রাজধানী ও আশপাশের এলাকা থেকে কিশোর গ্যাং গ্রুপের ৩৭ সদস্য আটক

রাজধানী ও আশপাশের এলাকায় সাড়াশি অভিযান চালিয়ে কিশোর গ্যাং গ্রুপের ৩৭ জন সদস্যকে আটক করেছে র‌্যাপিড এ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র‌্যাব)।র‌্যাব জানিয়েছে,আটককৃত কিশোর গ্যাং-007 গ্রুপ,বাবা গ্রুপ,জাউরা গ্রুপ,ডি কোম্পানি ও জাহাঙ্গীর গ্রুপসহ বিভিন্ন গ্রুপের সদস্য।এদের মধ্যে ০০৭ গ্রুপের দলনেতা আল-আমিন (২৪),জাউরা গ্রুপের দলনেতা মাহাবুব (১৯),বাবা গ্রুপের দলনেতা সাদ (২২),ভোল্টেজ গ্রুপের-মনা (২৮), ডি কোম্পানি-(লন্ডন পাপ্পু চালায়) আকাশ ও আমির হোসেন গ্রুপ’ জাহাঙ্গীর গ্রুপ ওরফে বয়রা জাহাঙ্গীর।

গোপন সংবাদের ভিত্তিতে র‌্যাব-১ এর একাধিক দল গতকাল বৃহস্পতিবার দিবাগত রাত ৭ টা থেকে রাত ১০ টা পর্যন্ত রাজধানী ঢাকার মহাখালী,বনানী,বিমানবন্দর,টঙ্গি ও গাজীপুর এলাকায় একাধিক স্হানে অভিযান চালিয়ে  তাদের আটক করে।আজ শুক্রবার সকাল ১১ টায়  র‍্যাব-১,উত্তরা কার্যালয়ে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে

র‍্যাব-১ এর  কমান্ডিং অফিসার (সিও) (অধিনায়ক) লেফটেন্যান্ট কর্নেল মোস্তাক আহমেদ এসব তথ্য জানান।

সংবাদ সম্মেলনে র‌্যাব-১ এর সহকারী পুলিশ সুপার এবং সহকারী পরিচালক (মিডিয়া অফিসার) মোঃ মাহফুজুর রহমানসহ র‌্যাবের অন্যান্য উধর্বতন কর্মকর্তারা এসময় উপস্হিত ছিলেন।

গ্রেফতারকৃতরা হলো,রাসেল (১৭),আরাফাত (১৭),রবিন (১৫),আল-আমিন (২৪), ইসলাম (২৯),জুয়েল (২২),রবিউল (১৬),মুরাদ (১৭),মাহাবুব (১৯),সাদ (২২), রোহান(২২),মনা (২৮),হৃদয় (২০),ওবায়েদ (১৮),মোঃ জিসান (১৯),মোঃ আকাশ (৩০), মোঃ ঈমন (২০),মোঃ রমজান (২১),মোঃ সজিব (১৮),মোঃ শাকিব (২২),মোঃ রাজিব (১৯),মোঃ আমির হোসেন (৩৬),শাহজাহান সাজু ওরফে রাসেল (৪৫),মোঃ জিলাদ মিয়া (২০),মোঃ হৃদয় (১৯),আঃ রায়হান (১৫),মোঃ বাবু মিয়া (২২),মোঃ শাহজাহান (২১), মোঃ জালাল মিয়া (২৮),লামিম মিয়া (১৫),মোঃ রাকিব (১৬),মোঃ হিরা মিয়া (১৭), ইমরুল হাসান (১৭), মোঃ সাকিন সরকার রাব্বি (১৮), মোঃ সুজন মিয়া (১৯),খাইরুল (১৯) ও রাহাত (১৯)।

এসময় তাদের নিকট থেকে ৫০০ গ্রাম গাজা,২৪ টি মোবাইল,১ টি ব্লেড,১ টি কুড়াল,১ টি পাওয়ার ব্যাংক, ৫ টি রড,১৬ টি চাকু,৩ টি লোহার চেইন,১ টি হাতুড়ী,১ টি মোটরসাইকেল এবং নগদ ২৪ হাজার ২৫০ টাকা উদ্ধার করা হয়।

প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে জানা যায়,কিশোর গ্যাং ‘০০৭ গ্রুপের দলনেতা আল-আমিন (২৪), জাউরা গ্রুপের দলনেতা মাহাবুব (১৯), বাবা গ্রুপের দলনেতা সাদ (২২), ভোল্টেজ গ্রুপের- মনা (২৮),ডি কোম্পানি-(লন্ডন পাপ্পু চালায়) আকাশ ও আমির হোসেন গ্রুপ’ জাহাঙ্গীর গ্রুপ ওরফে বয়রা জাহাঙ্গীর গ্রুপ অন্যতম সক্রিয় সদস্য।প্রত্যেক গ্রুপের আনুমানিক সদস্য ১০/১৫ জন।তারা টাকার বিনিময়ে যে কোন পক্ষের হয়ে মারামারি, দখলবাজি,পিকেটিং,ছিনতাই,ডাকাতিসহ বিভিন্ন অনৈতিক কাজে লিপ্ত ছিল বলে অকপটে স্বীকার করেছে।

জিজ্ঞাসাবাদে তারা  আরও জানান,গ্রেফতারকৃতদের মধ্যে ১৭ জনের বিরুদ্ধে বিভিন্ন থানায় চুরি, ছিনতাই, চাঁদাবাজি, মাদক, অস্ত্র, ধর্ষণ ও হত্যা চেষ্টাসহ একাধিক মামলা রয়েছে বলে জানা যায়।

সংবাদ সম্মেলনে র‌্যাব জানান,র‌্যাব-১ এর গোয়েন্দা অনুসন্ধানে রাজধানীর মহাখালী, বিমানবন্দর,বনানী,গাজীপুর ও টঙ্গি থানার এলাকায় কতিপয় কিশোর গ্যাং এর কার্যক্রম সংক্রান্ত তথ্য পাওয়া যায়।তারা দীর্ঘদিন যাবৎ এলাকায় আধিপত্য বিস্তারের নামে পেশিশক্তি প্রদর্শন করে আসছিল।তারা মাদক সেবন,সাইলেন্সারবিহীন মোটরসাইকেল চালিয়ে বিকট শব্দ করে জনমনে ভীতির সঞ্চার,স্কুল-কলেজে বুলিং,র‌্যাগিং,ইভটিজিং, ধর্ষণ,ছিনতাই,ডাকাতি,সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে অশ্লীল ভিডিও শেয়ারসহ নানাবিধ অনৈতিক কাজে লিপ্ত,যা আমাদের ভবিষ্যৎ প্রজন্মকে নিশ্চিত ক্ষতির মুখে ধাবিত করছে।

এলাকার কিছু প্রভাবশালী রাজনৈতিক দলের ব্যক্তিরা কিশোর গ্যাং গ্রুপের সদস্যদের মদদ দিচ্ছেন।ওই সকল ব্যক্তিরা (তারা) নজরধারীতে থাকে কি না সাংবাদিকদের এমন প্রশ্নের জবাবে লেফটেন্যান্ট কর্নেল মোস্তাক আহমেদ বলেন,সে যেই হউক,আইনের দৃষ্টিতে অপরাধী।সে ওই কাজের মধ্যে তার সম্পৃক্ততা থাকা কিংবা তার অপরাধ প্রমাণিত হলে তাকে অবশ্যই আমরা আইনের আওতায় নিয়ে আসবো।

অপর এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন,এই ছয়টি গ্রুপের অনেক সদস্য অপতৎপরতায় জড়িত রয়েছে।এটা র‌্যাব-১ এর দায়িত্ব।তারা আপাতত র‌্যাবের গোয়েন্দা নজর ধারীতে আছে।তাদেরকেও আইনের আওতায় নিয়ে আসা হবে।গ্রেফতারকৃতদের বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় আইনানুগ ব্যবস্থা ব্যবস্হা গ্রহন করা হয়েছে।

সংবাদটি ভালো লাগলে শেয়ার করুন