গাইবান্ধায় শেখ হাসিনা-এসপি-ওসিসহ ১০ জনের নামে হত্যা চেষ্টা মামলা
গাইবান্ধা প্রতিনিধি:
গত ৪ আগস্ট বৈষম্যবিরোধী ছাত্র-জনতার আন্দোলনে হামলার অভিযোগে সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ গাইবান্ধার সাবেক পুলিশ সুপার কামাল হোসেন ও সাবেক ওসি মাসুদ রানার বিরুদ্ধে হত্যা চেষ্টা মামলা দায়ের হয়েছে।
এই মামলায় আরও সাতজনের নাম উল্লেখসহ অজ্ঞাত ৫০-৬০ জনকে আসামি করা হয়। সোমবার (১১ নভেম্বর) ওই আন্দোলনে আহত ওয়াহেদুর রহমান বাদী হয়ে গাইবান্ধা অতিরিক্ত চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে মামলাটি করেন।
মামলার অন্যান্য আসামিরা হলেন, গাইবান্ধার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার ইব্রাহিম, জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি আবু বক্কর সিদ্দিক, সাধারণ সম্পাদক মোজাম্মেল হক মণ্ডল, গাইবান্ধা যুবলীগের সভাপতি সরদার সাঈদ হাসান লোটন, সাধারণ সম্পাদক শাহ্ আহসান হাবীব রাজীব, নিষিদ্ধ সংগঠন জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি আসিফ সরকার, সাধারণ সম্পাদক মোসাদ্দেক মামুনসহ আজ্ঞাত আরও ৫০-৬০ জন।
মামলার এজাহারে বলা হয়, সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা হটানো ছাত্র-জনতার সেই আন্দোলনে পুলিশ সুপার কার্যলায়ের সামন দিয়ে মিছিলটি সার্কিট হাউজের দিকে যাওয়ার সময় স্বৈরাচার হাসিনার নির্দেশে সাবেক পুলিশ সুপার কামাল হোসেন ও দায়িত্বরত পুলিশ সদস্যরাসহ ছাত্রলীগ, যুবলীগ, আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা ছাত্র- জনতাকে হত্যার উদ্দেশে দেশীয় অস্ত্রশস্ত্র নিয়ে ইটপাটকেল ও গুলি, রাবার বুলেটসহ টিয়ারসেল নিক্ষেপ করে। পুলিশের ছোড়া গুলিতে বাদী ওয়াহেদুর রহমানের শরীরে নয়টি গুলি লেগে মাটিতে পড়ে যায়। এসময় স্বাক্ষী রাশেদুজ্জামান আশিকসহ চার শতাধিক ছাত্র-জনতা আহত হয়।
মামলার বাদী ওয়াহেদুর রহমান রহমান বলেন, আমি পুলিশের গুলিতে আহত হয়ে দীর্ঘদিন চিকিৎসাধীন ছিলাম। বাড়িতে থেকে স্বৈরাচারের দোসর ছাত্রলীগ ও আওয়ামী লীগসহ তাদের অঙ্গ সংগঠনের নেতাকর্মীরা প্রতিনিয়ত হুমকি দিয়ে যাচ্ছে। ওই দিনের ঘটনায় অসংখ্য আহত ছাত্র-জনতার হয়ে তার পর কোনো রাজনৈতিক দল প্রকৃত দোষীদের বিচার দাবি করেনি বা মামলা করলেও প্রকৃত দোষীদের আসামি করেনি। এজন্য আজ সোমবার সব আহতদের বিচারের দাবিতে আমি বাদী হয়ে আদালতে মামলাটি করেছি।
আদালতে উপস্থিত থেকে মামলার স্বাক্ষী রাশেদুজ্জামার আশিক আদালতে গণমাধ্যম কর্মীদের বলেন, দেশের প্রত্যকটি স্তরের স্বৈরাচারের দোসররা ঘাপটি মারে আছে। গত আগস্ট মাসের ৪ তারিখে যেসব পুলিশ অফিসারদের নির্দেশে আমাদের হত্যার উদ্দেশে গুলি করা হয়েছে। আজও তারাই গাইবান্ধা এসপি অফিসে কর্মরত আছেন।
এ মামলার আইনজীবী মো. রেজওয়ানুল হক মন্ডল বলেন, স্বৈরাচার হাসিনাকে প্রধান আসামি করে গাইবান্ধার সাবেক পুলিশ সুপার কামাল হোসেনসহ ১০ জনের নাম উল্লেখ করে ও আরও ৫০-৬০ জনকে অজ্ঞাত আসামি করে মামলাটি ফাইল করা হয়েছে। বিজ্ঞ আদালত মামলাটি তদন্তের জন্য পিবিআইকে নির্দেশ দিয়েছে বলেও জানান এ আইনজীবী।