রাঙ্গামাটিতে ব্যাপক সংঘর্ষে নিহত ১,আহত ৫০ উপরে
পার্বত্য চট্রগ্রাম রাঙ্গামাটি তে সদর আজ সকাল থেকে থেমে থেমে হওয়া পাহাড়ি- বাঙালিদের মধ্যে সংঘর্ষে পুরো শহরে থমথমে অবস্থা বিরাজ করছে। পুড়িয়ে দেওয়া হয়েছে পার্বত্য চট্টগ্রাম আঞ্চলিক পরিষদের কার্যালয়, বনরুপা, দক্ষিণ কালিন্দপুর, বিজন সারনি, উত্তর কালিন্দপুর, হাসপাতাল এলাকার, বৌদ্ধ বিহার, ব্যবসা প্রতিষ্ঠানসহ অন্যন্য অফিস ও বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান। মোটরসাইকেলসহ শতাধিক যানবাহনে আগুন ও ভাঙচুর চালানো হয়েছে।
পরিস্থিতি স্বাভাবিক করতে আজ শুক্রবার ২০ সেপ্টেম্বর দুপুর সাড়ে ১২ :০০ টার দিকে রাঙামাটি শহরে ১৪৪ ধারা জারি করেছে জেলা প্রশাসন। পরবর্তী নির্দেশ না দেয়া পর্যন্ত এ নিষেধাজ্ঞা জারি বহাল থাকবে বলেও জানান জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ মোশারফ হোসেন।
স্থানীয় ও পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, খাগড়াছড়ি ও দিঘিনালায় পাহাড়িদের বাড়িতে হামলার ঘটনার প্রতিবাদে শুক্রবার সকালে রাঙামাটিতে সংঘাত ও বৈষম্যবিরোধী পাহাড়ি ছাত্র আন্দোলন মিছিল বের করে। মিছিলটি বনরুপা বাজারে পৌঁছালে পুরো শহরে গুজব ও উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে। হামলা করা হচ্ছে মসজিদে এমন গুজব ছড়িয়ে পড়লে বাঙালিরা পাহাড়িদের ওপর চড়াও হয়। বনরুপা বাজারে হামলা ও আগুন দেওয়া হয় একাধিক ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে। এরপর পুরো শহরে সংঘর্ষ হয় দফায় দফায়।
এতে বিভিন্ন জায়গায় আহতের খবর পাওয়া গেলেও হাসপাতালে একজনের মরদেহ আনা হয়। চিকিৎসা নিয়েছে ৫৩ জন। এর মধ্যে ১৯ জনকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে জানিয়েছে রাঙামাটি সদর হাসপাতালের আবাসিক চিকিৎসক শওকত আকবর খান। তিনি জানান, নিহত যুবকের নাম এখনো পরিচয় জানা যায়নি।
রাঙামাটি কোতোয়ালি থানার ওসি মোহাম্মদ আলী গণমাধ্যমকে বলেন, পরিস্থিতি এখন নিয়ন্ত্রণে আছে। তবে গুজব ছড়ানো হচ্ছে। মানুষের মধ্যে আতঙ্ক বিরাজ করছে, পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে সেনাবাহিনী মাঠে আছে।
টিভিতে গত বুধবার (১৮ সেপ্টেম্বর) সকালে খাগড়াছড়ির পানখাইয়া এলাকায় নিউজিল্যান্ডের রাস্তায় মামুন নামে একজনের মরদেহ পাওয়া যায় পুলিশের তথ্যমতে, মামুন মোটরসাইকেল চুরি করে দ্রুতগতিতে পালাতে গিয়ে বিদ্যুতের খুঁটিতে ধাক্কা লেগে পড়ে যায়। এ সময় তাঁকে লোকজন গণপিটুনি দিলে ঘটনাস্থলেই মামুন মারা যায়। খাগড়াছড়ি থানা পুলিশ গণমাধ্যমকে জানালে, মামুনের বিরুদ্ধে ১৪টি চুরির মামলা ও ২টি মাদক মামলা ছিল।
মামুনের মৃত্যুর ঘটনার প্রতিবাদে বিক্ষোভ মিছিল বের করে দীঘিনালা ডিগ্রি কলেজের শিক্ষার্থীরা। বিক্ষোভ মিছিলটি লারমা স্কয়ারের দিকে যাওয়ার সময় সংঘর্ষের সূত্রপাত হয়। এক পর্যায়ে লারমা স্কয়ারে দোকানপাট ও বসত বাড়িতে আগুন দেয় হামলাকারীরা এ ঘটনায় মারা গেছেন ৩ জন।
এই সংঘর্ষের প্রভাব পড়েছে রাঙামাটি জেলাতেও।