মুক্তাগাছায় মহালয়া তিথিতে বর্ণাঢ্য আয়োজনে দেবী বন্দনা
মুক্তাগাছা প্রতিনিধি:
ধর্মীয় ভাবগাম্ভীর্য ও আচার অনুষ্ঠানের মধ্যদিয়ে সনাতন হিন্দু সম্প্রদায়ের অন্যতম বৃহত্তম ধর্মীয় উৎসব শারদীয় দুর্গোৎসবের প্রারম্ভে মহালয়া তিথির মধ্য দিয়ে আজ বুধবার (২ অক্টোবর) দেবী পক্ষের শুভ সূচনা হয়েছে।
মহালয়াকে কেন্দ্র করে ভোরের আলো ফুটে উঠার আগেই মহালয়ার তিথির মাহেন্দ্রক্ষণে মুক্তাগাছা শহরের ৫৬ প্রহর পূজা মণ্ডপে চন্ডীপাঠ ও দেবীদুর্গার আগমনীর সঙ্গীতানুষ্ঠানের মধ্য দিয়ে দেবীকে মর্ত্যধামে আমন্ত্রণ জানান সনাতন হিন্দু সম্প্রদায়ের ভক্তরা।
অনুষ্ঠানে পুরোহিতের কণ্ঠে পবিত্র চন্ডি পাঠের পাশাপাশি সনাতনী শিল্পগোষ্ঠীর শিল্পীদের পরিবেশনায়। দুর্গাদেবীর আগমনীর সঙ্গীতেদেবী বন্দ মুখরিত হয়ে উঠে পুরো ৫৬ প্রহর পূজামণ্ডপ এলাকা। অনুষ্ঠানের শিল্পীসহ ভক্তরা লাল-সাদা রঙের বর্ণিল শাড়ীপরে মহালয়ার অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণ করেন।
এ সময় তারা শঙ্ক ও উলুধ্বনীতে মুখরিত করে তুলেন পুরো এলাকাকে। অনুষ্ঠানে শ্রুতিমধুর চন্ডী পাঠের পাশাপাশি আগমনি সঙ্গীতে পুলকিত হয়ে উঠেন তারা।
ভক্ত প্রথম সরকার পার্থ জানান, এই মহালয়ার মধ্য দিয়ে পিতৃপক্ষের অবসান ঘটিয়ে দেবী পক্ষের শুভ সূচনা হয়। মর্ত্যধামে দেবী দুর্গার আগমন ঘটেছে। মায়ের আগমনি বার্তায় আমরা বেশ পুলকিত। মা যেন আমাদেরকে সকলকে ভাল রাখেন। দেশবাসীকে ভালো রাখেন, শান্তিতে রাখেন এই প্রার্থনা করছি
অনুষ্ঠানে অংশ নেয়া শিল্পীগোষ্ঠী জানান, মহালয়া তিথির মধ্য দিয়ে এই মর্ত্যধামে মায়ের আগমন ঘটেছে। আজকে আমরা চন্ডীপাঠ, আগমনি গান গেয়ে মাকে বরণ করেছি। আজকে আমরা মায়ের কাছে প্রার্থনা করব মা যেন সবাইকে ভাল রাখেন। সবাই যেন শান্তিতে থাকতে পারি।
শুভম আগারওয়ালা নামে আরেক ভক্ত জানান, আজকে মহালয়ার মধ্য দিয়ে মায়ের যে আগমনি বার্তা তাতে যেন সারা বিশ্বে শান্তি বিরাজমান করে, সেই প্রার্থনা করেছি মায়ের কাছে।অনুষ্ঠানের আয়োজক কমিটির সদস্য নয়ন কর জানান, আজকে দেবীপক্ষের সূচনা হয়েছে। আমরা দেশবাসী তথা বিশ্ববাসীর শান্তির লক্ষ্যে এই আয়োজন করেছি। আমাদের মাতৃভূমি যেন শান্তিতে থাকে। সকল অশুভ শক্তি যেন বিনাশ হয়, সে কামনা করি আমরা। তিনি জানান, প্রতিবছর এভাবে মহালয়া আয়োজন করবো আমরা।
পুরোহিত শংকর চক্রবর্তী জানান, মহালয়া হলো পিতৃপক্ষ এবং দেবীপক্ষের সন্ধিক্ষণ। এর মাধ্যমে দুর্গাপুজোর উৎসবের সূচনা হয়। দেবী দুর্গা এদিন পৃথিবীতে অবতরণ করেছিলেন বলে বিশ্বাস করা হয়। এটি দেবী দুর্গার জন্ম এবং অসুর রাজা মহিষাসুরের উপর তাঁর চূড়ান্ত বিজয়ের বর্ণনা দেয়। পিতৃপক্ষে প্রয়াত পূর্বপুরুষদের আত্মার শান্তি কামনা করে ‘জলদান’ বা তর্পণ করা হয় এবং পরলোকগত পূর্বপুরুষদের শ্রদ্ধা জানানো হয়।