শিরোনাম
সিরাজগঞ্জে ভারতীয় সূতা উদ্ধার করেছে পুলিশ   » «    “প্রশাসন ক্যাডারের বাইরে অন্যান্য ক্যাডারের ৫০% অন্তর্ভুক্তির পুনর্বিবেচনার জন্য অনুরোধ”   » «    ‘ক্রিসমাস ডে’ কে কেন বড়দিন বলা হয়?   » «    সাজাভোগ শেষে ভারত থেকে দেশে ফিরল ২৬ বাংলাদেশি পুরুষ ও নারী   » «    চাঁদপুরে জাহাজে খুনের ঘটনায় আটক ইরফান   » «   

বছরে সরকারের গচ্চা কয়েক কোটি টাকা

শার্শা (যশোর) প্রতিনিধি:
যশোর জেলায় লাইসেন্স বিহীন থ্রি হুইলার থেকে সরকার বছরে কয়েক কোটি টাকার রাজস্ব থেকে বঞ্চিত হচ্ছে। যশোরের বিভিন্ন সড়কে চলছে কয়েক হাজার তিন চাকার এসব যানবাহন। বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন কর্তৃপক্ষের (বিআরটিএ) হিসেবে যশোরে রয়েছে  মাত্র ৩২৯ টি ইজিবাইক ও থ্রি হুইলার রয়েছে। অর্থাৎ যশোরে লাইসেন্স বিহীন অটোরিকশা চলাচল করছে তিনগুণেরও বেশি। ফলে অটোরিকশা খাত থেকে যে পরিমাণ রাজস্ব আদায় হচ্ছে প্রতিবছর তার চেয়েও বেশি রাজস্ব হারাচ্ছে সরকার।
থ্রি হুইলার মালিকসহ স্থানীয়রা বলছেন, ট্রাফিক বিভাগসহ সংশ্লিষ্ট দফতরগুলোকে বিশেষভাবে ম্যানেজ করে অবৈধভাবে তিন চাকার যান চলাচল করছে যশোর শহর ও শহরতলীর বিভিন্ন সড়কে। কর্তৃপক্ষের ব্যর্থতার কারণেই লাইসেন্সবিহীন অটোরিকশাগুলোকে আইনের আওতায় আনা যাচ্ছে না। তবে বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন কর্তৃপক্ষ (বিআরটিএ) স্থানীয় কার্যালয় বলেছে, তারা লাইসেন্স বিহীন অটোরিকশাগুলোকে লাইসেন্সের আওতায় আনতে কাজ শুরু করেছে।
বিআরটিএর হিসেব অনুযায়ী, যশোরে লাইসেন্সধারী থ্রি হুইলার অটোরিকশার সংখ্যা মাত্র ৩২৯টি। এর বিপরীতে লাইসেন্স ছাড়াই যশোরের বিভিন্ন সড়কে চলছে কয়েক হাজার অটোরিকশা। সংশ্লিষ্টরা বলছেন, এসব অবৈধ গাড়ি নিবন্ধন ও লাইসেন্স পুনঃনিবন্ধন প্রক্রিয়ার আওতায় না আসায় সরকার প্রতিবছর রাজস্ব হারাচ্ছে  কমপক্ষে ১ কোটি ৯৫ লাখ ৭০ হাজার টাকা।
বিআরটিএ ও সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, একেকটি অটোরিকশার রেজিষ্ট্রেশন পেতে হলে ব্যাংকে জমা দিতে হয় সাড়ে ১১ হাজার টাকা। লাইসেন্স হলে নম্বর পাওয়ার পরে রুট পারমিটের (সড়কে চলাচলের অনুমতি) জন্য জমা দিতে হয় ১ হাজার ৬০০ টাকা। এ ছাড়া লাইসেন্স করতে জমা দিতে হয় দুই হাজার টাকা, ট্যাক্স টোকেন বাবদ দিতে হয় ৪ হাজার টাকা, ইনস্যুরেন্স বাবদ দিতে হয় ৪৭০ টাকা। সবমিলিয়ে নবায়নসহ প্রতিটি গাড়িতে রাজস্ব দাঁড়ায় ১৯ হাজার ৫৭০ টাকা। এই হিসাবে নবায়নের খরচসহ ৩২৯টি গাড়ি থেকে রাজস্বের পরিমাণ দাঁড়ায় ৬৪ লাখ ৩৮ হাজার ৫৩০ টাকা। এসব টাকা জমা দিতে হয় ব্যাংকে। ফলে এই লেনদেনের পুরোটাই সরকারি তহবিলে জমা হয়।
স্থানীয়রা বলছেন, বিআরটিএর হিসাবের বাইরে শুধুমাত্র যশোর সদর উপজেলাতেই রেজিষ্ট্রেশনহীন অটোরিকশা চলাচল করছে প্রায় ১ হাজার। সে ক্ষেত্রে সরকার প্রতি বছর রাজস্ব বঞ্চিত হচ্ছে ১ কোটি ৯৫ লাখ ৭০ হাজার টাকা।
এর বাইরে জেলার আট উপজেলা শার্শা, ঝিকরগাছা, চৌগাছা, বাঘারপাড়া, মণিরামপুর, কেশবপুর ও অভয়নগরে রেজিষ্ট্রেশনহীন অটোরিকশা চলাচল করছে কয়েক হাজার। সে ক্ষেত্রে সরকার প্রতি বছর রাজস্ব বঞ্চিত হচ্ছে  কোটি কোটি টাকা।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে বিআরটিএ যশোর সার্কেলের সহকারী পরিচালক মাহাফুজুর রহমান বাংলা এফ,এমকে বলেন, যাত্রী ও পণ্য পরিবহন নামে ৯ সদস্য বিশিষ্ট একটি কমিটি আছে। কমিটির সভাপতি জেলা প্রশাসক। সদস্য সচিব বিআরটিএর সহকারী পরিচালক। এছাড়া প্রেসক্লাব সভাপতি, পুলিশ সুপারের প্রতিনিধি, সড়ক ও জনপথের প্রতিনিধি, এলজিইডির প্রতিনিধি, বাসমালিক সমিতির প্রতিনিধি ও শ্রমিক ইউনিয়নের প্রতিনিধিরা কমিটির সদস্য। তিন মাস পর পর কমিটির মিটিং হয়। কমিটির মিটিংয়ে সিদ্ধান্তের পর ঠিক হয় থ্রি হুইলারের রেজিস্ট্রেশন দেওয়া হবে কি হবে না। বর্তমানে যশোর শহরে নিবন্ধিত গাড়ি (সিএনজিচালিত অটোরিকশা) রয়েছে ৩২৯টি। নিবন্ধনের বাইরে রয়েছে আরও প্রায় ১ হাজার অটোরিকশা।
অনিবন্ধিত গাড়িগুলোকে নিবন্ধনের আওতায় আনার বিষয়ে তিনি বলেন, ২০১৮ সালের ২৩ ডিসেম্বর থেকে নতুন করে রেজিস্ট্রেশন দেওয়ার প্রক্রিয়াটি বন্ধ রয়েছে। তবে নতুন রেজিস্ট্রেশনের জন্য ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের বরাবর একাধিকবার আবেদন করা হয়েছে। এরই মধ্যে বেশ কয়েকটি মিটিংও হয়েছে। আশা করছি, নতুন রেজিস্ট্রেশন প্রদান প্রক্রিয়া খুব শিগগিরই শুরু হবে।
তিনি আরও বলেন, থ্রি হুইলারের রেজিস্ট্রেশন দিয়ে বৈধতার অনুমতি দিলে অবৈধ যানচলাচল কমে যাবে। একই সঙ্গে সড়ক দুর্ঘটনার হার কম হবে। পাশাপাশি যাত্রীরা মানসম্মত সেবা পাবে।
সংবাদটি ভালো লাগলে শেয়ার করুন
বিষয়: * কোটি টাকা * সরকার * সরকারের গচ্চা
সাম্প্রতিক সংবাদ