কুমিল্লায় লাল-সবুজে সেজেছে গোমতীর চর

ব্রাহ্মণপাড়া (কুমিল্লা) প্রতিনিধি:
কুমিল্লায় গোমতী নদীর চর লাল-সবুজ রঙে সেজেছে। ব্রাহ্মণপাড়া উপজেলায় শীতকালীন শাকসবজি চাষ ও আগাম ফসল ঘরে তুলতে ব্যস্ত সময় পার করছেন চাষিরা।
উপজেলার গোমতী নদীর তীর ঘেঁষা মনোহরপুর গ্রামসহ আশপাশের গোমতীর চরে সরেজমিনে দেখা যায়, নারী পুরুষ একযোগে লালশাক তুলছেন, কেউ আটি বাঁধছেন। পাইকাররা গুনেগুনে গাড়ি ভর্তি করছেন। কেউ প্রস্তুত করা জমিতে সবজির বীজ বপন করছেন। কেউ কেউ সদ্য গজিয়ে ওঠা সবজি চারার পরিচর্যা করছেন। কেউ কীটনাশক ছিটাচ্ছেন বেড়ে ওঠা সবজি ক্ষেতে।
স্থানীয় কৃষি অফিস জানায়, চলতি মৌসুমে এই উপজেলায় ৩২০ হেক্টর জমিতে বিভিন্ন জাতের শীতকালীন সবিজ চাষের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে। এ বছর শীতকালীন সবজির আবাদ উপযোগী আবহাওয়া থাকায় সবজির ফলন ভালো হবে বলে মনে করছেন তারা। শীতকালীন সবজি চাষিদের নানা পরামর্শ দিয়ে সহযোগিতা করছে উপজেলা কৃষি অফিস।
উপজেলার মালাপাড়া ইউনিয়নের গোমতী নদীর তীর ঘেঁষা বিভিন্ন সবজির মাঠ ঘুরে দেখা গেছে, শীতকালীন শাকসবজি চাষ ও আগাম ফসল ঘরে তুলতে ব্যস্ত সময় পার করছেন চাষিরা। এখন মাঠজুড়ে লাল হয়ে আছে লাল শাকের লালে, সবুজ হয়ে আছে মুলা, ধনেপাতা, ফুলকপি ও বাঁধাকপি মতো সবুজ সবজির সবুজে। এ যেন এক নয়নাভিরাম প্রাকৃতিক দৃশ্য। মাঠজুড়ে চাষিদের পদচারণায় বিমুগ্ধ হয়ে আছে ফসলি মাঠ। একটু অবসরের ফুরসত যেন নেই তাদের। কেউ জমিতে সবজির বীজ বপন করছেন। কেউ কেউ সদ্য গজিয়ে ওঠা সবজির পরিচর্যায় ব্যস্ত।
রামনগর গ্রামের কৃষক ইদ্রিস মিয়া জানান, তিনি এ বছর ৩৪ শতক জমিতে লাল শাক আবাদ করেছেন। খরচ হয়েছে ১৫ হাজার টাকা। সবকিছু ঠিক থাকলে তার অন্তত ৪০ হাজার টাকা মুনাফা হবে।
পার্শ্ববর্তী অলুয়া গ্রামের চাষি বাহারুল ইসলাম জানান, ৩০ শতক জমিতে লাল শাক ও ৫৫ শতক জমিতে মুলা, ফুলকপি ও বাঁধাকপি আবাদ করেছেন। এতে যে পরিমাণ ব্যয় হয়েছে সেই খরচ উঠেও অনেক লাভবান হবেন তিনি। তিন সপ্তাহ আগে বপন করা লাল শাক এখন বাজারজাত করার সময় হয়েছে। জমিতে এসে পাইকাররা লালশাক কিনে নিয়ে যাচ্ছেন।
স্থানীয় কৃষক জমির হোসেন, বাচ্চু মিয়া, আব্দুস সালাম বলেন, গত মাস ও চলতি মাসে কিছুটা ভারি বৃষ্টি হয়। এতে জমিতে থাকা ছোট লালশাক নষ্ট হয়ে যায়। তবে আমরা দমে যাইনি। জমি প্রস্তুত করে আবারও লালশাক আবাদ করেছি। মাঠজুড়ে এখন হাসছে লালশাক। দূরদূরান্ত থেকে পাইকাররা আসছেন। লালশাক কিনে নিয়ে যাচ্ছেন। হাটে নেওয়ার খরচও লাগছে না আমাদের। আগাম সবজি হওয়ায় দামও পাচ্ছি ভালো।
উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ মাহবুবুল হাসান জানান, এবার শীতকালীন শাকসবজিসহ সব রকমের ফসলের ভালো ফলন হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। প্রান্তিক চাষিদের মাঝে শীতের শাকসবজির মানসম্পন্ন বীজ এবং সার দেওয়া হয়েছে। আশা করি এবার লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে বেশি আবাদ এবং উৎপাদন হবে। কেননা কৃষকদের প্রণোদনা ও পরামর্শসহ নানাভাবে সহযোগিতা করছে উপজেলা কৃষি অফিস
সংবাদটি ভালো লাগলে শেয়ার করুন

বিষয়: * কুমিল্লা * গোমতী নদীর
সর্বশেষ সংবাদ