আওয়ামি লীগ থেকে হয়েছেন যুবদল নেতা : ‘বিজিবির লাইনম্যান’ হয়ে কামিয়েছন অঢেল টাকা

সিলেট:

বর্তমানে সিলেটের গোয়াইনঘাট মিঠার রাজ্য বলে সবার কাছে ব্যাপক পরিচিত লাভ করেছে। প্রতিদিন হাজার হাজার বস্তা চিনি এই গোয়াইনঘাট বর্ডার দিয়ে সিলেটে ঢুকছে। সকাল থেকে গভীর রাত পর্যন্ত চলে চিনি চোরাচালান।  সীমান্তবর্তী চোরাচালান সিন্ডিকেটের কাছে ‘বিজিবির লাইনম্যান’ হিসেবে পরিচিত গোয়াইনঘাট উপজেলা যুবদলের আহ্বায়ক কমিটির ৪১ নং সদস্য জুবের আহমদ।

স্থানীয় সূত্র জানিয়েছে, সিলেটের গোয়াইনঘাট সীমান্তে রয়েছে জুবের আহমদের নিজস্ব একটি সিন্ডিকেট। এই সিন্ডিকেট দিয়ে সীমান্তবর্তী চোরাচালানের ‘লাইন’ নিয়ন্ত্রণ করেন তিনি। তিনি সীমান্তে চোরাচালানের লাইন পরিচালানা করে হয়েছেন অঢেল টাকার মালিক। বর্তমান সময়েও তিনি চোরাচালান নিয়ে মরিয়া। তাকে নিয়ে ইতিমধ্যে বিভিন্ন গনমাধ্যমে সংবাদ প্রকাশ হলেও তিনি আরো বেপরোয়া হয়ে উঠেছেন। স্হানীয় সুত্র থেকে জানা যায়, তিনি সিলেট জেলা ও মহানগর যুবদলের প্রভাবশালী ২ নেতাকে ম্যানেজ করে এসব কর্মকান্ড চালিয়ে যাচ্ছেন।তিনি স্হানীয় কয়েকজনের কাছে বুক ফুলিয়ে বলেন, আগে টাকা পরে দল, টাকা হলে এরখম পদবী কেনা যায়।  জুবের আহমদ নিজ এলাকায় গড়ে তুলেছেন আলাদা সিন্ডিকেট। গোয়াইনঘাট উপজেলা যুবদলের রাজনীতেতে জড়িত এই নেতা দলীয় মিছিল-মিটিংয়ে  ফ্যাসিস্ট আওয়ামী লীগের বিরুদ্ধে নিজের শক্ত অবস্থান দেখাতে গিয়ে হয়েছেন বিতর্কিত। দলবিরোধী কর্মকাণ্ডের জন্য রীতিমতো ‘ত্যক্ত’ গোয়াইনঘাটের মানুষ ও তার দলের নেতারা। জুবেরের সিন্ডিকেটের মধ্যে রয়েছেন তার ভাই দুলাল, নাজিম, হুমায়ুন, নবী, জাহের ও মোজাম্মেল, রাসেল ও কামাল চোরাচালানের ‘বিজিবি লাইনম্যান’ হিসেবে থাকায় চোরাকারবারিদের মধ্যে তাকে আলাদা পরিচিত এনে দিয়েছে। সীমান্তে চোরাচালানের লাইন নিয়ন্ত্রণ করার কারনে তিনি হয়ে উঠেছেন বেতাজ বাদশা! চোরাচালানের অভিযোগে গত ২০২২ সালের ১১ মে গোয়াইনঘাট থানায় তার বিরুদ্ধে মামালা দায়ের করা হয়। গোয়াইনঘাট থানার ১৪/২২  নং মামলায় ২ নম্বর আসামি হলেন জুবের আহমদ। সূত্র জানায়, গোয়াইনঘাট উপজেলা যুবদলের আহ্বায়ক কমিটির সদস্য জুবের আহমদের বিরুদ্ধে দলীয় শৃঙ্খলাভঙ্গের অভিযোগ রয়েছে গত ৫ আগস্টের পর থেকে বিএনপি- যুবদলের মিছিল-মিটিংয়ে আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের নিয়ে আসার অভিযোগ রয়েছে তার বিরুদ্ধে দলের সিদ্ধান্তের বাইরে গিয়ে উপজেলা নির্বাচনে বহিষ্কৃত নেতা শাহ আলম স্বপনের নির্বাচনি প্রচার-প্রচারণায় ব্যস্ত ছিলেন জুবের। এসব অনুষ্ঠানের ভিডিও ও ছবি সোশ্যাল মিডিয়ায় প্রচার হয়।

জুবেরের বিরুদ্ধে অভিযোগে জানা যায়, তিনি আওয়ামিলীগের রাজনীতির সাথে জড়িত ছিলেন, তার বিরুদ্ধে অভিযোগ করেছেন গোয়াইনঘাট উপজেলা যুবদলের আহবায়ক কমিটির সিনিয়র সদস্য ও ২নং পশ্চিম জাফলং ইউনিয়ন বিএনপির সাধারণ সম্পাদক এসএম শাহিন।

লিখিত অভিযোগে এসএম শাহিন উল্লেখ করেন, গত ৫ আগস্টের আগে আওয়ামী বাকশাল সরকারের বিরুদ্ধে আন্দোলন সংগ্রামে, মিটিং-মিছিলে, নিষ্ক্রিয় থেকে আওয়ামি লীগের সাথে আতাঁতকারী জুবের এখন নিজের গ্রুপে লোক বাড়াতে আওয়ামিলীগের দুঃশাসনের আমলে সীমান্তবর্তী বুঙ্গার লাইন চালানো ও মিটিং মিছিলে সক্রিয় থাকা জুবেরের ভাই, বাতিজা, ভাগনা মিলে এমপি ইমরানের সেল্টারে এলাকায় ত্রাসের রাজত্ব সৃষ্টি করে জাতীয়তাবাদী বিএনপি ও যুবদলের অসহায় কর্মীদেরকে মামলা-হামলায় নির্যাতন করেন। এছাড়া তিনিসহ তার ভাইয়েরা বিজিবি, ডিবি, পুলিশের লাইনম্যান হিসাবে চোরাচালানের লাইন নিয়ন্ত্রন করতেন।

জুবেরের ভাই আওয়ামিলীগ নেতা কাজী সিরাজ, জাহের, নাজিম, দুলাল, নবী, হুমায়ূন, মুজাম্মিল সরাসরি আওয়ামী লীগের রাজনীতিতে জড়িত।
সরকার পরিবর্তন হওয়ার সাথে-সাথে জুবের জাতীয়তাবাদী দল বিএনপি ও যুবদলের মিটিং মিছিলে প্রবেশ করে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করে আসছেন, এতে দলের ভাবমূর্তি বিনষ্ট হচ্ছে।

দলের সিদ্ধান্তের বাহিরে গিয়ে বিগত উপজেলা নির্বাচনকারী বহিষ্কৃত নেতা শাহ আলম স্বপনের নির্বাচনের প্রচার প্রচারনায় রাতের আধারে পোস্টার লাগাতে ব্যস্ত থাকা জুবের আওয়ামী লীগের আমলে তার ভাই ভাতিজার ছত্রছায়ায় অবৈধ ভাবে টাকা কামিয়ে গত ৫আগস্টের পর থেকে বিএনপি ও যুবদলের মিছিল মিটিংয়ে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করে আসছেন। লিখিত অভিযোগ দায়ের কালে শাহিন বিগত দিনে জুবের আহমদসহ তার ভাই, ভাতিজার আওয়ামিলীগের মিছিল মিটিংয়ে ও ইমরান এমপির সাথে সাক্ষাতের ছবি স্যোশাল মিডিয়ায় ভাইরাল থাকা স্ক্রিনশট জেলা নেতৃবৃন্দের কাছে জমা দেন।

উল্লেখিত ব্যক্তির বিরুদ্ধে দলীয় শৃঙ্খলা বিরোধী এসব কারনে সাংগঠনিক ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য তিনি জেলা যুবদলের সভাপতি এডভোকেট মুমিনুল ইসলাম মুমনি সাধারণ সম্পাদক মকসুদ আহমদ এর কাছে লিখিত আবেদনটি করেন।

সংবাদটি ভালো লাগলে শেয়ার করুন
বিষয়: * ‘বিজিবির লাইনম্যান’ হয়ে কামিয়েছন অঢেল টাকা * আওয়ামি লীগ থেকে হয়েছেন যুবদল নেতা