ত্রাণবঞ্চিত হাজার হাজার পরিবার

ফেনীতে বন্যা পরিস্থিতির কিছুটা উন্নতি হলেও নোয়াখালী ও কুমিল্লায় অবনতি হয়েছে। দুর্গত এলাকায় দেখা দিয়েছে বিশুদ্ধ পানি, শিশুখাদ্য ও খাবারের সংকট। বানভাসিদের অভিযোগ, ফেনী, নোয়াখালী ও কুমিল্লার প্রত্যন্ত অঞ্চলে যাচ্ছে না ত্রাণ। ফলে হাহাকার দেখা দিয়েছে বন্যার্তদের মাঝে।

দেশের বিভিন্ন অঞ্চল থেকে ত্রাণসামগ্রী নিয়ে হাজার-হাজার মানুষ ছুটে এলেও প্রয়োজনীয় বাহনের অভাবে প্রত্যন্ত অঞ্চলে যেতে পারছে না। তাই বন্যা দীর্ঘায়িত হলে বড় ধরনের সংকটে পড়তে পারে লাখ লাখ মানুষ। তবে ফেনীর দুর্গম এলাকায় হেলিকপ্টারে খাবার পাঠানো হচ্ছে বলে জানিয়েছেন জেলা প্রশাসক। ফেনীর অধিকাংশ এলাকায় বিদ্যুৎ ও ইন্টারনেট সংযোগ এখনো বন্ধ রয়েছে।

এদিকে আশ্রয়কেন্দ্রগুলোয় দেখা দিয়েছে ডায়রিয়াসহ নানা রোগবালাই। দেখা দিয়েছে সাপের উপদ্রব। কুমিল্লার আশ্রয়কেন্দ্রগুলোয় শিশুখাদ্যের সংকট দেখা দিয়েছে। তিতাসে গোমতীর তীব্র ভাঙনে নদীগর্ভে বিলীন হচ্ছে বাড়িঘর। খোলা আকাশের নিচে দিন-রাত কাটাচ্ছে শত শত পরিবার। ফেনীর সোনাগাজীতে বন্যার পানিতে ভেসে এসেছে অজ্ঞাতপরিচয় দুই নারী-পুরুষের লাশ। কুমিল্লার বুড়িচংয়ে মাছ ধরার সময় স্রোতে ভেসে গিয়ে এক বৃদ্ধের মৃত্যু হয়েছে। ব্যুরো ও প্রতিনিধিদের পাঠানো খবর-

ফেনী : ফেনীতে বন্যা পরিস্থিতি কিছুটা উন্নতির দিকে। ঘরের ছাদে কিংবা গলাসমান পানি যেখানে ছিল, সেখানে এখন কোমরসমান পানি। তবে ভোগান্তি কমেনি। অধিকাংশ আশ্রয়কেন্দ্রে এখনো মানুষ রয়েছে। গ্রামে চরম খাবার সংকট দেখা দিয়েছে। গ্রামের অধিকাংশ দোকানপাট বন্ধ এবং মালামাল না থাকায় বানভাসি মানুষ কিনেও খেতে পারছেন না। অধিকাংশ এলাকায় বিদ্যুৎ ও ইন্টারনেট সংযোগ এখনো বন্ধ রয়েছে।

এদিকে ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কে খুবই ধীরগতিতে চলছে গাড়ি। সড়কে বড় বড় খানাখন্দ সৃষ্টি হওয়ায় যান চলাচলে মারাত্মক সমস্যা হচ্ছে। প্লাবিত হওয়া ফুলগাজী, পরশুরাম, ছাগলনাইয়া উপজেলায় কোথাও কোথাও এখনো পানি রয়েছে। যেখানে পানি নেমেছে, সেখানে ক্ষতচিহ্ন দৃশ্যমান হচ্ছে। নোয়াখালীর মুছাপুর রেগুলেটর ভেঙে যাওয়ায় দাগনভূঞার পানি দ্রুত কমতে শুরু করেছে। শুধু ফেনী সদর উপজেলার দক্ষিণ আবুপুর, কুমিরা, উত্তর আবুপুর ও এলাহীগঞ্জ, ৮টি গ্রাম এবং সিন্দুপুর ইউনিয়নের গৌতমখালি, কৈখালী গ্রামে বুক ও গলাসমান পানি রয়েছে। ফেনী সদর উপজেলার শশর্দী ইউনিয়নের দক্ষিণ আবুপুর, আবুপুর, এলাহীগঞ্জ, ধলিয়া, কালিদহ ও মোটবী ইউনিয়নে এখনো বুকসমান পানি। হাজার হাজার মানুষ পানিতে আটকে আছেন। ভুক্তভোগীদের অভিযোগ, জেলা শহরের সঙ্গে সংযুক্ত প্রধান প্রধান সড়কে ত্রাণ পৌঁছালেও গ্রামীণ জনপদে পৌঁছাচ্ছে না। ফেনীর জেলা প্রশাসক শাহীনা আক্তার যুগান্তরকে জানান, জেলায় ১০ লাখ মানুষ পানিবন্দি। দেড় লাখ মানুষকে বিভিন্ন আশ্রয়কেন্দ্রে নেওয়া হয়েছে। দুর্গম এলাকায় হেলিকপ্টারে খাবার পাঠানো হচ্ছে।

নোয়াখালী : নোয়াখালীর বন্যা পরিস্থিতির আরও অবনতি হচ্ছে। পানিবন্দি প্রায় ২০ লাখ মানুষ। বন্যাদুর্গত এলাকায় দেখা দিয়েছে বিশুদ্ধ পানি, শিশুখাদ্য ও খাদ্য সংকট। জেলা ও উপজেলা থেকে ইউনিয়নসহ সব অঞ্চল বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে। ত্রাণের জন্য বন্যাকবলিত অঞ্চলে হাহাকার, অন্যদিকে বাজারে খাদ্য সংকট ও সাপের উপদ্রবে নাকাল তারা।

অনেকের কাটছে নির্ঘুম রাত। ২৫০ শয্যাবিশিষ্ট নোয়াখালী জেনারেল হাসপাতালের আবাসিক মেডিকেল অফিসার সৈয়দ মহিউদ্দিন আব্দুল আজিম বলেন, এ পর্যন্ত নোয়াখালীতে ৮৭ জনকে সাপে কেটেছে। এর মধ্যে ২৪ ঘণ্টায় নতুন করে সাপে কেটেছে ৪২ জনকে। বন্যার কারণে ডায়রিয়া আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি আছেন ১১৮ জন। বিভিন্ন উপজেলায় ১ হাজার লোক ডায়রিয়া আক্রান্ত। এর মধ্যে শিশুর সংখ্যা বেশি। ডায়রিয়া দ্রুত ছড়িয়ে পড়ছে।

বেগমগঞ্জের বীর মুক্তিযোদ্ধা আবদুল্লা জানান, ফেনীর মুহুরী নদীর উজানের পানি প্রবেশ করায় জেলার সেনবাগ, বেগমগঞ্জ, সোনাইমুড়ী উপজেলার আরও নতুন নতুন এলাকা প্লাবিত হয়েছে। বৃষ্টি ও উজানের পানিতে ৮টি উপজেলার প্রায় সব বাড়িঘর নিমজ্জিত হয়েছে। সড়কও তলিয়ে গেছে। দেখা দিয়েছে বিশুদ্ধ খাবার পানির সংকট। দিনমজুর ও খেটে খাওয়া মানুষ কাজ করতে না পেরে মানবেতর জীবনযাপন করছেন। কর্মহীন মানুষ সাহায্যের আবেদন জানিছেন সরকার ও বিত্তশালীদের কাছে। এ জেলায় কোনো সরকারি ত্রাণ বিলি করতে দেখা যাচ্ছে না। বালুচরার গৃহবধূ আকলিমা কান্নাজড়িত কণ্ঠে বলেন, শ্বশুর, শাশুড়ি, তিন ননদসহ পরিবারের ৭ সদস্যকে নিয়ে ৩ দিন ধরে চালের গুঁড়ার জাউ খেয়ে প্রাণ রক্ষা করছি। কিন্তু শিশু এখন আর বুকের দুধ পায় না। তিনি শিশুখাদ্য বরাদ্দের আবেদন জানান। তিনি বলেন, ঘরে চাল নেই। বাজারে পানি উঠেছে। দোকানপাট বন্ধ।

টেলিভিশনে বলে, সরকার ও অনেক দল ত্রাণ বিতরণ করছে। কিন্তু আমাদের এলাকায় আসেনি। বন্যাকবলিত বিভিন্ন এলাকা ঘুরে দেখা গেছে, জেলার ৮টি উপজেলার প্রায় ৯০ ভাগ মানুষ পানিবন্দি। প্রতিটি বাড়িতে ৪ থেকে ৫ ফুট জলাবদ্ধতা সৃষ্টি হয়েছে। নিচু এলাকাগুলোয় ৬ থেকে ৭ ফুট পানি। বসত ও রান্নাঘরে পানি ঢুকে পড়ায় খাবার সংকটে রয়েছে বেশির ভাগ মানুষ।

এ রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত মঙ্গলবার রাত সাড়ে ৯টায় জেলায় পানি বাড়ছিল। ইতোমধ্যে ১ হাজার ৯৮টি আশ্রয়কেন্দ্রে প্রায় ১ লাখ ৮৭ হাজার মানুষ আশ্রয় নিয়েছেন। জেলায় প্রায় ২০ লাখ মানুষ পানিবন্দি অবস্থায় আছেন। জেলা প্রশাসন এক হাজার প্যাকেট শুকনা খাবার দিয়েছে। উপজেলা প্রশাসনের কর্মকর্তারা মাঠপর্যায়ে কাজ করছেন। স্বেচ্ছাসেবক কাজ করছেন। এদিকে ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন এলাকা থেকে আসা ত্রাণসামগ্রী বিতরণকারীরা শহর এলাকায় এবং প্রধান সড়কের আশপাশে বিতরণ করে চলে যায়। জেলায় এখনো ত্রাণ বিতরণে সমন্বয় গড়ে ওঠেনি।

কুমিল্লা, বুড়িচং : কুমিল্লায় গোমতীর পানি কমলেও বন্যা পরিস্থিতি অপরিবর্তিত রয়েছে। পানি লোকালয়ে প্রবেশ করে নতুন নতুন এলাকা প্লাবিত হচ্ছে। প্রয়োজনীয় নৌকা ও স্পিডবোটের অভাবে প্রত্যন্ত অঞ্চলে পৌঁছানো যাচ্ছে না ত্রাণসামগ্রী। এতে অধিকাংশ বন্যার্তের মাঝে হাহাকার অবস্থা বিরাজ করছে। দিন যত যাচ্ছে, ততই বিপাকে পড়ছেন দুর্গতরা। অপরদিকে একমাত্র সেনাবাহিনীর কয়েকটি স্পিডবোট প্রত্যন্ত অঞ্চলে ত্রাণসামগ্রী পৌঁছে দিতে পারছে। কিন্তু এখনো হাজার হাজার পরিবার ত্রাণ থেকে বঞ্চিত রয়েছে।

১৪ উপজেলার ১০ লাখ মানুষ পানিবন্দি হয়ে পড়েছে। কবে নাগাদ বন্যার কবল থেকে মানুষ মুক্ত হবে, এরও কোনো নির্দিষ্ট তথ্য-উপাত্ত নেই। এরই মাঝে জেলার বন্যাদুর্গতরা খাদ্য, ওষুধ, শিশুখাদ্যসহ নানা সংকটে পড়েছেন। দেশের বিভিন্ন অঞ্চল থেকে ত্রাণসামগ্রী নিয়ে হাজার হাজার মানুষ ছুটে এলেও প্রয়োজনীয় বাহনের অভাবে প্রত্যন্ত অঞ্চলে যেতে পারছে না। তাই বন্যা দীর্ঘায়িত হলে বড় ধরনের সংকটে পড়তে পারে লাখ লাখ মানুষ। এদিকে ৮ শতাধিক আশ্রয়কেন্দ্রে দেখা দিয়েছে নানা রোগবালাই। ওষুধ, জ্বালানি এবং বিদ্যুৎ সংকটে মানবেতর জীবনযাপন করছেন দুর্গতরা।

২৪ ঘণ্টায় বুড়িচং-ব্রাহ্মণপাড়ার পাশাপাশি নাঙ্গলকোট, মনোহরগঞ্জ ও চৌদ্দগ্রাম উপজেলার বিভিন্ন অঞ্চলে বন্যা পরিস্থিতির অবনতি হয়েছে। কুমিল্লার অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) পংকজ বড়ুয়া বলেন, ত্রাণসামগ্রী এবং চিকিৎসা সেবা বন্যাকবলিতদের দ্বারে দ্বারে পৌঁছাতে আমাদের চেষ্টা অব্যাহত আছে। জেলা ত্রাণ ও পুনর্বাসন কর্মকর্তা মোহাম্মদ আবেদ আলী বলেন, প্রয়োজনের তুলনায় আমাদের জনবল অনেক সংকট। একটি উপজেলায় চার-পাঁচজন লোক দিয়ে আসলে কিছুই করা যায় না। আমরা দিনরাত অবিরাম কাজ করে যাচ্ছি। বন্যা দীর্ঘায়িত হলে দুর্গত মানুষের দুঃখ-দুর্দশা চরম আকার ধারণ করবে।

এদিকে কুমিল্লার আশ্রয়কেন্দ্রগুলোয় শিশুখাদ্য সংকট দেখা দিয়েছে। জেলার ৭২৪টি আশ্রয়কেন্দ্রের বেশির ভাগেই মা-বাবার সঙ্গে শিশুরা অবস্থান করছে। সেখানে ত্রাণসামগ্রী এলেও শিশুখাদ্য আনছে না কেউ। এতে নবজাতকসহ বিভিন্ন বয়সি শিশুকে নিয়ে চরম বিপাকে পড়েছেন অভিভাবকরা। মঙ্গলবার জেলার বেশ কয়েকটি আশ্রয়কেন্দ্র ঘুরে এসব চিত্র দেখা গেছে। বুড়িচং উপজেলার ফকিরবাজার উচ্চবিদ্যালয় আশ্রয়কেন্দ্রে দুই শতাধিক মানুষ রয়েছেন।

এর মধ্যে ৫ বছরের নিচে শিশু রয়েছে ১৫ জন। তাদের যে খাবার দরকার, তা পাচ্ছে না। বাকশীমুল গ্রামের মো. জসীম উদ্দিন ও জেসমিন আক্তার দম্পতি রয়েছেন আশ্রয়কেন্দ্রটিতে। তাদের সঙ্গে দুই বছরের কন্যাশিশু আছে। রীতিমতো খাবারের জন্য কান্নাকাটি করলেও মিলছে না চাহিদা অনুসারে শিশুদের খাবার। ওই দম্পতি বলেন, দুই মাস আগে মায়ের দুধ ছাড়ে মরিয়ম। ভারী কোনো খাবার খায় না। বুকের দুধ ছাড়ার পর গরুর দুধে অভ্যস্ত সে। দুদিন ধরে সেসব খাবার পাচ্ছি না। কুমিল্লা জেলাজুড়ে ৭২৪টি কেন্দ্রে ১৫ হাজার ৫৯ জন বিভিন্ন বয়সের শিশু আশ্রয় নিয়েছে।

এদিকে বুড়িচং উপজেলার বাকশীমুল ইউনিয়নের কালিকাপুর এলাকায় মঙ্গলবার সকালে বন্যার পানিতে মাছ ধরতে গিয়ে পানির স্রোতে ভেসে গিয়ে মর্মান্তিক মৃত্যু হয়েছে আবুল হাসেম (৭০) নামের এক বৃদ্ধের।

রামগতি (লক্ষ্মীপুর) : রামগতি-কমলনগরে এখন বানভাসি মানুষের হাহাকার। এরই মধ্যে দেখা দিয়েছে ত্রাণ ও সুপেয় পানির সংকট। রামগতি ও কমলনগর উপজেলার ৪০টি গ্রাম এখন পানির নিচে। ধীরে ধীরে অন্যান্য গ্রাম প্লাবিত হচ্ছে। দুদিন ধরে ফেনী ও নোয়াখালীর বন্যার পানি রহমতখালী ও ডাকাতিয়া খাল হয়ে লক্ষ্মীপুরে ঢুকে পড়ছে।

এতে কোথাও কোথাও চার থেকে ছয় ফুট পানিতে ডুবে রয়েছে। সবচেয়ে খারাপ পরিস্থিতি রামগতির চর পোড়াগাছা, চর বাদাম, চর সীতা, কমলনগরের চর কাদিরা, চর বসু ও তোরাবগঞ্জে। ৪৮ ঘণ্টায় রামগতি-কমলনগরে বন্যা পরিস্থিতির আরও অবনতি হয়েছে। প্রধান সড়কের আশপাশে সহযোগিতা পেলেও প্রান্তিক গ্রাম থেকে গ্রামে পৌঁছায়নি ত্রাণ সহায়তা। সেখানে দেখা দিয়েছে খাদ্য ও সুপেয় পানির সংকট। স্বাস্থ্যঝুঁকির পাশাপাশি ক্ষুধার্ত অধিকাংশ শিশু।

তিতাস (কুমিল্লা) : বন্যায় গোমতী নদীর স্রোতে ভাঙনের কবলে কুমিল্লা তিতাস উপজেলা নারান্দিয়া ইউনিয়নের পশ্চিম ও পূর্ব পাড়া। নদীগর্ভে বিলীন হয়ে গেছে অনেক বাড়িঘর, মসজিদ, বৈদ্যুতিক খুঁটি, মুরগির খামারসহ বিভিন্ন স্থাপনা। নদীর তীরবর্তী শত শত পরিবার নদীভাঙন আতঙ্কে খোলা আকাশের নিচে রাত জেগে পাহারা দিচ্ছেন। শত শত পরিবার অন্যত্র ঘর সরিয়ে নিচ্ছেন। আবার কেউ বিল্ডিংয়ের ভেতর থেকে মালামাল সরিয়ে নিচ্ছেন। স্থানীয়রা বলেন, প্রায় পঞ্চাশ বছর আমরা এই ভাঙনের খেলা খেলছি। সরকার যদি আমাদের পাশে দাঁড়ায় তবে আমরা কোনো রকমে বাঁচতে পারব।

সোনাগাজী (ফেনী) : ফেনীর সোনাগাজীতে পৃথক সময়ে বন্যার পানিতে ভেসে আসা দুই অজ্ঞাতপরিচয় নারী-পুরুষের লাশ উদ্ধার করেছে পুলিশ। একজন পুরুষ ও অপরজন হিন্দু নারী। সোমবার দুপুরে স্থানীয় জনতার সহযোগিতায় মহুরী সেচ প্রকল্প এলাকার বড় ফেনী নদীর তীর থেকে ২৬-২৭ বছরের এক অজ্ঞাতপরিচয় যুবকের অর্ধগলিত লাশ উদ্ধার করা হয়। সন্ধ্যায় জানাজা শেষে বেওয়ারিশ হিসাবে তার লাশ মতিগঞ্জ ইউনিয়নের সুলাখালী গ্রামের দৌলত চৌধুরী দীঘিরপাড়ে গণকবরস্থানে দাফন করা হয়। অপরদিকে মঙ্গলবার বেল ২টায় একই স্থানে ২৫-২৬ বছরের এক নারী, যার গলায় সিঁথির মালা ছিল, তার অর্ধগলিত লাশ উদ্ধার করা হয়। হিন্দু ধর্ম অনুযায়ী তার মরদেহ সৎকারের সিদ্ধান্ত হয়েছে।

বুড়িচংয়ে ভেলায় ভাসছে লাশ : কুমিল্লার বুড়িচংয়ে বন্যার পানিতে কলাগাছের ভেলায় ভাসছে সাদা কাফন পরিহিত একটি লাশ। স্থানীয়রা বলছেন, চারদিকে পানি আর পানি, তাই হয়তো এ লাশ ভেলায় ভাসিয়ে দেওয়া হয়েছে। লাশের ছবি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়েছে। অনেক বলেছেন, এই প্রথম দেখেছি লাশ ভেলায় ভাসিয়ে দেওয়া হচ্ছে। বুড়িচং, ব্রাহ্মণপাড়া-দুই উপজেলার মানুষ মারা গেলে এ মুহূর্তে মাটি দেওয়ার মতো জায়গাও নেই। চতুর্দিকে শুধু পানি আর পানি। তবে এ লাশ কোথা থেকে এলো, তা জানা যায়নি।

 

সংবাদটি ভালো লাগলে শেয়ার করুন

সর্বশেষ সংবাদ