জাতির পিতার ১০৪তম জন্মবার্ষিকী ও জাতীয় শিশু দিবস উদযাপন
শরীয়তপুর প্রতিনিধি :
বঙ্গবন্ধুর স্বপ্ন ধরে, আনব হাসি সবার ঘরে” জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান-এঁর ১০৪ তম জন্মবার্ষিকী ও জাতীয় শিশু দিবস-২০২৪ উদযাপন উপলক্ষ্যে ইসলামিক সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান, কোরআন খতম, র্যালী, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধুর জীবন ও কর্ম শীর্ষক আলোচনা সভা ও দোয়া অনুষ্ঠান অনুষ্ঠিত হয়েছে।
১৭ মার্চ রবিবার সকাল ৮টায় শরীয়তপুর ইসলামিক ফাউন্ডেশনের আয়োজনে সদর উপজেলা মডেল মসজিদ সভাকক্ষে অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়।
শরীয়তপুর ইসলামিক ফাউন্ডেশনের উপপরিচালক কৃষিবিদ ড. মুহাম্মদ আবু তালহা’র সভাপতিত্বে প্রধান অতিথি ছিলেন, সদর উপজেলা নির্বাহী অফিসার মোঃ মাইন উদ্দিন।
আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে, তিনি ধর্মীয় শিক্ষক ও ইমামদের উদ্দেশ্যে বলেন, বাঙ্গালী জাতির পিতা, স্বাধীনতার মহানায়ক তাঁকে যদি নতুন প্রজন্মের কাছে দাঁড় করাতে হয়। তা-হলে তার জন্মবার্ষিকী সহ বিভিন্ন দিবসে আলোচনা-অনুষ্ঠান আয়োজন করা দরকার আছে। যাতে করে নতুন প্রজন্মের কাছে ম্যাসেজটা পৌঁছায়। যেন চিনতে পারে, তিঁনি আসলে কি ছিলেন। তাঁর কি অবদান ছিল এই রাষ্ট্রের জন্য। বিশেষ করে ইমামগণ জুমা বারে যখন গার্ডিয়ানরা কিংবা অন্যান্য সময় যখন আপনাদের গণশিক্ষা কার্যক্রমের শিক্ষার্থীরা আসে সেই সময় আমাদের তখন নৈতিক শিক্ষার প্রতি গুরুত্ব দিতে হবে। আমাদের যে ইসলামের ইতিহাস আছে। বিভিন্ন নবীদের ইতিহাস আছে এবং পবিত্র কুরআন থেকে আমরা আলোচনা করব। পাশাপাশি সমাজে কি ধরনের সমাজিক অপরাধ চলছে। সমাজিক অপরাধ গুলো কি কি সেগুলো তুলে ধরবো। এগুলোর কারণে কি ধরনের শাস্তি হতে পারে সেগুলো তুলে ধরবো।
এসময় তিনি আল্লাহর নিদর্শন ধংসপ্রাপ্ত জাতীদের কথা তুলে ধরে বলেন,নীতি নৈতিকতার অবক্ষয়ের কারণে আল্লাহর নির্দেশন এসব গজবপ্রাপ্ত স্থান গুলো রেখেছেন আমাদের শিক্ষা নেয়ার জন্যে। প্রতিটি পরিবারে, স্কুলে, আমাদের কাছে যারা আসবে। মসজিদে যারা আসবে,তাদেরকে একটু ধরে-ধরে আলাপ আলোচনা করলে। কন্টিনিউয়াস বলতে থাকলে,এক সময় গিয়ে মাথার ভেতর ঢুকবে। না, আসলেই তো এটা অপরাধ। আজকে জাতীর পিতার জন্মদিনে এটাই মূল শিক্ষা হওয়া উচিৎ।
তিনি বঙ্গবন্ধু সম্পর্কে বলেন, তিনি একজন মানুষ হিসাবে, তার জীবনটা মানুষের জন্য বিলিয়ে দিয়েছেন। দীর্ঘ ১৩ বছর জেলে কাঁটিয়েছে। তাঁর জীবনে যৌবন বলে কিছু ছিল না। আনন্দ, আরাম, আয়েশ কিছু ছিল না। তিনি চাইলেই পারতেন। কিন্তু তিনি চান নাই। শুধু এদেশের মানুষের জন্য চেয়েছে। কত স্বপ্ন ছিল তাঁর মধ্যে। আজকে আমরা তাঁর জীবনী থেকে শিক্ষা লাভ করতে চাই। আজকে যে এই জাতীয় শিশু দিবস, এই শিশুদিবসে পরবর্তী প্রজন্মের মাঝে এই ম্যাসেজ গুলি ছড়িয়ে দিতে চাই। যাতে করে আমরা ম্যাসেঞ্জার হিসাবে আরও কিছু ম্যাসেজ ভবিষ্যৎ প্রজন্মের কাছে পৌঁছে দিতে চাই। এই হোক আমাদের অঙ্গিকার। উপস্থিত সকলকে ও প্রতিযোগিতায় বিজয়ীদের অভিনন্দন জনিয়ে তিনি তার বক্তৃতা শেষ করেন।
সভাপতির বক্তব্যে উপপরিচালক কৃষিবিদ ড. মুহাম্মদ আবু তালহা বলেন,আসলে জন্মদিন পালনের বিষয় নয়। আমরা যে রাষ্ট্রে বসবাস করতেছি। যার জন্ম না হলে এই স্বাধীন বাংলাদেশের সৃষ্টি হতো না। যে মানুষটি একেবারে শৈশব থেকে,এদেশের মানুষের অধিকার আদায়ের জন্য সংগ্রাম করেছেন। সেই মানুষটির সম্পর্কে কিছু আলোচনা করা। একই সাথে তাঁর এই জন্মদিনটাকে জাতীয় শিশু দিবস হিসাবে বরণ করা হয়। যাতে আমাদের যারা প্রজন্ম, শিশুরা, বাচ্চারা তারা যাতে তাঁর সম্পর্কে জানতে পারে। জানার বিষয় অবগত হতে পারে। আজকে আমাদের সমাজে কিশোর গ্যাং সৃষ্টি হয়েছে। আজকে যদি কিশোরদের ভেতর সত্যিকারের মূল্যবোধ, চেতনা, নৈতিক শিক্ষা এগুলো থাকলে তারা কখনো খারাপ কাজে ধাবিত হতো না। তাই যারা মহামনস্বী আছে, তাদের সম্পর্কে, তাদের জিবনী আমাদের সন্তানদের যেন শিক্ষা দিতে পারি। তার জন্যই এই আয়োজন। জেলায় শরীয়তপুর ইসলামিক ফাউন্ডেশনের ৭৭৫ টা কেন্দ্র আছে। প্রতিটা কেন্দ্র শিশুদের নিয়ে আপনারা দোআ করছেন। তার জন্য আপনাদের ধন্যবাদ। সাড়া বাংলাদেশে প্রায় ৭৩ হাজার ৮ শ’কেন্দ্র আছে। এই সকল কেন্দ্রে আজকে দোআ অনুষ্ঠান করা হয়েছে। আসলে একটা মানুষ মারা যাওয়ার পরে সব চেয়ে বেশী যে জিনিস টার প্রয়োজন। যারা জীবিত থাকে তার জন্য দোআ করা। দোআ করলে তার রূহের আত্মা শান্তি পাবে। আমরা ফুল দিয়ে হয়তো তার সম্মান প্রদর্শন করতে পারি। ইসলামীক ফাউন্ডেশন আসল কাজটাই করেছে। এসময় তিনি সবাইকে রমজান মাস উপলক্ষে ইসলামীক ফাউন্ডেশনের রিসিট বইয়ের মাধ্যমে জাকাত আদায়ের অনুরোধ করেন।
অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি,জনতা ব্যাংক, পিএলসি, শরীয়তপুর শাখা, ব্যবস্থাপক আবু সালাম,শরীয়তপুর ইসলামিক ফাউন্ডেশন, ফিল্ড অফিসার মোঃ শাহাবুদ্দিন, ইসলামিক ফাউন্ডেশন ফিল্ড সুপারভাইজার মোঃ লুৎফর রহমান প্রমূখ।