ইবি শিক্ষার্থীদের সাথে নবনিযুক্ত উপাচার্যের মতবিনিময় সভা
ইবি প্রতিনিধি:
শিক্ষা সংস্কার বিষয়ে শিক্ষার্থীদের সাথে মতবিনিময় সভা করেছেন ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের নবনিযুক্ত উপাচার্য প্রফেসর ড. নকীব মোহাম্মদ নসরুল্লাহ। সভায় শিক্ষার্থীদের পক্ষ থেকে ১৪ টি সংস্কার প্রস্তাবনায় প্রায় অর্ধশত দাবি উত্থাপন করা হয়।
সোমবার ( ৩০ সেপ্টেম্বর) বেলা ১২ টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের বীরশেষ্ঠ হামিদুর রহমান মিলনায়তনে প্রায় সহস্রাধিক শিক্ষার্থীর উপস্থিতিতে এ মতবিনিময় সভা অনুষ্ঠিত হয়।
এসময় উপস্থিত ছিলেন নবনিযুক্ত উপাচার্য প্রফেসর ড. নকীব মোহাম্মদ নসরুল্লাহ, অন্তর্বর্তীকালীন প্রশাসনিক ও আর্থিক দায়িত্বপ্রাপ্ত অধ্যাপক ড. আ ব ম ছিদ্দিকুর রহমান আশ্রাফী সহ বিভিন্ন অনুষদের ডিন এবং বিভিন্ন বিভাগের সভাপতি ও শিক্ষক-শিক্ষিকাবৃন্দ।
এসময় শিক্ষার্থীদের পক্ষ থেকে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়ক এস এম সুইট বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রতিটি সেক্টরের সংস্কার প্রস্তাবনা তুলে ধরেন। এসময় ইবি সমন্বয়ক র্যাগিং ও গেস্ট রুম কালচার বন্ধ করা, লেজুরবৃত্তিক ছাত্র-শিক্ষক রাজনীতি বন্ধ, সেশনজট নিরসনে দৃশ্যমান পদক্ষেপ, গবেষণা কার্যক্রম বৃদ্ধি, প্রশাসনিক ভবনে হয়রানি নিরসন, একাডেমিক ক্যালেন্ডার অনুসরণ করে ক্লাসে পরীক্ষা নেওয়া, পরীক্ষার খাতা চ্যালেঞ্জ করার সুযোগ রাখা, কেন্দ্রীয় লাইব্রেরী সপ্তাহে ৭ দিন রাত বারোটা পর্যন্ত খোলা রাখা, বিশ্ববিদ্যালয়কে সম্পূর্ণ আবাসিক বিশ্ববিদ্যালয় রূপান্তর করা, শতভাগ আবাসন নিশ্চিত না হওয়া পর্যন্ত নতুন বিভাগ না খোলা, পরিবহন সমস্যার সমাধান, হলের ইন্টারনেট সুবিধার মান বৃদ্ধি করা, প্রত্যেক সেমিস্টারের ফলাফল ওয়েবসাইটে প্রকাশ করা, শিক্ষার্থীদের অফিসিয়াল ইমেইল প্রদান করা, ক্যাফেটেরিয়া চালু করে খাবারের গুণগত মান নিশ্চিত করা, বহিরাগত চলাচল নিয়ন্ত্রণ করা, কেন্দ্রীয় মসজিদের নির্মাণ কাজ সম্পন্ন করা এবং শিক্ষার্থীদের ল্যাব ও ক্লাসরুম সংকট সমাধানে দৃশ্যমান পদক্ষেপ নেওয়া সহ প্রায় অর্ধ শতাধিক দাবি উপস্থাপন করেন।
সাবেক প্রশাসনিক ও আর্থিক দায়িত্বপ্রাপ্ত অধ্যাপক ড. আ ব ম সিদ্দিকুর রহমান আশ্রাফী বলেন, সুদীর্ঘ ১৬ বছর ফ্যাসিস্ট সরকারের কারণে কথা বলতে পারিনি। এখন উন্মুক্ত জায়গায় আলোচনা করতে পেরে মহান রাব্বুল আলামিনের কাছে শুকরিয়া। বাংলাদেশের স্বাধীনতার পর এটিই দেশের প্রথম বিশ্ববিদ্যালয়। এ বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রথম ব্যাচের শিক্ষার্থী হিসেবে আমি গর্ববোধ করি। ছাত্র জনতার গণঅভ্যুত্থানের কারণে একটা সময় একাডেমিক কার্যক্রম স্থবির থাকায় যে সেশনজটের আশঙ্কা তৈরি হয়েছিলো তা নবনিযুক্ত উপাচার্যের নেতৃত্বে কাটিয়ে উঠতে পারবে বলে আমরা আশাবাদী।
মতবিনিময় সভায় নবনিযুক্ত উপাচার্য অধ্যাপক ড. নকীব মোহাম্মদ নসরুল্লাহ বলেন, শহীদদের রক্তের বিনিময়ে আমরা আজকের এই বাংলাদেশ পেয়েছি এবং আমি এখানকার উপাচার্য হয়েছি। আমার কাজ হবে শহীদদের রক্তের ঋণ পরিশোধ করা। সেজন্য সবাইকে একসাথে নিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়কে এগিয়ে নেয়ার মাধ্যমে তাদের রক্তের ঋণ পরিশোধ করতে হবে।
তিনি আরও বলেন, আজকের শিক্ষার্থীরা যেসব সংস্কারের দাবি তুলে ধরেছেন তাদের প্রত্যেকটা দাবি যৌক্তিক। এখানে উপস্থিত কোনো ডিন বা শিক্ষক তাদের দাবিকে অস্বীকার করতে পারবে না। এখানে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রতিটা সেক্টর সম্পর্কে উপস্থাপন করা হয়েছে। ফলে আমার সংস্কারের কাজ আরও সহজ হয়ে উঠেছে এবং আমাকে নতুন করে ভাবতে হবে না কাজ নিয়ে।
এছাড়াও বলেন, আমি দায়িত্ব পালনের জন্য এসেছি। এখানে আমি দায়িত্ব নিয়েছি তোমাদের জন্য কাজ করার জন্য। আমি তোমাদের আশাহত করবো না। আমি তোমাদেরই ভাইস চ্যান্সেলর। আমি প্রতিদিন তোমাদের মুখ দেখতে চাই। তোমাদের সাথে কথা বলে এই সংস্কার করতে চাই।