গুমের শিকার ব্যক্তিবর্গের স্মরণে আন্তর্জাতিক দিবস উপলক্ষে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল বাণী দিয়েছেন
গুমের শিকার ব্যক্তিবর্গের স্মরণে আন্তর্জাতিক দিবস উপলক্ষে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বাণী দিয়েছেন
বাণী
বিশ্বজুড়ে বিভিন্ন সময়ে গুম হয়ে যাওয়া ব্যক্তিদের স্মরণে ৩০ আগস্ট গুমের শিকার ব্যক্তি-বর্গের আন্তর্জাতিক দিবস।
২০১১ সাল থেকে অত্যন্ত গুরুত্ব সহকারে দিবসটি পালিত হয়ে আসছে।
“৩০ আগস্ট গুমের শিকার ব্যক্তিবর্গের স্মরণে আন্তর্জাতিক গুম দিবস উপলক্ষে আমি অদৃশ্য হওয়া মানুষের জন্য উদ্বেগ প্রকাশ করছি। তাদের পরিবারের প্রতি জানাচ্ছি আন্তরিক সমবেদনা। স্বৈরাচারি সরকার নিরাপত্তা রক্ষার অজুহাতে রাজনৈতিক প্রতিপক্ষকে শত্রু হিসেবে চিহ্নিত করে গুম করে। শেখ হাসিনার দু:শাসন ছিলো গুম ও বিচারবর্হিভূত হত্যার মতো মানবতাবিরোধী হিং¯্রতায় পরিপূর্ণ। পতনের পূর্বে আওয়ামী আমলে বাংলাদেশে গুমের আতঙ্ক ছিলো। দুঃশাসন থেকে উৎপন্ন হয় গুম ও বিচার বহির্ভূত হত্যার মতো মানবতা বিরোধী হিং¯্রতা। মূলত স্বৈরাচারি সরকারের হাতেই গুম হয় সবচেয়ে বেশি। আইন প্রয়োগকারী সংস্থাগুলোকে বিরোধী দলের প্রতিবাদী নেতাকর্মীদের তুলে নিয়ে গিয়ে অদৃশ্য করা ছিলো আওয়ামী শাসনের অনুসঙ্গ। এরা বিরোধী দল ও মতের মানুষদের অল্পদিন অথবা দীর্ঘদিন কিংবা চিরদিনের জন্যে নিখোঁজ করে দেয়। প্রায় দেড় দশক ধরে ৭০০ এর অধিক মানুষকে গুম করা হয়েছে। সংসদ সদস্য এম ইলিয়াস আলী, সাইফুল ইসলাম হিরু ও চৌধুরী আলম, সুমন, জাকিরসহ অসংখ্য মানুষ আজও নিখোঁজ রয়েছে। তাদের পরিবারে চলছে আহাজারি ও আর্তনাদ। জবাবদিহীমূলক সরকার থাকলে গুমের মতো মানবতাবিরোধী কাজ করা সম্ভব হতো না এবং সকল নাগরিক নিরাপদে বসবাস করতো। গুম হওয়া মানুষগুলোর বেদনার্ত পরিবার এখনও পথ চেয়ে বসে আছে প্রিয়জনদের ফিরে আসার সম্ভাবনায়। রাষ্ট্র সমাজে মানুষের মধ্যে নিরাপত্তাহীনতার বোধ সৃষ্টির জন্য গুমকে কৌশল হিসেবে ব্যবহার করে ফ্যাসিস্ট শাসকেরা। মূল লক্ষ্য বিরোধী রাজনীতি ও বিরোধী কন্ঠকে নির্মূল করা। গুমের অব্যাহত পরিস্থিতিতে দেশে সৃষ্টি হয়েছিলো এক ভয়ঙ্কর নৈরাজ্য। জনসমর্থনহীন ও ভোটারবিহীন সরকার গুমকে টিকে থাকার অবলম্বন করেছিলো। এই ধারা বয়ে চললে বাংলাদেশে অরাজকতার ঘন অন্ধকারে ডুবে গিয়ে মানবতাহীন এক নিষ্ঠুর শাসন প্রতিষ্ঠিত থাকতো।
অবিলম্বে গুমের শিকার সব নিখোঁজ ব্যাক্তিকে খুঁজে বের করে তাদের পরিবারের কাছে ফিরিয়ে দিতে সর্বাত্মক উদ্যোগ গ্রহণের জন্য অন্তবর্তীকালীন সরকারের প্রতি আহ্বান জানাচ্ছি। রাষ্ট্র কর্তৃক গুমের মতো অপরাধের সঙ্গে যারা জড়িত সে সমস্ত ব্যক্তি ও সংগঠনকে আইনের আওতায় এনে শাস্তি নিশ্চিত করার জন্য আমাদের সকলকে একযোগে কাজ করতে হবে।