পাচারের নিরাপদ রুট কায়বা ও বাগআঁচড়া শার্শায় শতাধিক স্পটে মাদকের কারবার রমরমা
বেনাপোল প্রতিনিধি:
যশোরের- শার্শা উপজেলা মাদক চোরাচালানের নিরাপদ রুট হিসেবে ব্যবহৃত হচ্ছে যশোরের শার্শা উপজেলার কায়বা ও বাগআঁচড়া। বাগআঁচড়াসহ বিভিন্ন পয়েন্টে অবাধে আসছে ও বিক্রি হচ্ছে স্বর্ণ, ফেনসিডিলি, হেরোইন, ইয়াবা ও দেশি চোলাই মদ।
সরেজমিন দেখা যায়, উপজেলার ছয়টি ইউনিয়ন ও পৌরসভা এলাকার প্রায় শতাধিক পয়েন্টে অবাধে মাদক বিক্রি হচ্ছে। কায়বা ইউনিয়নের রাড়ীপুকুর, বাগুড়ী, পাড়ের কায়বা, দাদখালী, পশ্চিম কোটা, ধানতাড়া, বেলতলা ও মহিষা এলাকায় মাদক কেনাবেচা চলছে। বাগআঁচড়া ইউনিয়নের বসতপুর, সাতমাইল, পিপড়াগাছী, সামটা, টেংরা, জামতলা ও আমতলায় হচ্ছে মাদকের রমরমা কারবার।
উলাশী ইউনিয়নের রামপুর, কন্যাদহ, বেনেখড়ী, মহিষাকুড়া, কাশিয়াডাঙ্গায় মদ বিক্রি হচ্ছে। শার্শা ইউনিয়নের নাভারণ রেল বাজার, রেল বস্তি, দক্ষিন বুরুজ বাগান, যাদবপুর, কাজিরবেড়, শ্যামলাগাছী ও শার্শা সদরে মাদক বিক্রি হয়। বেনাপোল পৌরসভার, তালসারী, ছোট আচড়া, বড় আচড়া, গাজীপুর, নামাজগ্রাম, কাগমারী, কাগজপুকুর, গয়ড়া ও সাদীপুরেও মাদকদ্রব্য বিক্রি হচ্ছে। ডিহি ইউনিয়নের সাড়াতলা, পাকশিয়া, টেংরালী, কাশিপুর, ব্যাংদা, শালখোনা ও ডিহিতেও মাদক বিক্রি হয়।
স্থানীয়রা জানান, শার্শার কায়বা ইউনিয়নের রাড়ীপুকুর গ্রামের কুখ্যাত মাদক ব্যবসায়ী জুবায়েদ আহমেদ চঞ্চল এখানকার মাদক ব্যবসায়ের হোতা। চঞ্চল বাড়ি ছেড়ে বেনাপোলে থাকলেও প্রতিদিন খুচরা মাদক ব্যবসায়ীদের কাছে মাদক পৌঁছে দিতে শার্শার বিভিন্ন এলাকায় মোটরসাইকেল ও প্রাইভেটকারে ছুটে বেড়ায়। কায়বা ইউপির সাবেক চেয়ারম্যান হাসান ফিরোজ আহমেদ টিঙ্কু জানান, জুবায়েদ আহমেদ চঞ্চলের নামে চাঁদাবাজি ও অস্ত্র মামলা রয়েছে। সাতক্ষীরা ও যশোর আদালতে মামলা বিচারাধীন।
নাম না প্রকাশের শর্তে শার্শা থানা পুলিশের কাছে আটক এক মাদক ব্যবসায়ী জানান, তিনিসহ শার্শার রাড়ীপুকুর গ্রামের আজিবরের ছেলে সেলিম, সোবাহানের ছেলে শিমুল, রবিউলের ছেলে জাহাঙ্গীর, রাজু, পশ্চিম কোটার নজরুলের ছেলে রিপন, বেলতলার মনি, দক্ষিন বুরুজ বাগান গ্রামের মাসুম, মন্টু, হ্যাপি, হাসান, সাতমাইলের রানা, ইকরামুল আরো অনেককে ইয়াবা সরবরাহ করে জুবায়েদ আহমেদ চঞ্চল। সম্প্রতি চঞ্চলের মাদকের ডিপোতে হানা দেয় আইনশৃংখলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরা। সেখান থেকে মাদক, নগদ টাকা, মোটরসাইকেল ও মোবাইল ফোন উদ্ধার হলেও চঞ্চলকে আটক করতে পারেনি।
উপজেলা আইনশৃংখলা কমিটি ও মাদক প্রতিরোধ কমিটির সদস্য চেয়ারম্যান কবির উদ্দিন আহমেদ তোতা বলেন, যুব সমাজকে ধ্বংসের হাত থেকে রক্ষায় মাদক ব্যবসায়ীদের নামের তালিকা করে আইনের আওতায় নিয়ে আসতে হবে।
বেনাপোল পোর্ট থানার অফিসার ইনচার্জ সুমন ভক্ত জানান, আমি যোগদানের পর থেকে মাদক নির্মূলে সাঁড়াশি অভিযান পরিচালনা করে আসছি। ইতিমধ্যে কয়েকজন মাদক ব্যবসায়ী ও গডফাদারদের আটক করে জেল হাজতে পাঠানো হয়েছে। আরেকটি সাব ইন্সপেক্টর লিখন কুমার সরকার এর নেতৃত্বে একটি টিম অভিযান পরিচালনা করে আসছে।
শার্শা থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মনিরুজ্জামান বলেন, আমি যোগদানের পর থেকে মাদক নির্মূলে সাঁড়াশি অভিযান পরিচালনা করে আসছি। ইতিমধ্যে কয়েকজন মাদক ব্যবসায়ী ও গডফাদারদের আটক করে জেল হাজতে পাঠানো হয়েছে।