সৈয়দপুরের মেয়র আত্মগোপনে, সেবা নিয়ে ভোগান্তিতে পৌরবাসী

 সৈয়দপুর (নীলফামারী) প্রতিনিধি:
ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে আওয়ামী সরকারের পতনের পর পরই নীলফামারীর সৈয়দপুর পৌরসভার মেয়র রাফিকা আকতার জাহান বেবী গা ঢাকা দিয়েছেন। তিনি কোথায় তা জানেন না পৌরসভার কর্মকর্তারা।
এদিকে এক সপ্তাহ পার হলেও পৌর মেয়র কার্যালয়ে না আসায় জন্মসনদ, মৃত্যুসনদ, ওয়ারিশনামা, চারিত্রিক সনদসহ বেশ কিছু সেবা কার্যক্রম নিয়ে দেখা দিয়েছে জটিলতা। এতে ভোগান্তিতে পড়েছেন পৌরসভার বাসিন্দারা।
তবে কাউন্সিলর এবং পৌরসভার বিভিন্ন পর্যায়ের কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের কার্যালয়ে উপস্থিত থাকতে দেখা গেছে। মেয়র রাফিকা আকতার পৌর মহিলা লীগের সাধারণ সম্পাদক ও সাবেক পৌর মেয়র এবং উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি প্রয়াত আকতার হোসেন বাদলের স্ত্রী।
আজ সোমবার (১২ আগস্ট) সরেজমিন পৌর ভবনে গিয়ে দেখা যায় মেয়র রাফিকা আকতার জাহানের কক্ষ তালাবদ্ধ। অনুপস্থিত প্যানেল মেয়র শাহিন হোসেনও। কয়েকজন সেবাগ্রহীতা বসে আছেন মেয়রের কক্ষের সামনে।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক পৌরসভার এক কর্মচারী জানান, ৫ আগস্ট সরকারের পতনের পর থেকে যে পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়েছে, এতে মেয়র পৌরসভায় আসছেন না। প্যানেল মেয়রের দেখা মিলছে না। তবে দুই একজন বাদে কাউন্সিলরা নিয়মিত আসছেন। কিন্তু  কিছু কিছু সেবা আছে যা পৌর মেয়র ছাড়া দেওয়া সম্ভব নয়।
সেবা নিতে আসা ইমতিয়াজ হোসেন নামে একজন বলেন, জমির ওয়ারিশনামা দরকার। তিনদিন ধরে পৌরসভায় ঘুরছি। পৌর মেয়র নেই। এ অবস্থায় আমার সমস্যার সমাধান হচ্ছে না।
রাজিয়া সুলতানা নামের একজন বলেন, ছেলের জন্মসনদ সংশোধন করার জন্য ৫ দিন ধরে ঘুরছি। কিন্তু সমাধান পাচ্ছি না। একই অভিযোগ করেন আরও প্রায় ৫-৭ জন সেবাপ্রার্থী পৌর নাগরিক।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক পৌর শহরের একাধিক ব্যবসায়ী ও বাসিন্দারা অভিযোগ করে বলেন, সৈয়দপুরে গত পৌরসভার নির্বাচন যেভাবে হয়েছে তা ন্যাক্কারজনক। পৌরসভা সৃষ্টির পর এমন নির্বাচন দেখেননি তারা। পছন্দের প্রার্থীকে কাউকে ভোট দিতে দেয়নি। জোর জুলুম ও ভোট কেটে তিনি নির্বাচিত হয়েছেন। এখন সরকার পতনের পর পরই পালিয়েছেন।
এছাড়া নির্বাচিত হওয়ার পর মেয়র নানাভাবে দুর্নীতি ও লুটপাট করেছেন। সেজন্য আসলেই সংক্ষুব্ধদের হাতে অপদস্ত হতে পারেন এমন শঙ্কায় তিনি পৌরসভায় আসছেন না বলেও জানান তারা।
সৈয়দপুর পৌর ১১ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর এরশাদ হোসেন পাপ্পু বলেন,  আমরা যারা কাউন্সিলরা আছি তারা নিয়মিত পৌর কার্যালয়ে আসছি। নিজ নিজ ওয়ার্ডের বাসিন্দাদের সেবা দিচ্ছি। তবে গুরুত্বপূর্ণ যেসব বিষয় রয়েছে মেয়র যেখানে আত্মগোপনে আছে হয়ত কর্মচারীরা সেখানে গিয়ে ফাইল স্বাক্ষর করে আনছেন।
সৈয়দপুর পৌরসভার নির্বাহী কর্মকর্তা সাইদুর জামান বলেন, একটা সরকার বিদায় হয়েছে। অন্য একটা সরকার এসেছে। একটা পরিস্থিতি চলছে। মেয়রের অনুপস্থিতে সেবা নিয়ে তেমন কোনো জটিলতা হচ্ছে না।
সংবাদটি ভালো লাগলে শেয়ার করুন

বিষয়: * সৈয়দপুরের মেয়র আত্মগোপনে
সর্বশেষ সংবাদ