শুধু মুসলিম বিশ্বে নয় সারা বিশ্বে হিজরি হিসাব বাস্তবায়ন একমাত্র বিকল্প 

হিজরি নববর্ষ ১৪৪৬ উপস্থিত আমাদের মাঝ থেকে ১৪৪৫ হিজরি বিদায় নিয়ে । বিশ্বের সর্ববৃহত্তম সম্মেলন হজ্জ্ব, সর্ববৃহত্তম উৎসব ঈদুল আজহার পরপরই সমগ্র বিশ্ববাসীকে প্রস্তুত হতে হয় আহলান সাহলান বলে স্বাগতম জানানোর জন্য।
মানবজীবনে বিধান ও গণনার গুরুত্ব অপরসিীম। এ প্রসঙ্গে আল্লাহপাক ইরশাদ করনে, ان عدة الشهور عند الله اثنا عشر شهرا في كتاب الله يوم خلق السموات و الارض منها اربعة حرم ذلك الدين القيم فلا تظلموا فيهن انفسكم ـ র্অথাৎ নিশ্চয়ই আল্লাহর কাছে বিধান ও গণনা হিসাবে মাস হলো বারোট। আসমানসমূহ ও পৃথিবী সৃষ্টির দিন থেকে। এদের মধ্যে চারটি সম্মানতি। এটি সুপ্রতষ্ঠিতি বিধান। সুতরাং এর মধ্যে তোমরা নিজেদের প্রতি অত্যাচার করোনা। (সূরা তাওবাহ /৩৬)
হিজরি সন বা চন্দ্র বছর মহান আল্লাহর পক্ষ থেকে গণনার অভূতপূর্ব এক সহজ বিধান। হিজরি সনের পহেলা মাস মহররম একের পর এক আমাদের দুয়ারে হাজির হয় ঠিক, কিন্তু হিজরি সনের নব আগমন উপলক্ষে

নেই হৈ-হুল্লোড়, নেই কোনো প্রিন্ট মিডিয়া, ইলকেট্রনকি মিডিয়া বা অনলাইন মিডিয়ার তেমন আয়োজন।

যেভাবে বিশেষ আয়োজন পরিলক্ষিত হয় ঈসায়ী নবর্বষ কিংবা বাংলা নববর্ষের আগমনে। আরো আফসোস ৯৫% মুসলিমদের দেশে রাষ্ট্র বাংলা নববর্ষে কর্মচারীদের উৎসব বোনাস প্রদান করলেও হিজরি নববর্ষ উপলক্ষে নেই কোন পদক্ষেপ। ঈসায়ী কিংবা বাংলা নববর্ষের আগমনে আমাদের দেশে সংস্কৃতির নামে অপসংস্কৃতির চর্চায় মেতে ওঠে। এতে ইসলামী বিধি-নিষেধের তোয়াক্কা করা হয় না।
তথাকথতি সংস্কৃতিপ্রেমিদের সাথে সাথে আমাদের এক শ্রেণির তরুণরা নববর্ষ উদযাপনের নামে অশ্লীলতা ও বেল্লেপনায় গা ভাসিয়ে দেয়। ঈসায়ী নবর্বষ কিংবা বাংলা নবর্বষকে গুরুত্ব তথা আনুষ্ঠানকিতার মাধ্যমে উদযাপন করা হয় এবং হিজরি নবর্বষের ক্ষেত্রে দেখা যায় বিপরীত চিত্র।
অথচ হিজরি নববর্ষ গুরুত্বসহকারে পালন করাই ছিল আমাদের মুসলিম অধ্যুষতি দেশে কাম্য।
যেসব উপাদান মুসলিম উম্মাহকে উজ্জীবতি করে তন্মধ্যে হিজরি সন অন্যতম। বিশ্ব মুসলমি উম্মাহর কৃষ্টি-কালচারে হিজরি সনের গুরুত্ব অপরিসীম। হিজরি সন এমন একটি সন, যার সাথে মুসলমি উম্মাহর তাহজবি-তামাদ্দুন ও ঐতিহ্যের ভিত্তি সম্পৃক্ত। মুসলমানদের সিয়াম, হজ, ঈদ, শবেকদর, শবে মিরাজসহ ইসলামের বিভিন্ন বিধি-বিধান হিজরি সনের ওপর নির্ভরশীল।
হিজরি সন গণনার সূচনা হয়েছিল ঐতিহাসিক এক অবস্মিয়রণীয় ঘটনাকে উপলক্ষ কর। রাসুল (সা.) এবং তাঁর সঙ্গী-সাথীবর্গের মক্কা থেকে মদিনায় হিজরতের ঐতিহাসিক ঘটনাকে স্মরণীয় করে রাখার জন্যই আরবি মহররম মাসকে হিজরি সনের প্রথম মাস ধরে সাল গণনা শুরু হয়েছিল। আল্লাহর নির্দেশ পালর্নাথে তথা দ্বীনের স্বার্থে পবিত্র মক্কা থেকে মদিনায় রাসুল (সা.) এবং সাহাবায়ে কেরামগণের হিজরতের বছর থেকেই হিজরি সনের সূচনা।
রাসূলুল্লাহ (সাঃ) এর সময়ে ও তার পূর্বে রোমান, পার্সিয়ান ও অন্যান্য জাতির মধ্যে তাদের নিজস্ব ক্যালেন্ডার বা পঞ্জিকা প্রচলতি ছিল। আরবদের মধ্যে কোনো নির্ধারিত বর্ষ গণনা পদ্ধতি ছিল না। বিভিন্ন ঘটনার উপর নির্ভর করে তারিখ বলা হত।
খলফিা হজরত উমর ফারুক (রা.) এর শাসনামলে ১৬ হজিরি সন, প্রখ্যাত সাহাবি হজরত আবু মুসা আশআরী (রা.) ইরাক এবং কুফার গভর্ণর হিসাবে দায়িত্ব পালন করেন। একদা হজরত আবু মুসা আশআরী (রা.) খলিফা উমর (রা.) এর খেদমতে এ র্মমে পত্র লিখেন যে আপনার পক্ষ থেকে পরার্মশ কিংবা নির্দেশ সংবলতি যেসব চিঠি আমাদের নিকট পৌঁছে তাতে দিন, মাস, কাল, তারিখ ইত্যাদি না থাকায় কোনো চিঠি কোন দিন তারিখ নিরুপণ করা আমাদের জন্য সম্ভব হয় না। এতে করে আমাদের নির্দেশ কার্যকর করতে সমস্যা হয়। অনেক সময় আমরা বিব্রত বোধ করি চিঠির ধারাবাহকিতা না পেয়ে। হজরত আবু মুসা আশআরীর চিঠি পেয়ে হজরত উমর (রা.) এ মর্মে পরামর্শ সভার আহবান করনে যে, এখন থেকে একটি ইসলামি তারিখ প্রবর্তন করতে হবে। উক্ত পরার্মশ সভায় হজরত উসমান (রা.), হজরত আলী (রা.) সহ বিশিষ্টি অনেক সাহাবি উপস্থতি ছিলেন। উপস্থতি সকলের পরামর্শ ও মতামতরে ভিত্তিতে ওই সভায় ওমর (রা.) সিদ্ধান্ত দেন ইসলামি সন প্রবর্তনের। তবে কোন মাস থেকে বর্ষের সূচনা করা হবে তা নিয়ে পরস্পরের মাঝে মতভেদ সৃষ্টি হয়। কেউ মত পোষণ করেন রাসুল (সা.) এর জন্মের মাস রবিউল আওয়াল থেকে বর্ষ শুরু করার। আবার কেউ কেউ মত পোষণ করেন রাসুলরে ওফাতের মাস থেকে বর্ষ শুরু করা হোক।
অন্যান্যের মতে হুজুর (সা.) এর হিজরতের মাস থেকে বর্ষ শুরু করা হোক। এভাবে বিভিন্ন মত আলোচিত হওয়ার পর হজরত উমর (রা.) বললনে, হুজুর (সা.) এর জন্মের মাস থেকে হিজরি সনের গণনা শুরু করা যাবে না। কারণ খ্রিস্টান সম্প্রদায় হজরত ঈসা (আ.)-এর জন্মের মাস থেকেই খ্রিষ্টাব্দের গণনা শুরু করছিল। তাই হুজুর (সা.) এর জন্মের মাস থেকে সূচনা করা হলে বাহ্যত খ্রিষ্টানদের অনুসরণ ও সাদৃশ্যতা হয়ে যায়, যা মুসলমানদের জন্য পরিত্যাজ্য। আল্লাহ বলেন ‘তিনিই তোমাদেরকে সৃষ্টি করছেনে। অতঃপর তোমাদের মধ্যে কেউ কাফির ও কেউ মুমিন। আর তোমরা যা কিছু কর, সবই আল্লাহ দেখেন’ (তাগাবুন/২)।
অত্র আয়াতে আল্লাহ পরিষ্কারভাবে বুঝিয়ে দিয়েছেন যে, সৃষ্টিগত ভাবেই মানুষ দুভাগে বিভক্ত। একদল সৃষ্টির্কতা হিসাবে আল্লাহকে বিশ্বাস করে, আরেকদল অবিশ্বাস করে। ফলে দুই দলের বিশ্বাস ও কর্ম পৃথক হতে বাধ্য।
এছাড়া বিগত অভশিপ্ত ও পথভ্রষ্ট জাতি সমূহরে সাদৃশ্য অবলম্বন থেকে বিরত থাকার জন্য মুসলমি উম্মাহকে নির্দেশ দিয়ে আল্লাহ বলেন, ‘হে মুমনিগণ! তোমরা ইহূদী-নাছারাদের বন্ধুরূপে গ্রহণ করোনা। তারা একে অপরের বন্ধু। তোমাদের মধ্যে যারা তাদের সাথে বন্ধুত্ব করবে, তারা তাদের মধ্যে গণ্য হবে। নিশ্চয়ই আল্লাহ সীমালংঘনকারী সম্প্রদায়কে সুপথ প্রদর্শন করেন না’ (মায়দোহ /৫১)।
অমুসলমিদরে বন্ধুরূপে গ্রহণ না করার নির্দেশ দিয়ে আল্লাহ আরো বলেন, ‘মুমিনগণ যেন মুমিনদের ছেড়ে কাফিরদের বন্ধুরূপে গ্রহণ না কর। যারা এরূপ করবে, আল্লাহর সাথে তাদের কোন সম্পর্ক থাকবে না। তবে যদি তোমরা তাদেরকে থেকে কোন অনিষ্টের
আশংকা কর (সেটি স্বতন্ত্র)। আল্লাহ তোমাদরেকে তাঁর (প্রতিশোধ গ্রহণ) সর্ম্পকে সতর্ক করে দিচ্ছেন। আর আল্লাহর কাছেই সকলের শেষ ঠিকানা’ (আলে ইমরান-মাদানী /২৮)।
তবে আমাদের দেশে যারা রাসূল (সাঃ) এর জন্ম দিবসকে সামনে রেখে ঈদে মিলাদুন্নবীর নামে অতি বাড়াবাড়ি করে উৎসব পালন করে তারা নবীর সুন্নাতের অনুসারী নয়। বরং সুন্নী নামে ইসলামের বিধানে বিদায়াত সৃষ্টকিারী।
অপরদিকে হুজুর (সা.)-এর ওফাত দিবসের মাস থেকেও গণনা শুরু করা যাবে না, কারণ এতে হুজুর (সা.) এর মৃত্যু ব্যথা আমাদের মাঝে বারবার উত্থিত হব।
পাশাপাশি অজ্ঞ যুগের মৃত্যুর শোক পালন ইসলামবিরোধী একটি কুপ্রথারই পুনরুজ্জীবন।

হজরত ওমর (রা.)-এর দিকনির্দেশনামূলক বক্তব্যকে হজরত উসমান (রা.) ও হজরত আলী (রা.) এক বাক্যে সহমত পোষণ করেন। এরই পরিপ্রেক্ষিতে খলিফা হযরত উমর ফারুক (রা.) হিজরতের বছর থেকেই ইসলামি দিনপঞ্জী গণনার সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেন। এই ঐতিহাসিক সিদ্ধান্ত গৃহীত হয় হিজরতের ১৬ বছর পর ১০ জমাদিউল আউয়াল ৬৩৮ খ্রস্টিাব্দ। মোদ্দা কথা, আমরিুল মুমনিনি হজরত ওমর (রা.)-এর শাসনামলে হিজরি সনের গণনা সূচনা করেন।

মুসলিম জাতি তো বটে পৃথিবীর সকল জাতির জন্যই গণনা করার এক সহজ উপায় হলো চন্দ্রবছর। পৃথিবীর সকলের জন্য সুবিধা হবে না কেন যিনি এই পৃথিবী সৃষ্টি করেছেন এই বিধান দিয়েছেন তিনি তো সকল মানবজাতির প্রভূ কেননা তিনি সূরা ফাতিহার মধ্যে রব্বিল মুসলিমিন বলেননি বরং বলেছেন রব্বিল আলামিন অর্থাৎ বিশ্বজগতের পালকর্তা সূরা ফাতিহা/১।

আবার যার নিকট আমাদের মহাগ্রন্থ আল্-কুরান পাঠিয়েছেন তিনিও শুধু মুসলিমদের নবী, নেতা বা রাসুল সা. নন তিনি বিশ্বনবী, বিশ্বনেতা, বিশ্বজগতের রাসুল সা. কেননা মহান আল্লাহ রব্বুল আলামিন নবী সা. কে রহমাতুল লিল মুসলিমিন বলেননি বরং বলেছেন ওমা আরসালনাকা ইল্লা রহমাতাল লিল আলামিন অর্থাৎ হে নবী আমি আপনাকে বিশ্ববাসীর জন্য রহমতস্বরূপ নাযিল করেছি সূরা আম্বিয়া/১০৭।

অন্যদিকে যে কুরান নাযিল করেছেন আল্লাহ সুবহানাহু তায়ালা সেটি শুধু মুসলিমদের নয়। কেননা এবিষয়ে মহান আল্লাহ সুবহানাহু তায়ালা বলেন ওমা হুয়া ইল্লা যিকরুল লিল আলামিন অর্থাৎ কুরান হলো বিশ্বসংবিধান সূরা কলম/৫২।
চন্দ্রমাস গণনার রয়েছে এক অভূতপূর্ব সুবিধা যা অন্য কোন মাসের ক্ষেত্রে পাওয়া যায় না। পৃথিবীর বুকে তাপবিহীন আলো নিয়ে চন্দ্র উদিত হয় সন্ধ্যার সময় পশ্চিম আকাশের নিচের দিকে সরু কাস্তের ন্যায় যেটি আরবি ভাষায় হিলালুন নামে পরিচিত। দ্বিতীয় দিন চন্দ্রটি সরু থেকে একটু পুরু হয় এবং নিচ থেকে উপরের দিকে উঠে আর পৃথিবীকে বেশি সময় আলোকিত করে।

এভাবে প্রতিদিন চন্দ্র তার নিজের রূপ পরিবর্তনের সাথে সাথে পৃথিবীর আকাশে তার স্থান পরিবর্তন করে পৃথিবীকে বেশি সময় আলোকিত করে রাখে এবং ৭ম বা ৮ম দিনে অর্ধ থালার আকৃতি ধারণ করে যেটি পবিত্র কুরানে কামরুন হিসাবে আলোচিত হয়েছে।

এভাবে ১৪ বা ১৫ তম দিনে আমরা দেখতে পাই আমাদের মাথার উপর থালার মত একটি পূর্ণ চন্দ্র যেটিকে আরবিতে বাদরুন বলা হয় এটি সারারাত পৃথিবীকে আলোকিত করে রাখে আর আমরা চন্দ্রের এই অবস্থাকে পূর্ণিমা বলি আর চন্দ্র উদিত হওয়ার প্রথম দিন থেকে পূর্ণিমা পর্যন্ত রাত গুলোকে জ্যোৎস্নারাত বা শুক্লপক্ষ বলি।

আবার চন্দ্র ধীরে ধীরে ছোট হতে থাকে এবং মাথার উপর থেকে পূর্ব আকাশে উদিত হতে থাকে এবং পৃথিবীর আকাশ অন্ধকার হতে থাকে এই সময়কে আমরা অন্ধকার রাত বা কৃষ্ণপক্ষ বলি।

অর্ধচন্দ্রে পরিণত হয়ে ধীরে ধীরে পৃথিবীর পূর্ব আকাশে গিয়ে আমাদের সামনে থেকে অদৃশ্য হয়ে যায় এই রাতকে আমরা অমাবশ্যার রাত বলে জানি।

আবার পশ্চিম আকাশে উদিত হয় নতুন চন্দ্র এবং শুরু হয় নতুন চন্দ্র মাস। এভাবে আবর্তিত হতে থাকে চন্দ্র মাস এবং চন্দ্রবছর যা যে কেউ অতি সহজেই গণনা করতে পারে।

মুসলিম তথা বিশ্ববাসীর জন্য এ মাস অথবা বছর গণনা করা অতি সহজ। যদি দেখা যায় মুসলিম জাতি দীর্ঘ একমাস সিয়াম সাধনা পালন করছেন তাহলে বিশ্ব জেনে যাবে সেটি রমজান মাস।

দীর্ঘ একমাস সিয়াম সাধনার পর চন্দ্র উদিত হলে মুসলিমদের ঈদুল ফিতর এবং সেটি শাওয়াল মাস। আবার নতুন চন্দ্র উদিত হলে সেটি জ্বিলকদ মাস। পরবর্তী নতুন চন্দ্র উদিত হয়ে ৮ম দিনে মুসলিমদের তথা বিশ্বের সর্ববৃহত্তম সম্মেলন হজ্জ্ব এবং ১০ম দিনে ঈদুল আজহা উদযাপিত হলে সেটি জিলহাজ্জ্ব মাস।

প্রমাণিত হলো মুসলিমদের জন্য চন্দ্র মাস ও চন্দ্র বছর গণনা করা অতি সহজ।  মুসলিম ব্যতিত অন্যান্য ধর্মাম্বলীরা যদি তাদের মুসলিম প্রতিবেশি বা মুসলিম বন্ধুদের দৈনন্দিন জীবন অনুস্বরণ বা লক্ষ্য করে তাহলে তাদের জন্যও চন্দ্র মাস ও চন্দ্র বছরের হিসাব রাখা সহজ।
মুসলিমদের প্রাণকেন্দ্র মসজিদ থেকে ছড়িয়ে পড়তে পারে মুসলিমদের এমন কৃষ্টি-কালচার সারা বিশ্বে। প্রাসঙ্গিক কারণে উল্লেখ করতে হয় কোভিড-১৯ এর লকডাউন চলাকালীন সময়ে আমার নড়াইল জেলার লোহাগড়া থানাধীন রসুলপুর ওরফে রামকান্তপুর গ্রামের পুরাতন জামে মসজিদে জুমআ এবং ঈদের সালাতে কিছু দিনের জন্য খতিবের দায়িত্ব পালন করার সুযোগ হয়েছিল। তখন দেখতে পেলাম যে মসজিদে ঈসায়ী বর্ষ অনুযায়ী হিসাব নিকাশ চলে অথচ মসজিদ ইসলামের প্রাণ কেন্দ্র সেখানে ইসলামের হিজরী সন বা চন্দ্র বছর অনুযায়ী হিসাব নিকাশ নয় বরং বিধর্মীদের অনুকরণ করে ঈসায়ী বর্ষ অনুযায়ী পরিচালিত হয়।
বিধর্মীদের অনুকরণ করতে আল্লাহ সুবহানাহু তায়ালা নিষেধ করেছেন (প্রাগুক্ত)। তাই মসজিদের মিম্বর থেকে আলোচনার পাশাপাশি বিষয়টি নিয়ে পরামর্শ করি মসজিদ কর্তৃপক্ষের সাথে। আলহামদুলিল্লাহ সেখানে হিজরী সন অনুযায়ী সবকিছূ পরিচালিত হচ্ছে। ইনশা আল্লাহ আজীবন চলবে যদি কোন কাফির বা মুনাফিক পরিবর্তন না করে। কয়েকজন ইমামের সাথে কথা হয়েছে তাঁরাও ইসলামী সংস্কৃতি ছড়িয়ে দেওয়ার ভূমিকা পালন করবেন ইনশা আল্লাহ। একই গ্রামের উত্তর পাড়া জামে মসজিদ উদ্ভোধন থেকেই শুরু করেছিলাম হিজরি সনের হিসাব-নিকাশ কিন্তু ইসলামী চেতনা বা সচেতনতার অভাবে তারা আবার ঈসায়ী হিসাব-নিকাশ শুরু কর করেছে। গতবছর হিজরি সনের গুরুত্বারোপ করে একটি কলাম লিখেছিলাম এদেশের প্রভাবশালী দৈনিক পত্রিকায় যেটি ইসলামী পত্রিকা নামে সমধিক পরিচিত। পত্রিকাটি হিজরি নববর্ষ কে স্বাগত জানিয়ে নিউজ বা কলাম প্রকাশ করলেও হিজরি বর্ষের ৪ মাস অতিবাহিত হলে পত্রিকাটির ইসলামী জীবন, সাহিত্য সম্পাদক এবং একজন সিনিয়র রিপোর্টার কে সিসি দিয়ে ইমেইল করার পর তাদের ওয়েবসাইটে হিজরি সন ১৪৪৪ কে ১৪৪৫ করা হয়। কিন্তু যদি পত্রিকাটির সকল হিসাব-নিকাশ, কর্মকর্তাদের বেতন হিজরি সনের ভিত্তিতে হত তাহলে এই ভুল টি হয়তো হতো না। উল্লেখ্য চন্দ্র বছরে হিসাব-নিকাশ করলে সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তা-কর্মচারীরা ১ বছর অতিরিক্ত বেতন ভাতা উপভোগ করতে পারে

কারণ ৩৩ সৌরছছর সমান ৩৪ চন্দ্রবছর।

পৃথিবীর তারিখ প্রদর্শনের যন্ত্র যদি বিকল হয় বা বিলুপ্ত হয় আকাশের চাঁদের দিকে লক্ষ্য করলেই তারিখ নির্ধারণ করা যায় চন্দ্র বছর হিসাবের মাধ্যমে। মুসলিমদের তথা বিশ্বের সকলের জন্যই যে কোন সহজ বিষয় বা চন্দ্রবছরকে গণনার বিধান হিসাবে গ্রহন করা মঙ্গলজনক।
হিজরি নববর্ষ শুধু আনুষ্ঠানিকভাবে উদযাপন নয় দরকার এর গুরুত্ব প্রচার, প্রসার, সচেতনতা বৃদ্ধি এবং ব্যক্তি, প্রাতিষ্ঠানিক সর্বোপরি রাষ্ট্রীয়ভাবে বাস্তবায়ন করা।
সংবাদটি ভালো লাগলে শেয়ার করুন

বিষয়: * বাস্তবায়ন * মুসলিম বিশ্বে * হিজরি হিসাব বাস্তবায়ন
সর্বশেষ সংবাদ