শিরোনাম
কালীগঞ্জে পৌষ সংক্রান্তির ঐতিহ্যবাহী মাছের মেলা অনুষ্ঠিত   » «    ফ‍্যাসিবা আ’ওয়ামী সরকারের সকল মামলায় খালাস “বাবর” মদনে আনন্দ মিছিল   » «    দৌলতপুরে ইউসুফ হত্যা মামলার প্রধান আসামি এলমেচ গ্রেফতার   » «    ভারত যাওয়ার পথে ইডেন ছাত্রলীগ নেত্রীসহ গ্রেফতার ২   » «    সবজিতে স্বস্তি ফিরলেও চড়া মাছ-মুরগি ও চালের বাজার   » «   

গোপনে পুর্বাচলে ৬০ কাঠা জমি বরাদ্ধ নেন শেখ হাসিনা

 

নিজের দিকে তো তাকাইনি, নিজের ছেলে মেয়ের জন্য তো কিছু করিনি। যেটুকু করেছি এই দেশের মানুষের জন্য এবং নিজেকে অসহায় এবং নিঃস্ব এইসব বলে সভা-সমাবেশে রাজনৈতিক বক্তব্য দিলেও শেখ হাসিনা গোপনে নিজের এবং পরিবারের নামে ৬০ কাঠার প্লট বরাদ্দ নেন।

রাজধানীর পূর্বাচলে রাজউকের সংরক্ষিত প্লট থেকে ছেলে সজীব ওয়াজেদ জয়, মেয়ে সায়মা ওয়াজেদ পুতুল, ছোট বোন শেখ রেহানা ও তার দুই ছেলে-মেয়েসহ মোট ৬ জনের নামে ১০ কাঠা করে এ প্লট বরাদ্দ দেওয়া হয়। ২০২২ সালের ৩ আগস্ট প্লটের বরাদ্দপত্র ইস্যু করে রাজউক। তখন সংস্থাটির চেয়ারম্যান ছিলেন আনিসুর রহমান। পুরো প্রক্রিয়াটি করা হয় অত্যন্ত গোপনীয়তার সঙ্গে।

 শেখ হাসিনার বাসভবন ধানমন্ডির ৫৪ সুধা সদনের ঠিকানায় বরাদ্দপত্র পাঠানো হয়। সম্প্রতি রাজউকে গিয়ে দেখা যায়, রেকর্ডরুমে শেখ হাসিনা ও তার পরিবারের সদস্যদের ফাইলগুলো বিশেষ চিহ্ন দিয়ে রাখা হয়েছে। হাসিনার প্লট বরাদ্দের ফাইলের ওপর বড় ইংরেজি হরফে লেখা রয়েছে ভি-৩, পাতা ১৪১। ফাইলে শেখ হাসিনার স্বাক্ষরযুক্ত আবেদনপত্রের কপি, বরাদ্দপত্র ও জাতীয় পরিচয়পত্রের কপিসহ অন্যান্য কাগজপত্র রয়েছে।

রাজনৈতিক বিবেচনায় সরকারের ১৩/এ ধারার ক্ষমতাবলে তাদের প্লট দেওয়া হয়। ২০২২ সালে তারা প্লট বুঝে পান। পরে বিষয়টি রাষ্ট্রীয় অতি গোপনীয় বিষয় হিসাবে চিহ্নিত করা হয়। ফলে হাতেগোনা কয়েকজন ছাড়া খোদ রাজউকেরই অনেকে এ বিষয়ে তেমন কিছুই জানেন না। হাসিনা ও তার পরিবারের সদস্যরা প্রত্যেকে সর্বোচ্চ ১০ কাঠা আয়তনের প্লট নিয়েছেন।

হাসিনার পতনের পর এ সংক্রান্ত প্লট বরাদ্দের ফাইল রাজউকের রেকর্ড শাখা থেকে সরিয়ে অন্যত্র লুকিয়ে ফেলা হয়। পরে চেয়ারম্যানের ড্রয়ারে ফাইল রয়েছে এমন খবরে রাজউকে ক্ষোভ-অসন্তোষ দেখা দেয়। সম্প্রতি কর্মকর্তা-কর্মচারীদের দাবির মুখে এ সংক্রান্ত ৬টি ফাইল পুনরায় রেকর্ডরুমে ফেরত পাঠানো হয়েছে। বর্তমানে চুরি বা নথি হারানোর শঙ্কায় সবকটি ফাইল বিশেষ নজরদারিতে রাখা হয়েছে।

সংশ্লিষ্টরা বলছেন, খোদ সরকারপ্রধানের নামে প্লট বরাদ্দের ঘটনা জানাজানি হলে রাজনৈতিক ইস্যু তৈরির শঙ্কা ছিল। এ কারণে বিষয়টি রাষ্ট্রীয় অতি গোপনীয় বিষয় হিসাবে চিহ্নিত করা হয়। রাজউকের সংশ্লিষ্ট কতিপয় কর্মকর্তা ছাড়া এ বিষয়ে অন্য কেউ তেমন কিছুই টের পাননি। এমনকি সরকার পতনের পরও এ সংক্রান্ত নথি তড়িঘড়ি লুকিয়ে ফেলা হয়। এ নিয়ে রাজউকের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের অনেকে বিক্ষুব্ধ হয়ে ওঠেন।

এক কর্মকর্তা বলেন, হাসিনা-রেহানার ফাইল চেয়ারম্যানের দপ্তরে লুকিয়ে রাখা হয়েছে এমন খবর পেয়ে অনেকে বিক্ষোভ করেন। দ্রুততম সময়ে সব নথি যথাস্থানে ফেরত দেওয়ার দাবি তোলেন তারা।
একপর্যায়ে গত সপ্তাহে চেয়ারম্যানের দপ্তর থেকে নথিসহ সংশ্লিষ্ট ৬টি ফাইল পুনরায় রেকর্ডরুমে পাঠানো হয়। এরপর থেকে ফাইলগুলো বিশেষ নজরদারির মধ্যে রাখা হয়েছে।

যারা এমন বৈষম্যমূলকভাবে প্লট বরাদ্দ নিয়েছেন মূল দায়টা তাদের। তবে রাজউকের সংশ্লিষ্ট যারা এ প্রক্রিয়ার সঙ্গে যুক্ত ছিলেন তারাও দায় এড়াতে পারেন না। কারণ অবৈধ নির্দেশ এলেই তারা কেন তা প্রতিপালন করবেন।

রাজউকের সংরক্ষিত প্লটে ২০১৮ থেকে ২০২১ সালের মধ্যে ২৮৫ জনকে জমি বরাদ্দ দেওয়া হয়। এর মধ্যে ১৪৯টি প্লটই পান আওয়ামী লীগের সংসদ সদস্য, উচ্চ পর্যায়ের আমলা, ছাত্রলীগ ও মহিলা আওয়ামী লীগ নেতারা।

সংবাদটি ভালো লাগলে শেয়ার করুন
বিষয়: * গোপনে পুর্বাচলে ৬০ কাঠা জমি বরাদ্ধ নেন শেখ হাসিনা
সাম্প্রতিক সংবাদ