একই দিনে ভেঙ্গে পড়লো বেত্রবতী নদীর ৩ সেতু; ভোগান্তিতে ৬ ইউনিয়ন ও পৌরসভার লক্ষাধিক মানুষ!
সাতক্ষীরা :
টানা কয়েকদিনের ভারী বর্ষণে দেশের বিভিন্ন স্থানে নিন্ম অঞ্চল প্লাবিত হয়ে থাকে। যশোরের, ঝিকরগাছা, নাভারন, কেশবপুর, মনিরামপুর এলাকার বৃষ্টির পানি সাতক্ষীরার কলারোয়া উপজেলার বেত্রবতী নদী দিয়ে প্রবাহিত হতে থাকলে সাম্প্রতি ঐ সব পানির তীব্র স্রোতের কারনে সাতক্ষীরার কলারোয়ায় একই দিনে ভেঙ্গে গেছে বেত্রবতী নদীর ৩টি সেতু।
এরমধ্যে একটি বেইলি ব্রিজ ও অপর ২টি বাঁশ ও কাঠের তৈরি সেতু। বৃহস্পতিবার সকালে ব্রিজগুলো ভেঙে পড়ার ঘটনা ঘটে।
কলারোয়া উপজেলা সদর ও পৌর সদরের সাথে পৌরসভার ৩টি ওয়ার্ড ও উপজেলার ১২টি ইউনিয়নের মধ্যে ৬ ইউনিয়নের একেবারে যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে। এতে করে ভোগান্তিতে পড়েছে প্রায় লক্ষাধিক মানুষ।
একই সাথে কলারোয়ার উপজেলার সাথে যশোরের কেশবপুর, মনিরামপুর ও ঝিকরগাছা উপজেলা, সাতক্ষীরার তালা সাথেও সড়ক যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে গেছে অনেক অংশে ।
কলারোয়া পৌরসভা এলাকার তোফায়েল বলেন, গত বছরের আগস্টে উপজেলা ও পৌর সদরের প্রাণকেন্দ্র পশুহাট মোড়ের বেত্রাবতী নদীর উপর পাকা ব্রিজের নির্মাণকাজ শুরু হয়। এরপর ৮ মাস বন্ধ থাকার পর চলতি বছরের মে মাসে আবার কাজ শুরু হলে পুরানো ব্রিজটি ভেঙে ফেলে যাতায়াতের বিকল্প হিসেবে পাশে লোহার বেইলি ব্রিজ স্থাপন করা হয়। সেই বিকল্প বেইলি ব্রিজটিই হয়ে পড়ে উপজেলার জালালাবাদ, বাটরা, কয়লাসহ ৬ ইউনিয়ন ও পৌরসভার ৩ ওয়ার্ডের মানুষের একমাত্র যাতায়াতের মাধ্যম। কিন্তু ইঠাৎ করে পানির তোড়ে বিকল্প ব্রিজটি ধ্বসে যেয়ে রাস্তা থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে গেছে। এতে করে যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে এতে ভোগান্তিতে পোহাতে হচ্ছে মানুষদের।
কলারোয়া বাজারে কাপড় ব্যবসায়ী কবির বলেন, পৌরসদরের কাঁচা ও মাছ বাজার সংলগ্ন কাঠ ও বাঁশ দিয়ে নির্মিত সাঁকোটি কিছু দিন আগে ভেঙ্গে যায়। সম্প্রতি সেটা যাতায়াতের উপযোগী করা হয়। কিন্তু বৃহষ্পতিবার সকালে বেত্রবতী নদীর পানির ব্যাপক তোড়ে কাঠের সাঁকোটি মাঝখান থেকে ভেঙ্গে দু’খন্ড হয়ে যায়। এতে যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে সাঁকো ব্যবহারকারী দু’পাড়ের মানুষেরা।
গোপীনাথপুর এলাকার শাহাজাহান আলী বলেন, পৌরসভার গোপিনাথপুর তারকনন্দী নামক স্থানের কাঠের বড় সেতুটির মাঝ বরাবর ভেঙে যেয়ে যানবাহন চলাচল বন্ধ হয়ে গেছে।
কলারোয়া পৌরসভা সূত্রে জানা গেছে, কলারোয়া উপজেলার বুক চিরে বয়ে যাওয়া বেত্রবতী নদীর উভয় পাশে ৬টি করে মোট ১২টি ইউনিয়ন রয়েছে। এতে পূর্ব পাশের ৬টি ইউনিয়ন ও পৌরসভার ৩টি ওয়ার্ডের সাথে পশ্চিম পাশের কলারোয়া উপজেলা সদর ও পৌর সদরসহ ৬টি ইউনিয়ন ও পৌরসভার ৬টি ওয়ার্ডের যোগাযোগ বহুলাংশে বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে। ফলে নদীর দু’ধারে মানুষ এক এলাকায় সাথে অন্য এলাকায় সহজে যোগাযোগ করতে পারছেনা।
এখন নদী পারাপারে ওই অঞ্চলের সড়ক যোগাযোগের একমাত্র পথ উপজেলা সদর থেকে প্রায় ৩ কিলোমিটার দূরে পৌরসভাধীন মুরারীকাটি হাইস্কুলের পাশে অবস্থিত পাকা ব্রিজটি।
মরারীকাটি এলাকার সজীব গাইন বলেন, আগে বেলিব্রীজটি দিয়ে ৫ মিনিটে সহজে কলারোয়া বাজারে পৌঁছানো যেতো। কিন্তু এটি ভেঙে পড়ায় ৩০-৪৫ মিনিট বাজারে যেতে সময় লাগছে এতে করে অতিরিক্ত টাকা খরচ হচ্ছে।
সেতু মেরামতের বিষয়ে পৌর নির্বাহী কর্মকর্তা তুষার কান্তি দাশ জানান, আমরা কাঠের সেতু দুটো ব্যবহার উপযোগী করার উদ্যোগ নিচ্ছি। এক দু’দিনের মধ্যে কাঠের সেতু দুটো সংস্কার করা হবে।
এ বিষয়ে পৌরসভার সহকারী প্রকৌশলী শহিদুল ইসলাম জানান, বেইলি ব্রিজটি সওজের আওতাধীন। আমরা সওজ কর্তৃপক্ষকে জানিয়েছি আশা করি তারা দুরত্ব সময়ে ব্যবস্থা নিবে।