বিয়ের ৬ মাসেই যৌতুকের বলি হলো স্কুলছাত্রী প্রিয়াঙ্কা
সৈয়দপুর (নীলফামারী) প্রতিনিধি:
নীলফামারীর সৈয়দপুরে নবম শ্রেণির ছাত্রী প্রিয়াঙ্কা ( ১৪) ভালোবেসে বিয়ে করেছিল মো. বিজয়কে। অথচ বিয়ের ৬ মাস না যেতেই যৌতুকের বলি হতে হলো তাকে । তাকে হত্যা করে ঝুলিয়ে রাখার অভিযোগ ওঠেছে। ঘটনাটি ঘটেছে শহরের মিস্ত্রিপাড়া এলাকায়। বৃহস্পতিবার (২৮ ডিসেম্বর) দুপুরে ওই ছাত্রীর মরদেহ ময়না তদন্তের জন্য মর্গে পাঠানো হয়েছে।
পুলিশ ও এলাকাবাসী জানায়, শহরের মিস্ত্রিপাড়া মহল্লার বাদশা মিয়ার ছেলে বিজয় (১৬) ও মুন্সিপাড়া এলাকার দিনমজুর পাপ্পু হোসেনের মেয়ে প্রিয়াঙ্কা। বিজয় সৈয়দপুর ক্যান্টনমেন্ট বোর্ড হাইস্কুলের ১০ম শ্রেণির ছাত্র আর প্রিয়াঙ্কা পড়তো এনজিও পরিচালিত ওব্যাট স্কুলের ৯ম শ্রেণিতে। দুজন দুজনকে ভালোবেসে গত ৬ মাস আগে করে পরিবারকে না জানিয়ে পালিয়ে বিয়ে করে।
বিয়ে মেনে নিলেও পরে যৌতুক নিয়ে চাপ দিতে থাকে স্বামী ও তার পরিবারের লোকজন। প্রিয়াঙ্কার উপর নেমে আসে নির্যাতন। এরই ধারাবাহিকতায় তারা গত বুধবার (২৭ ডিসেম্বর) বিকেলে নির্যাতন করে নিজ শোয়ার ঘরে সিলিংয়ে ওড়না পেঁচিয়ে ঝুলে পড়ে প্রিয়াঙ্কা। পরে পরিবারের লোকজন তাঁকে উদ্ধার করে সৈয়দপুর ১০০ শয্যা হাসপাতালে নিয়ে গেলে রাতে মারা যায় প্রিয়াঙ্কা।
তবে প্রিয়াঙ্কার মামা মো. তুফান এটিকে একটি পরিকল্পিত হত্যাকান্ড দাবি করেন। তিনি বলেন, প্রিয়াঙ্কাকে হত্যা করে লাশ ঝুলিয়ে রেখে আত্মহত্যা বলে প্রচার চালাচ্ছে বিজয় ও তার পরিবারের লোকজন।
এদিকে এলাকার লোকজন জানান, যখন প্রিয়াঙ্কাকে উদ্ধার করে হাসপাতালে নেয়া হয় তখন তার শরীরে অসংখ্য আঘাতের চিহৃ ছিল। সে মারা যাওয়ার পর তার শশুর বাড়ির লোকজন পালিয়ে যায়।
সৈয়দপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শাহা আলম সত্যতা নিশ্চিত করে জানান, বুধবার রাতেই লাশ উদ্ধার করা হয়েছে এবং বৃহস্পতিবার দুপুরে মরদেহ ময়না তদন্তের জন্য মর্গে পাঠানো হয়েছে। এ ব্যাপারে মেয়ের মামা সম্রাট বাদী হয়ে শারীরিক ও মানসিক নির্যাতনের মাধ্যমে প্রিয়াঙ্কাকে হত্যা করা হয়েছে মর্মে সৈয়দপুর থানায় একটি মামলা দায়ের করেছেন। অভিযুক্ত মুল আসামী স্বামী বিজয়কে আটক করা হয়েছে। অপর দুই আসামীকেও গ্রেফতারে সচেষ্ট পুলিশ।