বেনাপোলে আটকে পড়েছে পচনশীল পণ্যবাহী অর্ধশতাধিক ট্রাক

বেনাপোল প্রতিনিধি :
বেনাপোল বন্দরে পচনশীল পণ্য মাছ, ফল ও সবজিসহ প্রায় অর্ধশতাধিক ট্রাক আটকে পড়েছে। এর প্রতিবাদে বৃহস্পতিবার ২৭ জুন রাতে বেনাপোল কাস্টমস হাউসের সামনে বিক্ষোভ করেছেন আমদানিকারকরা। এ সময় আমদানি-রফতানি বন্ধের হুমকি দেয় বেনাপোল আমদানি-রফতানিকারক অ্যাসোসিয়েশন।
ব্যবসায়ীরা জানান, গত ২৩ জুন এনবিআর পচনশীল পণ্য শুল্কায়নের ক্ষেত্রে নতুন নির্দেশনা জারি করে। ঢাকায় অনুষ্ঠিত অভ্যন্তরীণ নিরীক্ষা কমিশনারেটের এক সভায় আমদানি করা পণ্যের শুল্কায়ন সমতা বজায় রাখা এবং আমদানিকারকদের জন্য সুষম সুবিধা নিশ্চিত করার কথা বলা হয়। এই কারণ দেখিয়ে আমদানি পর্যায়ে মাছ, শুঁটকি মাছ, টমেটো, পান ও বিভিন্ন ধরনের ফলের সঠিক পরিমাপ নির্ধারণে পণ্যবাহী ট্রাকের চাকার সংখ্যার ভিত্তিতে ন্যূনতম ওজন নির্ধারণের প্রস্তাব ও সুপারিশ করা হয়। যা গত ২৭ জুন থেকে কার্যকর করে বেনাপোল কাস্টমস কর্তৃপক্ষ। এতে লোকসানের কবলে পড়েন আমদানিকারকরা। এ সময় পণ্য চালান খালাস না নেয়ায় বন্দরে আটকে পড়ে প্রায় অর্ধশতাধিক পচনশীল খাদ্যপণ্যবাহী ট্রাক। সেগুলোর মধ্যে যেসব আমদানিকারকের ট্রাকের চাকার সংখ্যা অনুযায়ী ওজন ঠিক ছিল সেগুলোর মালামাল খালাস হয়েছে।
বেনাপোল আমদানি-রফতানিকারক সমিতির সাধারণ সম্পাদক জিয়াউর রহমান বলেন, ‘এনবিআরের জারি করা নতুন আদেশের অনুচ্ছেদ ৪ কাস্টমস মূল্যায়ন না করায় আমদানিকারকরা পণ্য চালান খালাস নিতে পারছেন না। আদেশে বলা আছে, নতুন আদেশের যে প্রাকৃতিক ওজন নির্ধারণ করা হয়েছে, সেই ওজনের অতিরিক্ত বা কম মালামাল থাকলে কাস্টম এবং শুল্ক গোয়েন্দার উপস্থিতিতে পণ্যটির পরীক্ষণ কার্যক্রম সম্পন্ন করতে হবে। কিন্তু বেনাপোল কাস্টম হাউস সেটি করছে না। মালামাল পরীক্ষা করে কম বা বেশি থাকলে অতিরিক্ত শুল্ক করাদি পরিশোধসহ জরিমানার টাকা আদায় সাপেক্ষে আমদানি করা পচনশীল কাঁচামালজাতীয় পণ্য বন্দর থেকে খালাস নেয়া যাবে। তবে মাল কম থাকলেও যে পরিমাণ পণ্য থাকার কথা সেই পরিমাণ পণ্যেরই শুল্ক দিতে হবে? একই দেশে দুই ধরনের নিয়ম। মাল বেশি থাকলে জরিমানা দিতে হবে, আবার ওই ট্রাকে যে পরিমাণ মাল থাকার কথা তার চেয়ে কম থাকলেও অতিরিক্ত ডিউটি দিতে হবে। এটি কেমন নিয়ম? ২৪ ঘণ্টার মধ্যে চলমান এই সমস্যার সমাধান না হলে ব্যবসায়ীদের কোটি কোটি টাকার ক্ষতি হবে।’
তিনি আরও বলেন, ‘মালামাল বেশি আসলে অতিরিক্ত শুল্ক দিতে হয়। কম আসলে কেন শুল্ক কম নেয়া হবে না। আমাদের ওপর এভাবে হয়রানি করলে এ পথ দিয়ে আমরা আমদানি-রফতানি কার্যক্রম বন্ধ রাখবো। তা ছাড়া বৃহস্পতিবার সন্ধ্যার পরে বেনাপোল কাস্টম হাউজে এ বিষয় নিয়ে সিদ্ধান্ত দেয়ার মতো কেউ ছিলেন না। সন্ধ্যার পরপরই সবাই বেনাপোল ছেড়ে ঢাকায় চলে গেছেন। কারণ তাদের সবার পরিবার ঢাকায় থাকে।’
এ বিষয়ে বেনাপোল কাস্টমসের যুগ্ম কমিশনার সাফায়েত হোসেন জানান, এনবিআরের নতুন আইন তারা কার্যকর করছেন। তবে কয়েকজন আমদানিকারক অভিযোগ করে পণ্য খালাস নিচ্ছেন না। অল্প কয়েকজন খালাস নিয়েছেন। তবে যারা পণ্য খালাস নেননি শুক্র ও শনিবার সাপ্তাহিক বন্ধ থাকাই, তাদের বিষয়ে আগামী রোববার ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ সিদ্ধান্ত নেবে।#
সংবাদটি ভালো লাগলে শেয়ার করুন

বিষয়: * বেনাপোল
সর্বশেষ সংবাদ