কুষ্টিয়ায় বিএনপির দুই নেতার ফোনালাপ ফাঁস
কুষ্টিয়া প্রতিনিধি:
নানা অপকর্ম করে সবসময় তিনিই থাকেন আলোচনায়। এবার বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার রোগমুক্তিতে দোয়া মাহফিলের আয়োজন করতে চাওয়ায় এক যুবদল কর্মীর ওপর এতেই চটলেন কুষ্টিয়ার দৌলতপুর উপজেলা বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক নুরুজ্জামান হাবলু মোল্লা। এসময় মোবাইলফোনে ওই যুবদল কর্মীকে গালিগালাজ করে তার পদ খাওয়ারও হুমকি দেন হাবলু। সেই হুমকির ফোনালাপের ৭মিনিট ১১ সেকেন্ডের একটি অডিও রেকর্ড সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়লে বিব্রত হতে হচ্ছে জেলা-উপজেলার নেতারা।
মঙ্গলবার রাত থেকে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়া ওই ফোনালাপের অডিও রেকর্ডটিতে শোনা যাচ্ছে দলীয় এক নেতাকে হুমকি-ধমকি ও অশালীন কথা বলেন হাবলু। ফোনালাপকে কেন্দ্র করে নতুন করে আবারও আলোচনায় এসেছেন এই নেতা।
ফোনালাপে সুমন নামে এক যুবদল কর্মীকে দলের চেয়ারপার্সন বেগম খালেদা জিয়ার রোগমুক্তি ও সুস্থতা কামনা করে দোয়ার আয়োজন করতে নিষেধ করেন। ফোনালাপে অপর প্রান্ত থেকে ওই যুবদল কর্মী দোয়ার অনুষ্ঠান আয়োজন করার বিষয়ে অনড় থাকলে হাবলু মোল্লা তাকে হুমকি দিয়ে বলেন, আমার জমিতে কোনো দোয়ার অনুষ্ঠানের আয়োজন করা যাবে না। যদি আয়োজন বন্ধ না করা হয় তাহলে পুলিশ দিয়ে তাদের ধরিয়ে দিব। বিষয়টি তিনি ওসি ও এসপিকে ফোন দিয়ে জানাবেন বলেও হুমকি দেন হাবলু।
তবে যুবদল কর্মী হাবলু মোল্লাকে চাচা সম্বোধন করে তাকে সাথে নিয়ে দোয়া মাহফিলের আয়োজন করবেন বলে জানালে উত্তেজিত হয়ে হাবলু মোল্লা বলেন,আমার জমির ওপর কারো অনুষ্ঠান করতে দেব না। যুবদল নেতা তখন বলেন, আপনার জমির ওপর আওয়ামী লীগের নৌকা ঝুলানো আছে সেটা নিয়ে তো কিছু বলছেন না? আমার জমিতে কি ঝুলানো থাকবে, কি থাকবে না সেটা আমি বুঝব। আমি তোমার পদ খেয়ে ফেলব। তুমি কত বড় নেতা হয়েছ আমি দেখছি।
নিজের বাড়িতে দোয়া মাহফিল করার পরামর্শ দিয়ে হাবলু মোল্লা বলেন, দোয়ার আয়োজন থেকে বিরত না থাকলে তোমাকে সাইজ করাসহ দল থেকে বহিষ্কার করব, করা হবে। হাবলু মোল্লাকে চাচা সম্বোধন করা যুবদল নেতাকে হাবলু বলেন, খালেদা জিয়ার জন্য তোমার এত দরদ কিসের? তুমি কিসের নেতা? দোয়ার ‘গুষ্ঠি মারি’ বলেও তিনি উল্লেখ করেন হাবলু।
৫ আগস্ট পরবর্তী সময়ে বিএনপি নেতাকর্মীদের ওপর হামলা, চাঁদাবাজি সহ নানান অপকর্মের অভিযোগ রয়েছে এই নেতার বিরুদ্ধে। হাসিনা সরকারের পাতানো নির্বাচনে দলীয় হাইকমান্ডের নির্দেশনা অমান্য করে মনোনয়ন উত্তোলন করলে ২০১৩ সালের ২৮ নভেম্বর বিএনপি থেকে তাকে বহিষ্কার করা হয়। ৫ আগস্টের পর আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুবউল আলম হানিফের ঘনিষ্ঠ এক ঠিকাদারের কাছ থেকে গাড়ি উপঢৌকন নেওয়া নিয়েও বিতর্ক হয় তাকে নিয়ে। তবে সেই গাড়ি নিজের টাকায় কিনেছেন বলে দাবি করেন হাবলু।
এ বিষয়ে যুবদল কর্মী সমুন বলেন, আমরা দলীয়ভাবে একটি দোয়া অনুষ্ঠানের আয়োজন করতে চেয়েছিলাম। সে জায়গায় অনুষ্ঠান করতে চেয়েছিলাম সেটা হাবলু চত্বর। সেখানে অনেক বড় জায়গা আছে। তারপরও আমাকে ফোনে হুমকি দেওয়া হয়েছে।
এ বিষয়ে কথা বলতে হাবলু মোল্লার মোবাইল ফোনে একাধিকবার কল দিলেও তিনি কলটি রিসিভ করেননি।
দৌলতপুর উপজেলা বিএনপির সদস্য সচিব শহীদ সরকার মঙ্গল বলেন, বিষয়টি নিয়ে আমার কথা বলা ঠিক হবে না। দুইজনই আমাদের দলের নেতা। আমি কার বিষয়ে কি বলব।