আল জাজিরার এক তদন্ত প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, গাজার তেল আল-হাওয়া এলাকায় ২০২৪ সালের জানুয়ারিতে নিহত ছয় বছর বয়সী হিন্দ রাজাব ও তার পরিবারের উপর হামলার পেছনে ইসরায়েলি সেনাবাহিনীর ৪০১তম ব্রিগেডের ৫২তম ব্যাটালিয়নের দুই সেনা সদস্য জড়িত ছিলেন। এদের মধ্যে রয়েছেন শন গ্লাস (Sean Glass) এবং ইতাই শুকরিকভ (Itay Shukrikov), যিনি আর্জেন্টিনার নাগরিকও।
তদন্তে কী উঠে এসেছে:
হিন্দ রাজাব ও তার পরিবার একটি গাড়িতে ছিলেন। গাড়িটি ইসরায়েলি ট্যাঙ্কের খুব কাছ থেকে (প্রায় ১৩-২৩ মিটার দূর থেকে) গোলাবর্ষণের শিকার হয়।
হিন্দ ফোনে একজন রেড ক্রিসেন্ট কর্মীর সঙ্গে কথা বলছিলেন এবং বাঁচার আকুতি জানাচ্ছিলেন।
পরবর্তীতে, ওই এলাকায় পাঠানো একটি অ্যাম্বুলেন্স, যার রুট ও উপস্থিতি ইসরায়েলি সেনাবাহিনীকে জানানো হয়েছিল, সেটিও ধ্বংস করা হয় এবং দুইজন প্যারামেডিক নিহত হন।
এই হামলার দায়ে অভিযুক্ত ইউনিটের নাম “Vampire Empire”, যেটি শন গ্লাসের অধীনে পরিচালিত হচ্ছিল।
আন্তর্জাতিক প্রতিক্রিয়া ও আইনি পদক্ষেপ:
ইতাই শুকরিকভ আর্জেন্টিনার নাগরিক হওয়ায় মানবাধিকার আইনজীবীরা আর্জেন্টিনাকে অনুরোধ করেছেন তাকে যুদ্ধাপরাধের অভিযোগে তদন্ত করার জন্য, কারণ দেশটির ‘ইউনিভার্সাল জুরিসডিকশন’ আইন বিদেশে সংঘটিত যুদ্ধাপরাধের বিচার করতে দেয়।
এই ঘটনার বিস্তারিত তথ্য — স্যাটেলাইট ছবি, অডিও রেকর্ড, এবং ধ্বংস হওয়া গাড়ির ভিডিও — আন্তর্জাতিক তদন্তে ব্যবহারযোগ্য হতে পারে।
আইসিসি (আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালত) ইতোমধ্যেই ফিলিস্তিনে সম্ভাব্য যুদ্ধাপরাধ নিয়ে তদন্ত করছে, এবং এই ঘটনা তাদের দৃষ্টিগোচরে এসেছে।
এই ঘটনাটি শুধু একটি ব্যক্তিগত ট্র্যাজেডি নয়, বরং এটি হয়ে উঠেছে একটি পরীক্ষা, যেখানে দেখা যাবে — যখন নির্দিষ্ট সেনা সদস্যদের বিরুদ্ধে অভিযোগ ও প্রমাণ খোলাসা হয়ে যায়, তখন আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় কী ধরনের পদক্ষেপ নেয়।