শিরোনাম
সিরাজগঞ্জে ভারতীয় সূতা উদ্ধার করেছে পুলিশ   » «    “প্রশাসন ক্যাডারের বাইরে অন্যান্য ক্যাডারের ৫০% অন্তর্ভুক্তির পুনর্বিবেচনার জন্য অনুরোধ”   » «    ‘ক্রিসমাস ডে’ কে কেন বড়দিন বলা হয়?   » «    সাজাভোগ শেষে ভারত থেকে দেশে ফিরল ২৬ বাংলাদেশি পুরুষ ও নারী   » «    চাঁদপুরে জাহাজে খুনের ঘটনায় আটক ইরফান   » «   

টাঙ্গাইলের ঘাটাইলে বাসস্ট্যান্ডে মানববন্ধন করেছে পৌরসভার সচেতন নাগরিকরা

টাঙ্গাইল জেলা প্রতিনিধিঃ
ঘাটাইল পৌরসভার বায়নামূলেজমি জালিয়াতি করে পৌর কাউন্সিলরের ব্যক্তি নামে অফেরতযোগ্য পাওয়ার অফ এ্যাটর্নি দলিল করায় ক্ষুব্দ পৌরবাসি। এরই অংশ হিসেবে শনিবার (১১ নভেম্বর)সকালে জমি ফেরত চেয়ে ঘাটাইল বাসস্ট্যান্ডে মানববন্ধন করেছে পৌরসভার সচেতন নাগরিকরা।
ঘাটাইল পৌরসভার বর্জ্য ফেলার কোনো জাগয়া এখনো নেই। ২০২০ সালে তৎকালিন পৌর মেয়র শহিদুজ্জামান খান বর্জ্য ফেলার জন্য উপজেলার জামুরিয়া মৌজায় ২২১ শতাংশ জমি পাঁচ লাখ টাকায় বায়না করেন। প্রতি শতক ২০ হাজার টাকা দাম ধরে জমির মূল্য ঠিক করা হয় ৪৪ লাখ ২০ হাজার টাকা। সাবেক মেয়র শহিদুজ্জামান খান জানান, নিয়ম অনুয়ায়ী জমির দরদাম ঠিক ও বায়নাপত্র করে রেজিষ্ট্রির জন্য স্থানীয় সরকার বরাবর আবেদন করতে হয়। নিয়ম অনুসরণ করে ওই বছরের
২০ অক্টোবর স্থানীয় সরকার সচিব বরাবর জমিটি রেজিষ্ট্রি করতে তিনি আবেদন করেন। আবেদনের প্রেক্ষিতে স্থানীয় সরকার মন্ত্রনালয় একটি তদন্ত কমিটি গঠন করে।
কমিটি তদন্ত করে জানায় ওই জমি সংক্রন্ত মামলা রয়েছে। তাই রেজিষ্ট্রি করা ঠিক হবে না। শহিদুজ্জামান জানান, ২০২৩ সালে এসে ওই জমি সংক্রান্ত মামলা দাতাদের অনুকূলে নিস্পত্তি হয়। বায়নাপত্রমূলে পৌরসভার জন্য জমির দলিল করতে আর কোনো বাধা থাকেনা। সে মোতাবেক বর্তমান মেয়র বীর মুক্তিযোদ্ধা আব্দুর রশিদ মিয়া জমির দলিল করতে আবেদন করেন স্থানীয় সরকার সচিব বরাবর। গত মাস অর্থ্যাৎ ১৯ অক্টোবর স্থানীয় সরকার বিভাগ পৌর শাখা—১ এর পক্ষে উপসচিব আব্দুর রহমান সাক্ষরিত এক চিঠিতে জেলা প্রশাসককে প্রধান করে জমি সংক্রান্ত বিষয়াদি তদন্ত করে প্রতিবেদন দাখিল করতে বলা হয়। কিন্তু তদন্তের আগেই ওই জমির পাওয়ার অফ এ্যাটর্নি দলিল ৩০ আক্টোবর হয়ে যায় ঘাটাইল পৌরসভার ৮ নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর শাহাদত হোসেন শামীম এর নামে। বিষয়টি অবগত হওয়ার পর বায়নাপত্রমূলে পৌরসভার জমি ব্যক্তি নামে দলিল করায় জালিয়াতির অভিযোগ এনে ৯ নভেম্বর টাঙ্গাইল জেলা প্রশাসক বরাবর লিখিত আবেদন করেছেন সাবেক মেয়র শহিদুজ্জামান খান। অভিযোগে বলা হয়েছে, বর্তমানে জমির মূল্য তিনগুণ বৃদ্ধি পাওয়ায় জমির মালিকদের চাপ প্রয়োগ করে অন্যত্র জমি বিক্রি করতে পারবে না বলে বর্তমান মেয়র, ৮ নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর এবং পৌরসভার হিসাবরক্ষক কর্মকর্তার যোগসাজসে কোনো প্রকার রেজুলেশন বা সিদ্ধান্ত ব্যতীত কাউন্সিলর শাহাদত হোসেন শামীমের নামে অফেরতযোগ্য পাওয়ার অফ এ্যাটর্নি দলিল করেন। এই জমি ব্যক্তিমালিকানায় চলে গেলে পৌরবাসীর ভোগান্তির শেষ থাকবেনা।
জালিয়াতির অভিযোগ এনে জমির দলিল পৌরসভার নামে করার জন্য ৯ নভেম্বর তিনজন প্যানেল মেয়রসহ জেলা প্রশাসক বরাবর লিখিত আবেদন করেছেন ১০ জন বর্তমান পৌর কাউন্সিলর। আবেদনে তারা তদন্ত করে পৌরবাসীর সুবিধার্থে ন্যায়বিচার চেয়েছেন।
এদিকে পৌরসভার সচেতন নাগরিকরা শনিবার সকাল ১১ টার দিকে জমি ফিরিয়ে চেয়ে ঘাটাইল বাসস্ট্যান্ডে মানববন্ধন করেছেন। মানববন্ধনে বক্তব্য রাখেন ঘাটাইল পৌরসভার সাবেক মেয়র শহিদুজ্জামান খান, উপজেলা বিআরডিবি চেয়ারম্যান রুহুল আমিন, ঘাটাইল সরকারি জিবিজি কলেজের সাবেক এজিএস রঞ্জু আহমেদ প্রমুখ। বক্তারা ১৫ দিনের মধ্যে ওই জমি পৌরসভার নামে ফিরিয়ে না দিলে পরবর্তীতে পৌরসভা ঘেরাও কর্মসূচি দেওয়ার ঘোষনা দেন। মানবন্ধন শেষে পৌরসভার ৩ নং ওয়ার্ডে টেক্স আদায় বন্ধ করে দিয়েছেন বাসিন্দারা।
এ বিষয়ে পৌর কাউন্সিলর শাহাদত হোসেন শামীম বলেন, আমার নামে পাওয়ার অফ এ্যাটর্নি দলিল করা হয়েছে ঠিক আছে, তবে পৌরসভা যখন এই জমি চাইবে তখনি দলিল  করে দেওয়া হবে। ঘাটাইল পৌরসভার মেয়র বীর মুক্তিযোদ্ধা আব্দুর রশিদ মিয়া বলেন, প্রায় চার মাস আগে ওই জমির মামলা নিষ্পত্তি হয়েছে। এরই মধ্যে কয়েকজন জমি ক্রয়ের জন্য পায়তারা শুরু করে। জমির মালিকও পৌরসভাকে দলিল করে নিয়ে টাকা দেওয়ার জন্য চাপ দিতে থাকেন। জমির দলিল করতে স্থানীয় সরকার মন্ত্রনালয়ের অনুমতি লাগে। যা প্রক্রিয়া করতে সময় লাগে। তাই পৌর কাউন্সিলর শাহাদত হোসেন শামীমের নামে পাওয়ার অফ এ্যাটর্নি দলিল করা হয়েছে। পৌরসভা চাইলে যে কোনো সময় সে দলিল করে দিবেন।  টাঙ্গাইলের জেলা প্রশাসক মো.কায়ছারুল ইসলাম বলেন, এ সংক্রান্ত অভিযোগ পেয়েছি, তদন্ত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
সংবাদটি ভালো লাগলে শেয়ার করুন
বিষয়: * বাসস্ট্যান্ডে মানববন্ধন * সচেতন নাগরিকরা
সাম্প্রতিক সংবাদ