সৈয়দপুর প্লাজার প্রকল্প পরিচালককে অপসারণে ৭ দিনের আলটিমেটাম
উত্তরবঙ্গের সর্ববৃহৎ বাণিজ্য কেন্দ্র সৈয়দপুর প্লাজা সুপার মার্কেটের প্রকল্প পরিচালক গুলজার আহমেদের অপসারণের দাবীতে ৭ দিনের আলটিমেটাম দিয়েছে মার্কেটের ব্যবসায়ী সমিতি ও দোকান মালিক সমিতি। মানববন্ধন ও সংবাদ সম্মেলন করে এই সময় নির্ধারণ করে দেয়া হয়েছে।
নানা অনিয়ম দূর্ণীতি ও স্বেচ্ছাচারীতা, মিথ্যে মামলা দিয়ে ব্যবসায়ীদের হয়রানির প্রতিবাদে এই কর্মসূচীর আয়োজন করা হয়। মঙ্গলবার (২৭ আগস্ট) সকাল ১১ টায় মার্কেট প্রাঙ্গণে অনুষ্ঠিত মানববন্ধন এবং সাড়ে ১২ টায় সংবাদ সম্মেলনে সভাপতিত্ব করেন ব্যবসায়ী সমিতির সভাপতি শেখ কুতুবউদ্দিন।
মানববন্ধনে রওশন মাহানামার সঞ্চালনায় বক্তব্য রাখেন, সিনিয়র সহ সভাপতি আখতারুজ্জামান মুকু, সহ সভাপতি সোহেল রানা, মার্কেটের মসজিদের ইমাম হাফেজ মাওলানা ময়নুল ইসলাম আল কাদেরী, সিনিয়র ব্যবসায়ী ও জাতীয় পার্টির উপজেলা সাধারণ সম্পাদক আলতাফ হোসেন, ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক মনোয়ার হোসেন মনু, সাবেক আহবায়ক আনোয়ারুল ইসলাম, সাবেক সভাপতি আরশেদ আলো, মোস্তাফিজা রহমান শিলা, সাংগঠনিক সম্পাদক মোশাররফ হোসেন লিটন, কোষাধ্যক্ষ আরমান, ব্যবসায়ী নিজাম দেওয়ান প্রমুখ।
বক্তারা প্রকল্প পরিচালক গুলজার আহমেদের নানা অনিয়ম দূর্নীতি তুলে ধরে বলেন, নকশা বহির্ভুতভাবে মার্কেট নির্মাণ করে সম্পূর্ণ ইচ্ছেমত দোকান ও পজিশন বরাদ্দের ক্ষেত্রে বৈষম্য ও স্বজন প্রীতি এবং প্রতারণা করা হয়েছে। মার্কেটে মসজিদ, হাসপাতাল, শিশু পার্ক ও কাঁচা সবজি বাজার করার কথা থাকলেও দীর্ঘ ২ যুগেও তা করা হয়নি। বরং একের পর এক মার্কেট ভবন তৈরী করা হয়েছে। মার্কেটে চলন্ত সিঁড়ি ও লিফট আজও স্থাপন করা হয়নি। কাঁচা বাজারের জায়গায় আরও একটি ৪ তলা ভবন নির্মাণ করছে। এভাবে নানা প্রতিশ্রুতি ভঙ্গ করেছে।
এছাড়া প্রতি ঈদ মৌসুমে বিদ্যুৎ বলে বিভ্রান্তি সৃষ্টি করে ভোগান্তিতে ফেলে। এজন্য স্থায়ীভাবে জেনারেটর চালু করার দাবি জানানো হলেও তিনি ভ্রুক্ষেপহীন। এখন জেনারেটর একেবারে অকেজো করে ফেলে রাখা হয়েছে। মার্কেটের সম্মুখভাগের গ্লাসগুলো নষ্ট হয়ে গেলেও পরিবর্তন করা হচ্ছেনা। মার্কেটের সামনে সাইকেল স্ট্যান্ড করে সৌন্দর্য্য বিনষ্ট করে লিজ প্রদানের মাধ্যমে ভাড়া উত্তোলনে ব্যক্তিগতভাবে ফায়দা লুটে চলেছে।
এর পাশাপাশি নামে বেনামে প্রায় ৭০ টি দোকান প্রকল্প পরিচালক নিজে কুক্ষিগত করে ভাড়া দিয়েছেন। এসব দোকানেই ফাস্টফুড ও রেষ্টুরেন্টের নামে দেহ ব্যবসাসহ নানা অনৈতিক কাজের আখড়ায় পরিণত করা হয়েছে। পুরো মার্কেটে বখাটে, নেশাখোর ও দূর্বৃত্তদের দৌরাত্ম বিরাজ করছে। এসব বিষয়ে অভিযোগ দেয়া হলেও প্রকল্প পরিচালক কোন ব্যবস্থা নেয়নি। বরং উল্টো চাঁদাবাজির মিথ্যে মামলা দিয়ে হয়রানি করছে। এ পর্যন্ত ৪ টি মামলা দিয়েছে ব্যবসায়ীদের বিরুদ্ধে। এমনকি প্লাজা সুপার মার্কেটের মালিক সামসুল হক সরকারের ঢাকাস্থ অফিসে গিয়ে ১ কোটি টাকার চাঁদা দাবির মত ভূয়া অভিযোগ দিয়ে সিএমএম আদালতে মামলা দিয়ে চরম মিথ্যেচারের আশ্রয় নিয়েছেন।
মসজিদের ইমামকে ২২ মাসের বেতন না দিয়ে চাকুরী ছেড়ে দিতে বাধ্য করেছেন। মার্কেটের সবদিকে স্বাস্থ্য সম্মত আধুনিক টয়লেট করার কথা থাকলেও একটি গণ শৌচাগার করে রেখেছে। সেটার অবস্থাও করুন। একেবারে অস্বাস্থ্যকর ও নোংরা। এই সমস্যা আর নেশাখোর বখাটেদের উৎপাতের কারণে নারীরা মার্কেটে এসে বিড়ম্বনার শিকার হওয়ার কারণে ক্রেতা উপস্থিতি কমে গেছে।
এব্যাপারে সৈয়দপুর প্লাজার প্রকল্প পরিচালক আলহাজ্ব গুলজার আহমেদ বলেন, ব্যবসায়ীদের অভিযোগ গতানুগতিক। তারা সম্পূর্ণ উদ্দেশ্য প্রণোদিতভাবে এসব করছে। প্রকৃত বিষয়ে অচিরেই সংবাদ সম্মেলন করে জানানো হবে। তিনি বলেন, মূলত: ব্যবসায়ী ও দোকান মালিক সমিতির নেতৃবৃন্দ নিজেরাই প্রতারণা ও ধান্দাবাজিতে জড়িত। (ছবি আছে)
শাহজাহান আলী মনন