সুবর্ণচরে মাদক সেবীদের হামলা লুটপাট অগ্নিকাণ্ডে বাড়ি ছাড়া প্রবাসীর পরিবার
নোয়াখালী সংবাদদাতা:
নোয়াখালীর সুবর্ণচরে বাড়ির আঙিনায় মাদক সেবনে বাধা দেওয়ায় এক প্রবাসীর বাড়িতে লুটপাট পরবর্তী ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগ করার অভিযোগ পাওয়া গেছে। এ সংক্রান্তে মামলা হলেও এখনো পর্যন্ত আসামিরা গ্রেপ্তার হয়নি। যে কারণে মামলা তুলে নেওয়ার জন্য মৃত্যুর হুমকিতে বাদী রাজিয়া খাতুন (৩৫) এখন সন্তান-সন্ততি নিয়ে বসতভিটা ছেড়ে মানবেতর জীবনযাপন করছেন।
সোমবার (৩০ সেপ্টেম্বর) সকালে এক সংবাদ সম্মেলনে ভয়ংকর সন্ত্রাসী কার্যক্রমের চিত্র তুলে ধরেন ভুক্তভোগী পরিবার। এর আগে, ১৬ সেপ্টেম্বর রাতে নোয়াখালীর সুবর্ণচরে ৭নং চরবাটা ইউনিয়নে ১ নং ওয়ার্ডের হাজিপুর গ্রামের আব্দুল করিম আজাদের বাড়িতে এমন হামলার ঘটনা ঘটে।
মামলার বাদী রাজিয়া খাতুন বলেন, মামলায় বর্ণিত আসামিদের সাথে আমাদের ভূমি সংক্রান্ত বিরোধ দীর্ঘদিনের, তারা অন্যায় ভাবে আমাদের ভূমি গ্রাস করে নিতে চায়। গত ৫আগস্ট হাসিনা সরকার পতনের পর তারা মাথা চাড়া দিয়ে ওঠে। প্রায় প্রতিদিনই তারা দলবল নিয়ে এসে আমাদের বাড়ির আঙিনায় মাদক সেবন করতে থাকে। সেখান থেকে আমাদেরকে অশ্লীল অঙ্গভঙ্গি দিয়ে গালিগালাজ এবং কুরুচিপূর্ণ ইঙ্গিত দিয়ে উত্ত্যক্ত করতে থাকে। এভাবে চলতে থাকলে ১৬ সেপ্টেম্বর সন্ধ্যায় আমি তাদের কুরুচিপূর্ণ ইঙ্গিত ও মাদক সেবনের জন্য প্রতিবাদ করলে তারা আমাদের দিকে তেড়ে আসে। এ সময় তারা আমাদের কাছে ৫ লক্ষ টাকা চাঁদা দাবি করে। আমরা দরজা বন্ধ করে ভিতরে প্রবেশ করলে তারা আমাদের ঘর দরজা কেটে ভাঙচুর করে ভিতরে প্রবেশ করে লুটপাট চালায় এবং লুটপাট পরবর্তী বাড়িতে আগুন জ্বালিয়ে দেয়। কাইয়ুম (৪২), রাশেদ (৩২), আইয়ুব আলী (৪০) গংদের নেতৃত্বে এমন তান্ডব চালায় সন্ত্রাসীরা। প্রাণ বাঁচাতে দিশেহারা হয়ে আমরা বাড়ি থেকে পালিয়ে যাই। সেই থেকে এখন পর্যন্ত আমরা আর বাড়িতে ফিরতে পারিনি।
প্রতিকার চেয়ে চর জব্বর থানায় ২১ জনের নাম উল্লেখ করে মামলা করলেও এখন পর্যন্ত কোন আসামি গ্রেফতার করা হয়নি। যে কারণে আসামিরা এখন আমাকে মৃত্যুর হুমকি দিচ্ছে মামলা প্রত্যাহারের জন্য। এমনকি তারা আমাকে ধরে দেওয়ার জন্য ৫০ হাজার টাকা পুরস্কার ঘোষণা করেছে।
নিরুপায় হয়ে আমি সেনাবাহিনীর কাছেও অভিযোগ দিয়েছি কিন্তু এখনো পর্যন্ত কোন প্রতিকার পাইনি। বিচারহীনতায় আমি নির্যাতিত পরিবার সন্তান সন্ততি নিয়ে বসতভিটা ছাড়া হয়ে এখানে সেখানে মানবেতর জীবনযাপন করছি। এ অবস্থায় আমি সন্ত্রাসীদের আইনের আওতায় এনে সর্বোচ্চ শাস্তি নিশ্চিত করে আমাদের জানমালের নিরাপত্তা দেওয়ার জন্য বিশেষভাবে অনুরোধ করছি।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে নোয়াখালী চর জব্বর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা শাহিন মিয়া জানান, আমি আজকেই এই থানার দায়িত্বভার গ্রহণ করেছি। মামলার বিষয়ে খবর নিয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।