ইতিহাস গড়ে সেমিফাইনালে আফগানিস্তান, বাংলাদেশের লজ্জাজনক বিদায়

সমীকরণ একদম সহজ। বাংলাদেশকে যেকোনো ব্যবধানে হারালেই টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের সেমিফাইনালে উঠে যাবে আফগানিস্তান। এবার রোমাঞ্চ জাগানিয়া ম্যাচে ৮ রানের জয়ে শেষ চারে উঠে গেল আফগানরা। মঙ্গলবার (২৫ জুন) সেন্ট ভিনসেন্টের কিংসটাউনে টস জিতে ব্যাটিংয়ে নেমে নির্ধারিত ২০ ওভারে ৫ উইকেট হারিয়ে ১১৫ রান তুলে আফগানিস্তান। লক্ষ্য তাড়া করতে নেমে ১৭ দশমিক ৫ ওভারে সবকটি উইকেট হারিয়ে ১০৫ রানে থামে বাংলাদেশ।
আফগানদের ছুঁড়ে দেওয়া মামুলি লক্ষ্য তাড়া করতে নেমে ইনিংসের শুরুতেই ধাক্কা খায় বাংলাদেশ। রানের খাতা খোলার আগেই প্যাভিলিয়নে ফেরেন তানজিদ হাসান তামিম।
এরপর দলীয় ৫০ পেরোনোর আগেই ৪ উইকেট খুইয়ে বসে লাল-সবুজেরা। অধিনায়ক শান্ত ৫ বলে ৫, সৌম্য ১০ বলে ১০ এবং ডাক মেরে প্যাভিলিয়নে ফেরেন সাকিব আল হাসান। সতীর্থদের আসা-যাওয়ার মিছিলে একপ্রান্ত আগলে রেখে খেলতে থাকেন লিটন দাস। এরপর দ্রুতই আরও ৩ উইকেট হারিয়ে বসে বাংলাদেশ। সতীর্থদের ব্যর্থতার দিনে ৪১ বলে সান্ত্বনার হাফসেঞ্চুরি তুলে নেন লিটন। লিটন উইকেট থিতু হলেও তাসকিন আহমেদ ও মোস্তাফিজুর রহমানকে ফিরিয়ে আফগানদের জয়ের বন্দরে নোঙ্গর করান নাভিন উল হক। শেষ পর্যন্ত ১৭ দশমিক ৫ বলে ১০৫ রানে থামে বাংলাদেশের ইনিংস। ৪৯ বলে ৫৪ রানে অপরাজিত থাকেন লিটন।
আফগানদের হয়ে ৪টি করে উইকেট নেন নাভিন ও রশিদ খান। এর আগে, ব্যাটিংয়ে নেমে সর্তক শুরু করেন দুই আফগান ওপেনার জাদরান-গুরবাজ। ইনিংসের প্রথম পাওয়ার প্লেতে কোনো দলই ফায়দা লুফে নিতে পারেনি। টাইগার বোলারদের আঁটসাঁট বোলিংয়ে প্রথম ৬ ওভারে মাত্র ২৭ রান তোলে আফগানরা। পাওয়ারপ্লের পর আক্রমণে এসেছিলেন সাকিব। তার প্রথম ৫ বল থেকে এসেছিল ৩টি সিঙ্গেল। এরপর ফুললেংথে পেয়ে ক্রিজ ছেড়ে বেরিয়ে এসে সাইটস্ক্রিন বরাবর ছক্কা মারেন গুরবাজ। এরপর বিশ্বকাপ ইতিহাসে প্রথম জুটি হিসেবে একই আসরে ৪ বার ৫০ পেরোয় গুরবাজ-ইব্রাহিম। তবে ইনিংসের ১১তম এসে ভাঙে এই জুটি রিশাদ।
রিশাদকে জায়গা বানিয়ে তাকে খেলতে চেয়েছিলেন ইব্রাহিম। তবে ঠিকমত হয়নি। লং অফে দুর্দান্ত ক্যাচ নেন তানজিম হাসান। ২৯ বলে ১৮ রান করলে এই ওপেনার ফিরলে ৫৯ রানে ভাঙে আফগানিস্তানের ওপেনিং জুটি। এরপর বেশ চাপে পড়ে আফগানিস্তান। ইনিংসের ১৬তম ওভারে এসে কট বিহাইন্ডের ফাঁদে ফেলে আজমতউল্লাহ ওমারজাইকে বিদায় করেন মোস্তাফিজুর রহমান। ফেরার আগে ১২ বলে ১০ রান করেন তিনি। পরের ওভারে আক্রমণে এসেই জোড়া উইকেট নিজের ঝুলিতে পুড়েন রিশাদ। প্রথমে উইকেটে জমে যাওয়া রহমানউল্লাহ গুরবাজকে বিদায় করেন।
রিশাদকে অফ সাইডে তুলে মারতে গিয়ে ডিপ কাভারে সৌম্যর হাতে ধরা পড়েন এই ওপেনার। ফেরার আগে ৫৫ বলে করেন ৪৩ রান তিনি। এরপর গুলবিদনকেও ফেরান রিশাদ। সৌম্যই ফের ক্যাচ নেন। দুর্দান্ত এক ড্রাইভে সেই ক্যাচ নেন সৌম্য। ইনিংসের ১৮তম ওভারে মোহাম্মদ নবিকে প্যাভিলিয়নে পাঠান তাসকিন আহমেদ। তাসকিনের শর্ট লেংথের সিম-আপ ডেলিভারিতে পুল করতে চেয়েছিলেন নবি। তবে সেভাবে হয়নি। মিড অফে সময় নিয়ে ক্যাচ নেন শান্ত।
শেষ দিকে রশিদের ঝোড়ো ইনিংসে ১১৫ রানের পুঁজি পায় আফগানরা। ১০ বলে ১৯ রানে অপরাজিত থাকেন আফগান অধিনায়ক। বাংলাদেশের হয়ে সর্বোচ্চ ৩ উইকেট নেন রিশাদ। এ ছাড়া তাসকিন ও মোস্তাফিজের শিকার একটি করে উইকেট।
সংবাদটি ভালো লাগলে শেয়ার করুন

বিষয়: * আফগানিস্তান * টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ * বাংলাদেশ
সর্বশেষ সংবাদ