মধ্যরাতে এলপিজির জাহাজে আগুন
বঙ্গোপসাগরের কুতুবদিয়ায় তরলীকৃত পেট্রোলিয়াম গ্যাসবাহী (এলপিজি) জাহাজে আগুন লাগার ঘটনা ঘটেছে। পরে কোস্ট গার্ড ও নৌবাহিনীর উদ্ধারকারী দলের সহায়তায় জাহাজে থাকা ৩১ জনকে উদ্ধার করা হয়েছে।
গতকাল শনিবার রাত ১টার দিকে আগুনের ঘটনা ঘটে। আজ রবিবার বেলা সাড়ে ১১টায় প্রতিবেদন লেখা পর্যন্ত কোনো হতাহতের খবর পাওয়া যায়নি।
প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে, ক্যাপ্টেন নিকোলাস নামের মাদারভেসেল (বড় জাহাজ) থেকে শিপ টু শিপ পদ্ধতিতে ‘এলপিজি সোফিয়া’ নামের লাইটার জাহাজে (ছোট জাহাজ) এলপিজি স্থানান্তরের সময় এই আগুন লাগে।
চট্টগ্রাম বন্দর সূত্রে জানা যায়, গত ৬ অক্টোবর ক্যাপ্টেন নিকোলাস জাহাজটি ওমান থেকে এলপিজি নিয়ে চট্টগ্রাম বন্দরের আওতাধীন কুতুবদিয়া এলাকায় নোঙর করে। এ সময় জাহাজটিতে ৪২ হাজার ৯৭৫ টন এলপিজি ছিল।
এসব এলপিজি লাইটার জাহাজে করে ভাটিয়ারিতে নিয়ে আসার কাজ চলছিল। জাহাজটিতে আগুন লাগার বিষয়ে রাত ১টা ৫০ মিনিটে চট্টগ্রাম বন্দরের নিয়ন্ত্রণকক্ষে খবর পৌঁছলে বন্দরের উদ্ধারকারীদল ঘটনাস্থলে যায়।
কোস্ট গার্ড পূর্ব জোনের কর্মকর্তা লেফটেন্যান্ট শাকিব মেহবুব বলেন, গভীর সাগরে নোঙর করা ওই জাহাজে হঠাৎ দাউ দাউ করে আগুন জ্বলতে দেখা যায়। খবর পেয়ে কোস্ট গার্ডের একটি জাহাজ, একটি টাগবোট ও চারটি স্পিডবোট উদ্ধার ও আগুন নিয়ন্ত্রণে কাজ শুরু করে।এ ছাড়া আগুন নিয়ন্ত্রণে বাংলাদেশ কোস্ট গার্ডের সঙ্গে নৌবাহিনী ও পোর্টের অগ্নিনির্বাপক দলগুলোও যৌথভাবে কাজ করছে। তিনি বলেন, দুটো জাহাজ পাশাপাশি লাগানো ছিল। এ সময় মাদার ভেসেলেও আগুন লাগে। তবে আগুন লাগার পরপরই উভয় জাহাজকে আলাদা করা হয়। তাৎক্ষণিকভাবে ঘটনার বিস্তারিত জানাতে পারছি না।
চট্টগ্রাম বন্দরের সচিব ওমর ফারুক বলেন, কুতুবদিয়ার কৈয়ারবিল পয়েন্টে নোঙর করা ‘সুফিয়া’ নামে এলপিজি বহনকারী একটি লাইটারেজ জাহাজে হঠাৎ আগুন ধরে যায়। খবর পাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে আমাদের উদ্ধারকারী দল সেখানে গেছে। জীবির ৩১ জনকে উদ্ধার করেছে এমন তথ্য জানতে পেরেছি। বিস্তারিত এখনো জানতে পারিনি।
এদিকে কুতুবদিয়ায় নোঙর করা ‘গ্যাস জিএমএস’ ও ‘ক্যাপ্টেন নিকোলাস’ নামের জাহাজ দুটি ইরান থেকে এলপিজি নিয়ে এসেছে বলে লিখিত অভিযোগ দিয়েছিলেন এলপিজি অপারেটর অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের প্রেসিডেন্ট আজম জে চৌধুরী। তিনি চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান ও বাংলাদেশ ব্যাংক গভর্নরের কাছেও লিখিত অভিযোগ করেছিলেন।
অভিযোগের বিষয়ে ক্যাপ্টেন নিকোলাস জাহাজের এজেন্ট ও সিওয়েভ মেরিন সার্ভিসেসের প্রধান নির্বাহী শেখ মোহাম্মদ ছামিদুল হক বলেন, ‘আমরা ইরান থেকে কোনো এলপিজি ক্রয় করিনি। আমরা ওমান থেকে পণ্য লোড করেছি।
এর আগে গত ৩০ সেপ্টেম্বর সকাল পৌনে ১১টার দিকে চট্টগ্রাম বন্দরের ডলফিন জেটিতে বাংলাদেশ শিপিং করপোরেশনের মালিকানাধীন ‘বাংলার জ্যোতি’ নামের একটি অয়েল ট্যাংকারে বিস্ফোরণের পর আগুন লাগে। ওই ঘটনায় তিনজনের মৃত্যু হয়। এরপর গত ৫ অক্টোবর চট্টগ্রাম বন্দরের বহির্নোঙরে ‘বাংলার সৌরভ’ নামের আরেকটি তেলবাহী জাহাজে আগুন লাগে। দুটি জাহাজই রাষ্ট্রায়ত্ত কোম্পানি বাংলাদেশ শিপিং করপোরেশনের মালিকানাধীন।