শিবপুরে দীর্ঘ এক যুগ পর বিএনপির জনসভা
ভোলা প্রতিনিধি:
ভোলা সদর উপজেলাধীন শিবপুর ইউনিয়নে দীর্ঘ ১ যুগ পর জনসভা করেছে বিএনপি। রবিবার (২৯ ই সেপ্টেম্বর) বিকাল ৪ টায় ইউনিয়ন বিএনপির আয়োজনে রতনপুর মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের মাঠে এ জনসভা অনুষ্ঠিত হয়েছে।
শিবপুর ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি মো. এ কে এম নুর হোসেন হাওলাদার এর সভাপতিত্বে এবং মো. জিয়া উদ্দিন জিয়ার সঞ্চালনায় প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন ভোলা সদর উপজেলা বিএনপির আহ্বায়ক মো. আসিফ আলতাফ। বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন ভোলা সদর উপজেলা বিএনপির সদস্য সচিব হেলাল উদ্দিন, যুগ্ম আহবায়ক মো. রাসেল মাহমুদ।
এসময় অতিথিরা বলেন, আমরা স্বৈরাচার এবং ফ্যাসিবাদের পতন ঘটিয়েছি। কিন্তু গণতন্ত্র এখনো পুনঃপ্রতিষ্ঠা করতে পারিনি। গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠিত হবে নির্বাচিত সরকারের মাধ্যমে।দেশের মানুষ দীর্ঘ ১৬ টি বছর স্বাধীনভাবে ভোটাধিকার প্রয়োগ করতে পারে নি। যখন এ দেশের মানুষ নির্বিঘ্নে ভোট দিতে পারবে, তাদের ভোটে সরকার গঠিত হবে, তখন বুঝতে পারব গণতন্ত্র পুনঃপ্রতিষ্ঠা হয়েছে।” একটি দেশকে উন্নত ও সমৃদ্ধিশালী করতে নির্বাচিত সরকারের কোনো বিকল্প নেই। জনগণের উন্নয়ন জনগণের নির্বাচিত সরকার দ্বারাই সম্ভব। কারণ, জনগণের সরকার হলে জনগণের প্রতি দায়বদ্ধতা থাকে। তাছাড়া জনগণের সরকারের অধিকার প্রতিষ্ঠিত হয় ভোটের মাধ্যমে। তাই যেদিন বাংলাদেশের মানুষের ভোটের অধিকার প্রতিষ্ঠিত হবে, সেদিনই মানুষ তার পূর্ণ স্বাধীনতা ফিরে পাবে।
স্বৈরাচার মুক্ত বাংলাদেশে আকস্মিক ভাবে সৃষ্ট শূন্যতা পূরণের জন্য একটি অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের কোন বিকল্প ছিল না। সঙ্গত কারণে তাঁদের প্রতি আমাদের সমর্থন সেদিনও ছিল, আজও আছে। তাঁদের প্রতি আমাদের আস্থাকে প্রশ্নহীন রাখার চ্যালেঞ্জ তাঁদেরই নিতে হবে। তাই অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রতি অর্পিত দায়িত্ব এবং সেটি যথার্থ ভাবে প্রতিপালনের রোডম্যাপ তাঁদেরই নির্দিষ্ট করতে হবে। সব পরিবর্তন সাধন যেমন তাঁদের পক্ষে সম্ভব নয়, তেমনি এমন দায়িত্বও তাঁদের কাঁধে নেয়া সঙ্গত হবে না, যেটি তাঁরা বহন করতে সক্ষম হবেন না।
জনসভায় আরও উপস্থিত ছিলেন,ইলিশা ইউনিয়ন বিএনপি আহ্বায়ক বাহালুল আলম,চরসামাইয়া ইউনিয়ন বিএনপি নেতা মো. সামছুদ্দীন, সদর উপজেলার বিএনপি নেতা নাজিমুদ্দিন নিক্সন, সাবেক ব্যাংক কর্মকর্তা আলহাজ্ব জনাব মো. বেলায়েত হোসেন হাওলাদার, হিন্দু সম্প্রদায়ের নেতা ডা. উমেশ চন্দ্র দাস,শিবপুর ইউনিয়ন বিএনপির যুগ্ম আহবায়ক মোতাহার হোসেন,সাধারণ সম্পাদক হাদিস মেম্বার,ইউনিয়ন বিএনপি নেতা মাজেদ হাওলাদার,আবদুল হক রাঢ়ী, আল আমিন রাঢ়ী,সদর থানা যুবদলের নেতা ইয়াসির আরাফাত সোহাগ,,যুবদল নেতা মো.জাফর পন্ডিত, মো. যুবরাজ, মো.ফারুক ও জসিম বাঘা এছাড়াও ছাত্রদল,শ্রমিকদল,সেচ্ছাসে বকদলসহ সকল সহযোগী সংগঠনের নেতৃবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।
এসময় তারা আরও বলেন, বাংলাদেশ সিকিম বা ভুটান নয়। অন্য কোনো দেশের প্রেসক্রিপশনে বাংলাদেশ চলবে না। তাই কেউ বাইরে থেকে বাংলাদেশের অভ্যন্তরে অস্থিতিশীল কিছু করতে চাইলে আখেরে তার ফলাফল ভালো হবে না। কোনো তাবেদার দিল্লির গোলামকে বাংলাদেশের জনগণের ওপর আর রাজত্ব করতে দেওয়া হবে না। দেশে এখনও নির্বাচন হয়নি, জনগণের ভোটাধিকার প্রতিষ্ঠা করতে পারি নাই। নির্বাচনের মধ্যে দিয়ে জনগণের অধিকারগুলো প্রতিষ্ঠা হবে। সেখানে দলমত, ধর্ম-বর্ণ নির্বিশেষে সবাইকে বিএনপির পক্ষ থেকে আহ্বান করবো একটি সুষ্ঠু ও অবাধ নির্বাচনের জন্য যেন স্ব-স্ব ক্ষেত্রে অবদান রাখি। যতদ্রুত সম্ভব গণতন্ত্রের সূচনার জন্য একটা নির্বাচন দেবেন। সেই নির্বাচনে সব মানুষের অংশগ্রহণের মধ্যে দিয়ে বাংলাদেশে গণতন্ত্রের নতুন পথচলা শুরু হবে।আওয়ামী লীগের দোসররা এখনো প্রশাসনে রয়েছে। যারা হাসিনাকে রক্ষা করতে গিয়ে সাধারণ মানুষের ওপর গুলি চালিয়েছেন, তারাই ক্ষমতায় রয়ে গেছেন। তাই ফ্যাসিস্ট সরকারের দোসরদের সরকারের বিভিন্ন পদ থেকে অপসারণে অন্তর্বর্তী সরকারের কাছে দাবি জানাচ্ছি। কারণ হত্যাকারীদের বিচার ছাড়া রাষ্ট্রের কোনো সংস্কার সম্ভব নয়।