ফরিদপুর স্যুটকেসে উদ্ধার মরদেহটিকে যৌনপল্লীতে হত্যা করা হয়
রাজবাড়ী প্রতিনিধি:
ফরিদপুর শহরের নতুন বাসস্ট্যান্ড এলাকায় স্যুটকেসের ভিতর থেকে উদ্ধার হওয়া মরদেহের পরিচয় ও হত্যার রহস্য উদঘাটন করেছে পুলিশ। হত্যার শিকার হওয়া ব্যক্তি পাবনা সদরের নতুন গোহাইবাড়ি মহল্লার কাশেম প্রামানিকের ছেলে মিলন প্রামানিক (৩৯)। সে রাজবাড়ীর গোয়ালন্দ ঘাট এলাকায় ইটভাটার শ্রমিক হিসাবে কাজ করতেন। হত্যার দায়ে গ্রেফতারকৃত রোজিনা আক্তার ওরফে কাজল (৩২) দৌলতদিয়া যৌনপল্লীর রুবেল মাতুব্বরের বাড়ির ভাড়াটিয়া ও জনৈক সুজনের স্ত্রী।
মঙ্গলবার (৩০ জানুয়ারি) দুপুরে পুলিশ সুপারের কার্যালয়ে আযোজিত সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন পুলিশ সুপার মোহাম্মদ মোর্শেদ আলম।
সংবাদ সম্মেলনে তিনি বলেন, পাবনার মিলন প্রামানিকের সঙ্গে দৌলতদিয়া যৌনপল্লীর রোজিনা আক্তার ওরফে কাজল সম্পর্ক ছিল। এ সুবাদে রোজিনা বিভিন্ন সময়ে মিলনকে ৩ থেকে ৪ লাখ টাকা ধার দেন। এ পাওনা টাকা চাওয়াকে কেন্দ্র করেই মুলত তাদের মধ্যে দ্বন্দ্বের সৃষ্টি হয়। আর এ দ্বন্দ্বের জের ধরে গত শুক্রবার (২৬ জানুয়ারি) দিনগত গভীর রাতে রোজিনার ঘরে গলায় ওড়না পেঁচিয়ে শ্বাসরোধ করে হত্যা করে মিলনকে। হত্যার পর মাথা ও পা পেঁচিয়ে একটি স্যুটকেসে ভরে একটি রিকশায় করে গোয়ালন্দ বাসস্ট্যান্ডে নিয়ে আসেন। সেখান থেকে একটি মাহেন্দ্র ভাড়া করে ফরিদপুর নতুন বাসস্ট্যান্ডে এসে ঢাকাগামী বিকাশ পরিবহনে টিকেট কেটে বাসের লকারে তোলেন। এরপর বাসটি ছেড়ে যাওয়ার সময়ে ওই নারীকে না পেয়ে বাসের লোকজন স্যুটকেসটি গোল্ডেন লাইন পরিবহনের কাউন্টারের সামনে ফেলে রেখে যান। গত শনিবার (২৭ জানুয়ারি) সকালে ৯৯৯ এ কল পেয়ে কোতয়ালি থানা পুলিশ স্যুটকেসের তালা ভেঙ্গে ওই মরদেহটি উদ্ধার করেন এবং ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন তিনি। এরপর গত রবিবার (২৮ জানুয়ারি) এসআই মোহাম্মদ শামীম হাসান বাদী হয়ে কোতোয়ালি থানায় অজ্ঞাতনামা একটি মামলা দায়ের করেন। ওই মামলার সূত্র ধরে আধুনিক তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি ব্যবহার করে পুলিশের একটি চৌকশ টিম গতকাল সোমবার (২৯ জানুয়ারি) দিনগত রাত ৩ টার দিকে ঢাকার কদমতলী থানা পুলিশের সহায়তায় জুরাইন এলাকা থেকে রোজিনা আক্তার ওরফে কাজলকে গ্রেফতার করা হয়।
তিনি আরও বলেন, রোজিনা প্রশিক্ষিত খুনি ছিলেন না। যে কারণে মরদেহটি ফেলে দেওয়ার জন্য তিনি এ অভিনব পদ্ধতি গ্রহণ করেন। ওই নারী যে রিকশা ও মাহিন্দ্র ব্যবহার করেছেন তাদের চালকদের আটক করা হয়েছে। তাদেরকে এই হত্যা মামলার সাক্ষী করা হবে।
সংবাদ সম্মেলনে এসময় উপস্থিত ছিলেন, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ক্রাইম অ্যান্ড অপস) শৈলেন চাকমা (সদ্য পুলিশ সুপার পদে পদোন্নতিপ্রাপ্ত), অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সদর সার্কেল) মুহাম্মদ সালাউদ্দিন, কোতয়ালী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা
(ওসি) মো. হাসানুজ্জামান, পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা ও সাংবাদিকগণ।