পদ্মার চরবাসীর চিকিৎসা সেবার ৩০ লাখ টাকার নৌ-অ্যাম্বুলেন্সটি দূর্ভোগে তিন ইউনিয়নের প্রায় অর্ধ লক্ষাধিক মানুষ

মানিকগঞ্জ:

পদ্মার চরাঞ্চলের বাসিন্দাদের জরুরি চিকিৎসাসেবা নিশ্চিতের লক্ষ্যে মানিকগঞ্জের হরিরামপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে সাত বছর আগে বরাদ্দ পাওয়া প্রায় ৩০ লাখ টাকা মূল্যের নৌ-অ্যাম্বুলেন্সটি অকেজো হয়ে পড়ে আছে। কোন কাজে আসেনি চরবাসীর জন্য। বরাদ্দ পাওয়ার পর রোগী বহনে একদিনের জন্যও নৌ-অ্যাম্বুলেন্সটি ব্যবহার হয়েছে কি তা কেউ নিশ্চিত করে বলতে পারেনি। দীর্ঘদিন ব্যবহার না হওয়ায় অকেজো হয়ে পড়ে নস্ট হচ্ছে। এতে উপজেলার মূল ভূখন্ড থেকে বিচ্ছিন্ন পদ্মার চরাঞ্চলের  ৩ টি ইউনিয়ন আজিমনগর, সুতালড়ী ও লেছড়াগঞ্জের প্রায় অর্ধ লক্ষাধিক মানুষ জরুরী চিকিৎসা সেবা থেকে বঞ্চিত হচ্ছে।

হরিরামপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স সূত্রে জানাগেছে, উপকূলীয় দুর্গত এলাকার মানুষের চিকিৎসাসেবা নিশ্চিত করতে কমিউনিটি বেইসড হেলথ কেয়ার প্রকল্পের মাধ্যমে ২০১৭-১৮ ও ২০১৮-১৯ অর্থবছরে হরিরামপুরসহ ২০টি উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে দেওয়া হয় একটি করে নৌ-অ্যাম্বুলেন্স। বরাদ্দের পর এ পর্যন্ত একজন রোগীও পরিবহন করা হয়নি। ২০২১ সালের মার্চ মাস থেকে নৌ-অ্যাম্বুলেন্সটির ইঞ্জিন অচল। বর্তমানে উপজেলার আন্ধারমানিক ঘাটে পড়ে নষ্ট হচ্ছে অ্যাম্বুলেন্সটি।
সরজমিনে গিয়ে দেখাযায়, উপজেলার হরিরামপুর আন্ধারমানিক ঘাটে অযত্নে  পড়ে আছে নৌ-অ্যাম্বুলেন্সটি। সামনের গ্লাস ও মেশিনপত্র ভাঙ্গা। ভেতরে রোগীর শোয়ার এবং রোগীর স্বজনদের বসার সীট নেই। ভেতরে পানি, শ্যাওলা ও কাঁদায় নোংরা হয়ে আছে। এ ছাড়াও বিভিন্ন জায়গায় মরিচা ধরেছে।

স্থানীয়রা অভিযোগ করে জানান, বছরের পর বছর নৌ-অ্যাম্বুলেন্সটি অব্যবহৃত অবস্থায় পড়ে পড়ে নষ্ট হচ্ছে। চরাঞ্চলের দরিদ্র অসহায় মানুষের কোনো কাজেই আসেনি। চরাঞ্চলের লোকজন আন্ধারমানিক ও বাহাদুরপুর ঘাটের ট্রলারে পারাপার হয়ে থাকেন। রাতের বেলায় কারও চিকিৎসা বা অন্য জরুরি প্রয়োজনে ঘাটের মাঝিদের ফোন করলে তারাই পার করেন তাদের।
চরাঞ্চলের বাসিন্দা নাসির উদ্দিন বলেন, চরাঞ্চলবাসীর জন্য নৌ-অ্যাম্বুলেন্স বরাদ্দ দেওয়া হলেও তা চরবাসীর কোনো কাজে আসেনি। এ পর্যন্ত চরাঞ্চলের কোনো রোগী বহন করা হয়নি। বর্তমানে আন্ধারমানিক ঘাটে পড়ে পড়ে নষ্ট হচ্ছে নৌ-অ্যাম্বুলেন্সটি।

আন্ধারমানিক ঘাটের এক ট্রলারচালক বলেন, রাত-বিরেতে দরকার হলে চরের লোকজন আমাদের ফোন করলে আমরা তাদের পার করি। নৌ-অ্যাম্বুলেন্সটি দীর্ঘদিন ধরে আন্ধারমানিক ঘাটে পড়ে আছে। লোকজনের কোনো কাজে আসেনি এটি।
উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. কাজী এ কে এম রাসেল বলেন, কয়েকদিন হলো আমি এই হাসপাতালে যোগদান করেছি। গত বছরের অক্টোবরে উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে নৌ-অ্যাম্বুলেন্স অকেজোর বিষয়টি জানানো হয়েছে। কর্তৃপক্ষের কোন নির্দেশনা পেলে সে অনুযায়ী ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

সংবাদটি ভালো লাগলে শেয়ার করুন
বিষয়: * অকেজো পদ্মার চরবাসীর চিকিৎসা সেবার ৩০ লাখ টাকার নৌ-অ্যাম্বুলেন্সটি * দূর্ভোগে তিন ইউনিয়নের প্রায় অর্ধ লক্ষাধিক মানুষ