জবি ছাত্রলীগের ‘বঙ্গবন্ধু, মুক্তিযুদ্ধ ও বাংলাদেশ’ শীর্ষক প্রশিক্ষণ কর্মশালা অনুষ্ঠিত

 

 জবি প্রতিনিধি:
বাংলাদেশ ছাত্রলীগ জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় শাখার আয়োজনে ‘বঙ্গবন্ধু, মুক্তিযুদ্ধ ও বাংলাদেশ’ শীর্ষক প্রশিক্ষণ কর্মশালা অনুষ্ঠিত হয়েছে। রোববার বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় মিলনায়তনে এ প্রশিক্ষণ কর্মশালা অনুষ্ঠিত হয়। এতে প্রধান অতিথি হিসেবে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. সাদেকা হালিম।
এসময় উপাচার্য অধ্যাপক ড. সাদেকা হালিম বলেন, “অসমাপ্ত আত্মজীবনী বইটিতে কয়েকটি দর্শন রয়েছে। এই দর্শনটাকে যদি আমরা অনুধাবন করতে পারি তাহলে বাংলাদেশ ছাত্রলীগকে আমরা অনেকদুর এগিয়ে নিয়ে যেতে পারবো। এই বইটির বিভিন্ন ডাইমেনশন রয়েছে- সেটা হচ্ছে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু যখন তরুণ ছিলেন তাঁর জীবনটা কেমন ছিলো, তার আগে কিশোর থেকে তরুণ হয়ে ওঠা, তাঁর বিয়ে, ধর্মের সাথে সম্পর্ক, টুঙ্গীপাড়ায় পাড়াপড়শির সাথে কি সম্পর্ক, অন্যান্য ধর্মালম্বী মানুষের সাথে কি সম্পর্ক তার সবই রয়েছে। এমন একজন যোগ্য রাজনীতিবীদ হওয়ার পথটা যে কর্ন্টকাকীর্ণ ছিল সেটার একটা প্রতিফলন অসমাপ্ত আত্মজীবনীতে রয়েছে।”
শিক্ষার্থীদের উদ্দেশ্যে তিনি বলেন, ‍”আমার আহ্বান থাকবে শিক্ষার্থীরা যেন বইটির দার্শনিক মনোভাব আত্মস্ত করতে পারে। বর্তমান সময়ে ছাত্রলীগের জ্ঞানের পরিধি বাড়ছে। রাজনীতি থাকবে, কিন্তু সেটা হিংসা বিদ্বেষ, সংঘাত, সহিংসতা মুক্ত হতে হবে। আমাদের লক্ষ্য রাখতে হবে আমরা যদি কলম নিয়ে যুদ্ধ করতে পারি তাহলে ভালো প্রার্থী, বিতার্কিক হতে পারবো। আর সেটার মাধ্যমে আমরা প্রতিপক্ষকে বুঝাতে সক্ষম হবো।”
এসময় তিনি বলেন, “আমি নিজেই যদি বিভিন্ন সুযোগ-সুবিধা ভোগ করি তাহলে আমার শিক্ষার্থীদের সাথে আমার দূরত্ব তৈরি হবে, আমি বিশ্বাস করি-জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা আমার সন্তান তুল্য, তারাই আমার খেয়াল রাখবে। তাই আমার কোন প্রটোকল লাগে না।”
মেয়ে শিক্ষার্থীদের উদ্দেশ্যে তিনি বলেন, “বঙ্গমাতা বেগম ফজিলাতুন্নেছা সঙ্গী হিসেবে সারাজীবন তাকে সাহায্য-সহযোগিতা করেছিলেন বলেই- শেখ মুজিবুর রহমান বঙ্গবন্ধু হয়ে ওঠতে পেরেছিলেন। তিনি সর্বদা নারীদের সম্মান করতেন। জাতি পিতা মুক্তিযুদ্ধে নির্যাতিত নারীদের বীরাঙ্গনা উপাধি দেন। আমাদেরকে মেয়েদের সম্মান করতে হবে।”
তিনি আরো বলেন, ‍”আমার পিতার রাজনৈতিক আদর্শ ছিলেন বঙ্গবন্ধু। তিনি ছিলেন একজন আন্তর্জাতিক মানের গবেষক, পণ্ডিত, শিক্ষক হয়েও বঙ্গবন্ধুর আদর্শে অনুপ্রাণিত হয়ে সারাজীবন কাজ করে গেছেন।”
তিনি বলেন, ‍”সংবিধানের যে ৪টি স্তম্ভ রয়েছে- গণতন্ত্র, সমাজতন্ত্র, জাতীয়তাবাদ, ধর্মনিরপেক্ষতা। আর সমাজতন্ত্রের বীজ হচ্ছে ইকুয়ালিটি এন্ড ইকুইটি অর্থাৎ সমাজের সকল শ্রেণির মানুষের ন্যায্যতা দিতে হবে। আমরা কোয়ালিটির দিকে যাই কিন্তু কোয়ানটিটি দিকে লক্ষ্য করি না।”
“বাংলাদেশ এখন শুধুমাত্র একটি স্বাধীন হওয়া ক্ষুদ্র রাষ্ট্র নয়, এটা অনেক শক্তিশালী, ক্রমবর্ধমান রাষ্ট্র হচ্ছে। ভূ-রাজনৈতিকভাবে বাংলাদেশ যে অবস্থান তাতে বিশ্বে আমরা অনেক গুরুত্ব বহন করি। আমাদের দেশে দারিদ্র্য জনগোষ্ঠী রয়েছে, কিন্তু আমাদের গৌরব রয়েছে। আমাদের অনেক সম্পদ রয়েছে, রয়েছে স্বকীয় পরিচিতি।”
তিনি বলেন, ‍”মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বিকল্প বাংলাদেশে তৈরি হয়নি, আর হবেও না। আমরা যে যার অবস্থান হতে দায়িত্ব পালন করে তাঁর হাতকে শক্তিশালী করতে পারি”
বাংলাদেশ ছাত্রলীগ জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি মো. ইব্রাহিম ফরাজির সভাপতিত্বে ও সাধারণ সম্পাদক এস এম আকতার হোসাইনের সঞ্চালনায় কর্মশালায় বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বিশ্ববিদ্যালয়ের ট্রেজারার অধ্যাপক ড. মো. হুমায়ূন কবীর চৌধুরী।
কর্মশালা শেষে প্রায় তিনশত শিক্ষার্থীর মাঝে বঙ্গবন্ধু রচিত ‘অসমাপ্ত আত্মজীবনী’ বইটি বিতরণ করা হয়। এসময় বাংলাদেশ ছাত্রলীগ জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের বিভিন্ন পর্যায়ের নেতৃবৃন্দসহ অন্যান্যরা উপস্থিত ছিলেন।
বই বিতরণ শেষে শাখা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক এস এম আকতার হোসাইন বলেন, বাঙালির মানসচেতনায় সময়ের দলিল অসমাপ্ত আত্মজীবনী। অসমাপ্ত আত্মজীবনীতে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের চিন্তার মগ্নতা গভীরভাবে রূপায়িত হয়েছে। অন্যদিকে নিজের রাজনৈতিক জীবন তখনকার সময়ের পটভূমিতে চমৎকারভাবে তিনি উঠিয়ে এনেছেন। বঙ্গবন্ধুকে গভীরভাবে জানতে হলে এবং ধারণ করতে হলে অসমাপ্ত আত্মজীবনী প্রতিটি শিক্ষার্থীকে অবশ্যই পাঠ করতে হবে। আমি শিক্ষার্থীদের অসমাপ্ত আত্মজীবনী পাঠ করার উদাত্ত আহ্বান জানিয়েছি।
সংবাদটি ভালো লাগলে শেয়ার করুন

বিষয়: * প্রশিক্ষণ কর্মশালা অনুষ্ঠিত