অবহেলিত জনগোষ্ঠীর স্বপ্ন বাস্তবায়নে একজন নিবেদিত প্রাণ সমাজসেবক আজিজুর
সরাইল (ব্রাহ্মণবাড়িয়া) প্রতিনিধি:
সমাজে অবহেলিত জনগোষ্ঠীর স্বপ্ন বাস্তবায়নে একজন নিবেদিত সমাজসেবকের নাম আজিজুর রহমান লিটন। বাংলাদেশের প্রত্যন্ত অঞ্চলের উন্নয়নের ক্ষেত্রে যে কয়জন নিবেদিতপ্রাণ ব্যক্তি অসামান্য অবদান রেখে চলেছেন, তাদের মধ্যে অন্যতম আজিজুর রহমান লিটন।
তিনি শুধু একজন সফল ব্যবসায়ীই নয়, তিনি একজন জনপ্রতিনিধি, সমাজসেবক ও ভবিষ্যতের স্বপ্নদ্রষ্টা হিসেবে পরিচিত। তার পুরো কর্মজীবন যেন একটিমাত্র লক্ষ্যকে কেন্দ্র করে আবর্তিত হয়েছে। তিনি অবহেলিত ও পিছিয়ে পড়া জনগোষ্ঠীর উন্নয়ন ও তাদের স্বপ্নের বাস্তবায়নের লক্ষে কাজ করে যাচ্ছেন।
তিনি ব্রাহ্মণবাড়িয়ার সদর উপজেলার সুহিলপুর গ্রামের সম্ভ্রান্ত মুসলিম পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন। স্থানীয় বিদ্যালয়ে প্রাথমিক ও মাধ্যমিক শিক্ষা সম্পন্ন করেন। এরপর তিনি উচ্চশিক্ষার জন্য ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হন। সেখানে রাষ্ট্রবিজ্ঞানে অনার্স মাস্টার্স ডিগ্রি সম্পন্ন করেন। তিনি শিক্ষার আলোয় নিজেকে আলোকিত করেন। রাষ্ট্রবিজ্ঞানে তার অর্জিত জ্ঞান কেবল একাডেমিক সাফল্যের মধ্যে সীমাবদ্ধ থাকেনি; বরং এটি তার নেতৃত্ব, দূরদর্শিতা ও সমাজের প্রতি দায়বদ্ধতার ভিত্তি হিসেবে কাজ করেছে।
শিক্ষা জীবন শেষে আজিজুর রহমান লিটন ব্যবসা জগতে প্রবেশ করেন। তার পিতা মরহুম জিল্লুর রহমান ছিলেন একজন প্রতিষ্ঠিত ব্যবসায়ী ও সুহিলপুর ইউনিয়ন পরিষদের একাধিকবার নির্বাচিত চেয়ারম্যান। পিতার দেখানো পথে হেঁটে তিনি নিজেও সফল ব্যবসায়ী হিসেবে প্রতিষ্ঠিত হন। ব্যবসায়িক ক্ষেত্রে তার সাফল্য শুধু তার ব্যক্তিগত উন্নয়নেই অবদান রাখেনি, এই সফলতা তাকে সমাজের অবহেলিত জনগোষ্ঠীর উন্নয়নে সাহায্য করেছে।
আজিজুর রহমান লিটনের নেতৃত্বগুণ প্রথম প্রকাশ পায় যখন তিনি ৩নং সুহিলপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান হিসেবে নির্বাচিত হন। চেয়ারম্যান থাকাকালে তিনি ইউনিয়নের উন্নয়নে উল্লেখযোগ্য পদক্ষেপ গ্রহণ করেন। ২০১৫ সালে তিনি সুহিলপুর ইউনিয়ন পরিষদ কমপ্লেক্স ভবন নির্মাণের জন্য জমি ক্রয় করেন তৎকালীন জেলা প্রশাসক ড. মোহাম্মদ মোশারফ হোসেনের কাছে আবেদন করেন ভবন নির্মাণের জন্য। তার আবেদনের প্রেক্ষিতে টেন্ডার আহ্বান করা হয়। এভাবে তিনি ইউনিয়নের অবকাঠামোগত উন্নয়নের সূচনা করেন, যা আজও মানুষের মনের ভিতর রয়েছে।
আজিজুর রহমান লিটনের জনসেবা শুধু তার নেতৃত্বকালেই সীমাবদ্ধ নয়। তার পিতা মরহুম জিল্লুর রহমানও সমাজের জন্য অপরিসীম অবদান রেখে গেছেন। তিনি সুহিলপুর ইউনিয়নে জমিদান করেন, প্রাথমিক বিদ্যালয়, জিল্লুর রহমান উচ্চ বিদ্যালয়, সুহিলপুর দাখিল মাদ্রাসার প্রতিষ্ঠা করেন। এছাড়াও, তিনি সুহিলপুর তফসির মাঠ, খেলার মাঠ, গরুর বাজারে জমিদানসহ বিভিন্ন দাতব্য প্রতিষ্ঠানে সহায়তা প্রদান করেছেন। সুহিলপুর ইউনিয়নের উন্নয়নের প্রতিটি দিকেই এই পরিবারের অবদান রয়েছে। তার পিতা শুধু ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যানই ছিলেন না, তিনি ছিলেন সুহিলপুর ইউনিয়নের প্রেসিডেন্ট হিসেবে পরিচিত। তার সময়কালেই এই ইউনিয়নের উন্নয়ন শুরু হয়। এরপর আজিজুর রহমান লিটন সেই উন্নয়নকে আরও এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছেন।
জনপ্রতিনিধি ও ব্যবসায়ী হিসেবে সফলতার পাশাপাশি, আজিজুর রহমান লিটন সামাজিক সেবায়ও উল্লেখযোগ্য ভূমিকা পালন করেছেন। তিনি ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আলোকিত আইডিয়াল ওপেন স্কাউট গ্রুপের সভাপতি হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন। তার নেতৃত্বে এই গ্রুপটি স্থানীয় ও জাতীয় পর্যায়ে অসংখ্য স্কাউট কার্যক্রম পরিচালনা করে আসছে। স্কাউট কার্যক্রমের মাধ্যমে তিনি তরুণ প্রজন্মকে সমাজসেবায় উদ্বুদ্ধ করছেন, তাদের নৈতিক ও মানসিক উন্নয়নের জন্য কাজ করে যাচ্ছেন। এছাড়াও, তিনি বাংলাদেশ স্কাউটস ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা রোভার এর নির্বাহী কমিটির গ্রুপ সভাপতি প্রতিনিধি হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন। বাংলাদেশ স্কাউটস-এর ফাউন্ডেশন বিভাগের (সিলভার) মেম্বার হয়েছেন।
আজিজুর রহমান লিটন শুধু অতীতের সাফল্যেই সীমাবদ্ধ নন, বরং তিনি ভবিষ্যতের জন্যও নতুন নতুন পরিকল্পনা হাতে নিয়েছেন। তিনি তিতাস নদীর পূর্বে অবস্থিত গোপীনাথপুর, কাশিনগর, সীতানগর, নমপাড়া, শিমাইকান্দি পূর্ব এই পাঁচটি গ্রামের জন্য একটি হাই স্কুল ও একটি কমিউনিটি ক্লিনিক প্রতিষ্ঠার স্বপ্ন দেখছেন। তার লক্ষ্য হলো এই এলাকাগুলোতে শিক্ষাব্যবস্থা ও স্বাস্থ্যসেবার উন্নয়ন, যা স্থানীয় জনগণের জীবনযাত্রার মান উন্নয়নে সহায়ক হবে।
আজিজুর রহমান লিটনের জীবন ও কর্ম আমাদের সামনে এক উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত স্থাপন করে। তার শিক্ষা, নেতৃত্ব, জনসেবা তাকে একজন সমাজের প্রেরণাদায়ী ব্যক্তিত্ব হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করেছে। অবহেলিত জনগোষ্ঠীর স্বপ্ন বাস্তবায়নে তার অবদান অনস্বীকার্য। তিনি শুধু একজন সফল ব্যবসায়ী ও জনপ্রতিনিধি নন, তিনি একজন মানবতাবাদী নেতা, যিনি সমাজের উন্নয়নের জন্য নিজের জীবনকে উৎসর্গ করেছেন।
তার পিতার দেখানো পথ অনুসরণ করে তিনি সমাজের কল্যাণে কাজ করে যাচ্ছেন, যা আমাদের সকলের জন্য অনুপ্রেরণার উৎস। তার নেতৃত্বে অবহেলিত জনগোষ্ঠী আজ নতুন আশার আলো দেখতে পাচ্ছে, তাদের স্বপ্ন বাস্তবায়নে এগিয়ে যাচ্ছে। সমাজের প্রতি তার এই অবদান চিরকাল স্মরণীয় হয়ে থাকবে, আমাদের সকলের উচিত তার দেখানো পথ অনুসরণ করে সমাজের কল্যাণে নিজেদের নিয়োজিত করা।
আজিজুর রহমান লিটনের মতো মানুষেরা আমাদের সমাজের আলো, যারা অবহেলিত ও পিছিয়ে পড়া জনগোষ্ঠীর জন্য নিঃস্বার্থভাবে কাজ করেন। তাদের অবদান কখনো ভুলা যাবে না। তার দেখানো পথ অনুসরণ করলে আমাদের সমাজ আরও সমৃদ্ধ হবে, আমাদের সমাজে সমতা ও মানবতার জয়গান হবে।