁধানো ব্যয় তাঁদের কাছে কখনোই মর্যাদার মাপকাঠি নয়।
ভাবনা প্রজন্ম ছাড়িয়ে যায়
মধ্যবিত্তরা যেখানে অবসর পর্যন্ত পরিকল্পনা করেন, ধনীরা ভাবেন প্রজন্ম ধরে সম্পদ টিকিয়ে রাখার কথা। তাঁরা ট্রাস্ট তৈরি করেন, পরিবারভিত্তিক পরিকল্পনা করেন, সন্তানদের ছোটবেলা থেকেই অর্থ ও সম্পদ নিয়ে শিক্ষা দেন।
ধনীদের এসব অভ্যাস হঠাৎ শুনলে বাইরে থেকে অবাকই হন অনেক মধ্যবিত্ত। কিন্তু ভেতরের যুক্তি বুঝলে এসবই হয়ে ওঠে স্বাভাবিক। ধনী না হয়েও যে কেউ মালিকানায় অগ্রাধিকার দেওয়া, সময়কে বেশি গুরুত্ব দেওয়া কিংবা শেখার জন্য খরচ করার জন্য চিন্তা করতে পারেন।
তাহলেই ধীরে ধীরে বদল আসতে পারে নিজের ভবিষ্যতে। কারণ, আসল সম্পদের শুরু হয় আমাদের চিন্তার ভেতর থেকেই।
সূত্র: মিডিয়াম