ছাত্র আন্দোলনে শহীদ বেনাপোলের আব্দুল্লাহ’র বাড়িতে স্বাস্থ্যের মহাপরিচালক
বেনাপোল প্রতিনিধি :
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের যোদ্ধা, সরকারি শহীদ সোহরাওয়ার্দী কলেজের রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের শেষ বর্ষের মেধাবী শিক্ষার্থী, শহীদ আব্দুল্লাহর বাড়ি পরিদর্শন করেছেন স্বাস্থ্য বিভাগের মহাপরিচালক প্রফেসর ডা. আবু জাফর। বুধবার (২০ নভেম্বর) রাত ৮টার দিকে যশোরের বেনাপোল পোর্ট থানার বড়আঁচড়ায় স্বাস্থ্য বিভাগের মহাপরিচালক আব্দুল্লাহর বাড়িতে গিয়ে শোকসন্তপ্ত পরিবারের সদস্যদের খোঁজ খবর নেন, কবর জিয়ারত করেন এবং তার রুহের মাগফেরাত কামনা করে দোয়া করেন।
এসময় তিনি জানান, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে মৃত্যুবরনকারী সকলে ন্যায় বিচার পাবে। বর্তমান অন্তবর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মোহাম্মদ ইউনূস, স্বাস্থ্য বিষয়ক উপদেষ্টা নূর জাহান বেগমসহ অন্যান্য যে সমস্ত উপদেষ্টারা আছেন আমরা সকলে সম্মিলিতভাবে চেষ্টা করছি বিন্দুমাত্র হলেও যেন তাদের রক্তের ঋণ শোধ করতে পারি।
এসময় উপস্থিত ছিলেন যশোরের অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক এসএম শাহিন, শার্শা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা কাজী নাজিব হাসান, উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভ‚মি) নুসরাত ইয়াসমিন, সিভিল সার্জন মাহমুদুল হাসান, উপজেলা স্বাস্থ্য পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা মাহফুজা খাতুন, বেনাপোল পোর্ট থানার ওসি রাসেল মিয়া ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর বিভিন্ন পর্যায়ের কর্মকর্তারা।
এর ২দিন আগে সোমবার আব্দুল্লাহ এর কবর জিয়ারত করেন বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন এবং ভ‚মি মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা এএফ হাসান আরিফ। আর ১৪ নভেম্বর তার মৃত্যুর খবর পেয়ে বেনাপোল বন্দরের উদ্বোধন অনুষ্ঠান থেকে আব্দুল্লাহর বাড়িতে যান নৌ-পরিবহন এবং শ্রম ও কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অবঃ) ড. এম সাখাওয়াত হোসেন।
উল্লেখ্য, গত ৫ আগস্ট বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনে শহীদ সোহরাওয়ার্দী কলেজের রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের চতুর্থ বর্ষের শিক্ষার্থী আব্দুল্লাহ পুলিশের গুলিতে আহত হন। ঢাকায় বোনের বাসায় থেকে লেখাপড়া করতো আব্দুল্লাহ।
জানা যায়, ওইদিন সন্ধ্যা ৭টার দিকে রাজধানীর তাঁতীবাজার মোড়ে বংশাল থানার সামনে গুলিবিদ্ধ হন আব্দুল্লাহ। তার কপালের মাঝ বরাবর গুলি লাগে। প্রথমে তাকে মিটফোর্ড এবং পরে ঢাকা মেডিক্যালে নেওয়া হয়। সেখানে অস্ত্রপচার করে তার মাথা থেকে গুলি বের করা হয়। তাকে হাসপাতাল থেকে ১০ আগস্ট ছাড়পত্র দেওয়া হয়। এরপর তাকে বেনাপোলে নিয়ে আসেন স্বজনরা। বাড়িতে আব্দুল্লাহর অবস্থার অবনতি হতে থাকলে তাকে ১১ আগস্ট রাতে খুলনা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। সেখানে তার অবস্থার আরও অবনতি হওয়ায় ডাক্তাররা দ্রæত আবারও ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার পরামর্শ দেন। গত ১২ আগস্ট সকাল ৭টায় সেখানে তাকে ভর্তি করা হয়। চিকিৎসকরা মাথার ভেতরে ইনফেকশন দেখতে পান, যা তরল প্লাজমার মতো গলে গলে পড়তে থাকে। আবারও তার অপারেশন করা হয়। অবস্থার উন্নতি না হওয়ায় গত ২২ আগস্ট তাকে সিএমএইচে স্থানান্তর করা হয়। সেখানে দীর্ঘদিন চিকিৎসাধীন অবস্থায় ১৪ নভেম্বর সকাল সাড়ে ৮টার দিকে মারা যান আব্দুল্লাহ।