নীলফামারীতে কোরবানির জন্য প্রস্তুত ২ লাখ ৭৬ হাজার ২০১টি পশু
দেশে আগামী ১৭ জুন পালিত হবে ইসলাম ধর্মাবলম্বীদের বড় উৎসব পবিত্র ঈদুল আজহা। এর অর্থ হলো ত্যাগের করা। এ উৎসব উপলক্ষে নীলফামারীতে কোরবানির জন্য প্রস্তুত রয়েছে ২ লাখ ৭৬ হাজার ২০১টি পশু। পশু পালনকারী ও খামারিরা প্রাকৃতিক উপায়ে স্বাস্থ্যসম্মত গরু ছাগল মোটা-তাজা করেছেন। সকল প্রস্তুতি শেষে এবার হাটে তুলবেন এসব পশু। অনেক ব্যবসায়ী আবার খামারিদের কাছেও আসছেন পশু কিনতে। তবে হাট-বাজার জমতে আরও কয়েক দিন দেরি হবে বলে জানান খামারি ও গৃহস্থলীরা।
জেলা প্রাণিসম্পদ অফিসের তথ্য অনুযায়ী, এবার কোরবানির ঈদের জন্য জেলায় বাণিজ্যিক ও পারিবারিক খামার রয়েছে ৩০ হাজার ৯৭২টি। এসব খামারে শাহীওয়াল, অষ্ট্রেলিয়ান, ফ্রিজিয়ান, ক্রোস, মুন্ডসহ বিভিন্ন জাতের গরু আছে। এছাড়াও ছাগলের মধ্যে রয়েছে হারিয়ানা, তোতাপুড়ি, রামছাগল ও দেশি জাতের। গরু-ছাগল মিলে রয়েছে ২ লাখ ৭৬ হাজার ২০১টি। এ বছর জেলায় গরুর চাহিদা ১ লাখ ৪৩ হাজার ১০৯টি, যা চাহিদার চেয়ে ১ লাখ ৩৩ হাজার ৯২টি গরু-ছাগল বেশি পালন করা হয়েছে। এর মধ্যে ষাঁড় ৪৮ হাজার ৩৮৫টি, বলদ ৩ হাজার ৮৪৯টি, গাভী ২৩ হাজার ৫৯৮টি, মহিষ ৩৩টি, ছাগল ১ লাখ ৮৬ হাজার ১৫১টি, ভেড়া রয়েছে ১৪ হাজার ১৯৪টি। এসব মজুদ রয়েছে গৃহস্থলী ও খামারিদের ঘরে।সরেজমিনে সদরের খোকশাবাড়ী ইউনিয়নের গৃহস্থলী গোলাম মোস্তফার সাথে কথা হলে তিনি বলেন, এক বছর আগে দুটি ষাড় গরু এক লক্ষ টাকায় কিনে নেই। গরুকে খাবার হিসেবে খর,কাঁচা ঘাস, খৈল, ভুট্টা এবং ধানের কুড়াসহ প্রাকৃতিক খাবার দিয়ে বড় করেছি। গরু ব্যবসায়ীরা বাড়িতে এসে দুইটি গরু দুই লাখ ৪০ হাজার টাকা দাম হাঁকিয়েছেন। তবে আশা করছি আড়াই লাখ টাকায় বিক্রি হবে গরু দুটি। যাবতীয় খরচ বাদ দিয়ে আমার প্রায় এক লক্ষ টাকা লাভ হবে।
চওড়া ইউনিয়নের গরু খামারি রাশেদ ইসলাম বলেন, কোরবানির জন্য ২২টি ষাঁড় দেশীয় পদ্ধতিতে লালন-পালন করি। গরুগুলো অনেক বড় ও মোটাতাজা হয়েছে। ইতিমধ্যে গরু ব্যবসায়ীরা খামারে এসে দরদাম করছেন। বর্তমান বাজার অনুযায়ী আমার প্রায় ৭-৮ লক্ষ টাকা লাভ হবে। বাজারে দেশি গরুর চাহিদা বেশি থাকায় এবার লাভ বেশি হবে বলে আশা করছি।নীলফামারী জেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ডা. মোঃ সিরাজুল হক বলেন, এবার জেলায় চাহিদার চেয়ে প্রায় দ্বিগুন কোরবানির পশু প্রস্তুত রয়েছে। জেলার চাহিদা মিটিয়ে বাইরেও বিক্রি করতে পারবেন পশু খামারী ও ব্যাবসায়ীরা। এবছর প্রাকৃতিক উপায়ে গরু মোটাতাজাকরণের জন্য, উপজেলাভিত্তিক তালিকাভুক্ত খামারিদের সারা বছর প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়েছে।