রক্ষকই যখন ভক্ষকের ভূমিকায়”
বরিশালের সমবায় ব্যাংকের সম্পত্তিতে কর্মকর্তাদের ভুয়া চুক্তিতে বহুতল ভবন নির্মাণ করেছে – নাজেমস বিরিয়ানী।
বরিশাল বিভাগীয় সমবায় অধিদপ্তরের তিন কর্মকর্তা মিলে অবৈধভাবে সমবয় ব্যাংক লিমিটেডের সম্পত্তিতে নাজেমস্ বিরিয়ানীর কাছে মোটা অংকের উৎকোচের মাধ্যমে তিন তলা ভবন নির্মাণের ব্যবস্থা করিয়ে দিয়েছেন বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। সূত্র থেকে জানা যায়, এক সময়ের প্রভাবশালী আওয়ামীলীগ নেতা নীরব হোসেন টুটুল কে সমবায় ব্যাংক লিমিটেডের সম্পত্তির ক্রয় -বিক্রয় কমিটির অহবায়ক করে ২০১৬ সালের চুক্তিকে ২০২৪ সালে নোটারি পাবলিক করে জনসম্মুখে প্রদর্শন করেন। চুক্তি অনুযায়ী নাজেমস্ বিরিয়ানি কোটি টাকা ব্যয় করে তিনতলা ভবন নির্মাণ করে ব্যবসা চালিয়ে আসছে।
স্থানীয়রা মন্তব্য করে বলেন ৬৪ লক্ষ টাকা ব্যাংকের কাছে জমানাত রেখে
পাঁচ বছরের মেয়াদে নাজেমস্ বিরিয়ানি হাউজের নিজস্ব অর্থায়নে তিনতলা ভবন করে ব্যবসা করার আসল রহস্য কি? এ বিষয়ে স্থানীয়রা বলেন সমবায় অধিদপ্তরের দুর্নীতিবাজ কর্মকর্তাদের প্রত্যক্ষভাবে জড়িত হয়ে নাজেমস্ বিরিয়ানী হাউসকে পাকাপোক্ত দখলের ব্যবস্থা করে দেন। তিনি আরো বলেন শুধুমাত্র ব্যাংকের ওই সম্পত্তি আত্মসাৎ এর উদ্দেশ্যেই মাত্র পাঁচ বছরের চুক্তিতেই তিনতলা ভবন করেন নাজেমস্ বিরিয়ানি হাউস । তাদের তথাকথিত ভুয়া চুক্তিতে নাজেমস বিরিয়ানি হাউজের পাঁচ বছর মেয়াদ শেষ হলে নাজেমস্ অর্থায়নে নির্মিত ভবনের কি হবে এ বিষয় কোন উল্লেখ করা হয়নি। এতেই বোঝা যাচ্ছে সমবয় অধিদপ্তরের ওই তিন কর্মকর্তা সুকৌশলে নাজেমস্ বিরিয়ানি হাউজের মালিক ফরিদুর রহমান রেজাকে সম্পত্তির স্থায়ী মালিক বানিয়ে দেন। নাজেমস্ বিরিয়ানি হাউজের নিজস্ব অর্থায়নে তিন তলা ভবন নির্মাণের চুক্তিতে ৪০ হাজার টাকা মাসিক ভাড়া ও ৬৪ লক্ষ টাকা জামানত ধার্য করা হয়, এ থেকে জামাতের অর্থ থেকে বিশ হাজার টাকা কাটা হবে ভাড়াথেকে বাকি ২০ হাজার টাকা নগদ প্রদান করবে ব্যাংকে তাহলে কয়েক কোটি টাকা বিনিয়োগ করে যে ভবন নির্মাণ করা হয়েছে সে অর্থের বিষয় জন মনে প্রশ্ন ঘুরপাক খাচ্ছে।
নাজেমস্ বিরিয়ানীর স্বত্বাধিকারী মোহাম্মদ ফরিদুর রেজা কে কয়েকবার মোবাইলে ফোন দিলে তিনি ফোন রিসিভ করেননি। সমবায় ব্যাংক লিমিটেডের জমিতে গত ২০১৬ সালের ১ জুন তথাকথিত ব্যবস্থা কমিটির মাধ্যমে পাঁচ বছরের মেয়াদে ৭টি স্টাল একটি রান্নাঘরের চুক্তি করা হলে ২০১৯ সালের ৩০ জুন চুক্তির মেয়াদ উত্তীর্ণ হয়ে যায়।
নাজেমস্ বিরিয়ানীর কাছ থেকে বরিশাল বিভাগীয় সমবায় অধিদপ্তরের যুগ্ন নিবন্ধক মুহাম্মাদ আব্দুল্লাহ আল মামুন, উপনিবন্ধক প্রশাসন মোহাম্মাদ মোস্তফা ও উপনিবন্ধক বিচার মোঃ রবিউল ইসলাম মোটা অংকের উৎকোচ এর বিনিময়ে ব্যাংকের জমিতে ভুয়া নতুন একটি চুক্তি সম্পাদন করে নাজেমস্ বিরানির মালিক ফরিদুর রহমান রেজার অভিযোগ রয়েছে । সমবায় ব্যাংক লিমিটেডের সদস্যরা জানান ব্যাংকের স্বার্থ জলাঞ্জলি দিয়ে তিন কর্মকর্তা ব্যক্তিগত ভাবে লাভবানের উদ্দেশ্যে নাজেমস্ বিরিয়ানি হাউজকে তিন তলা ভবনসহ দখলের ব্যবস্থা করে দেন। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক সমবায় ব্যাংক লিমিটেডের একজন সদস্য জানান, শুধুমাত্র তিন কর্মকর্তার ব্যক্তিগত স্বার্থ হাসিলের উদ্দেশ্যে ব্যাংকের বিরুদ্ধে এ ধরনের একটি আত্মঘাতী সিদ্ধান্ত নিয়েছেন।
তিনি আরো জানান নাজেমস্ বিরিয়ানি হাউজে মালিক রেজার সাথে বরিশাল সমবায় ব্যাংকের এমন কি স্বার্থ রয়েছে যে ৯ বছর পূর্বে নাজেমস্ বিরিয়ানি হাউজকে তাদের অর্থায়নে তিন তলা বিল্ডিং করে ব্যবসা পরিচালনা করতে সুযোগ করে দেওয়া।
এমন কি এ বিষয়টি ধামাচাপা দেওয়ার উদ্দেশ্যে পূর্বের নয় বছর চুক্তিকে কৌশলে বাদ রেখে ২০২৪ সালের চুক্তি করে মোটা অংকের অর্থ হাতিয়ে নেন এই তিন কর্মকর্তা ।
এ জেন রক্ষকই ভক্ষক?
সদস্যরা এ বিষয়ে একটি উচ্চ পর্যায়ের তদন্ত কমিটি গঠন আহ্বান জানান। এতে আসল রহস্য বেরিয়ে আসবে। অবৈধ চুক্তির বিষয়ে যুগ্ন-নিবন্ধক মুহাম্মদ আব্দুল্লাহ আল মামুনের
এর সাথে মোবাইল ফোনে যোগাযোগের চেষ্টা করলে তিনি মোবাইল ফোন রিসিভ করেননি। এ বিষয়ে ব্যাংকের বর্তমান এডহক কমিটির আহবায়ক ও জেলা সমবায় কার্যালয়ের উপ -সহকারি নিবন্ধন মোঃ আমিনুল ইসলামের কাছে জানতে চাইলে, তিনি জানান সমবায় ব্যাংকের সম্পত্তিতে নাজেমস্ বিরানি হাউস কিভাবে তিন তলা বিল্ডিং করেছে আমার জানা নেই। যে চুক্তিটি প্রদর্শিত হয়েছে সেটি আমার আমলে নয়। বিষয়টি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপ মধ্যস্থতার মাধ্যমে হয়তো ভবন নির্মাণ হয়েছে, তার কোন নথিপত্র এই মুহূর্তে আমার কাছে ।