গোপালগঞ্জে চা দোকানদার হত্যাকাণ্ডের আসামী ২৯ বছর পর গ্রেফতার করেছে র্যাব-১০
ফরিদপুর প্রতিনিধি:
গোপালগঞ্জে চা দোকানদার হত্যাকাণ্ডের সাথে জড়িত আসামীকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। এ ব্যাপারে এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয় গোপালগঞ্জ জেলার সদর থানাধীন তেলিগতি এলাকায় বসবাসকারী সেকেন্দার শেখ (৩০), পিতা-মৃত নজির শেখ নামক এক ব্যক্তি উক্ত এলাকার কাঠি বাজারে চায়ের দোকান দিয়ে তার জিবিকা নির্বাহ করতো।
গত ১৪/০১/১৯৯৪ রাত আনুমানিক ৮ টায় সেকান্দার প্রতিদিনের ন্যায় চা বিক্রি শেষে তার নিজ বাড়ির উদ্দেশ্যে রওনা করে। পথিমধ্যে গোপালগঞ্জ জেলার সদর থানাধীন কাঠি পশ্চিম পাড়া এলাকার কাঁচা রাস্তার উপর পৌছালে আনুমানিক রাত ১০ ৩০ মিনিটে উক্ত রাস্তার পাশে ৭/৮জন লোককে ফাকা জমির উপর বসে থাকতে দেখে সেকান্দার তাদের দিকে টর্চ লাইটের আলো ফেলে। অতঃপর টর্চ লাইটের আলোতে সে দেখতে পায় ৭/৮ জন লোক সেখানে বসে গাঁজা সেবন করছে। সেকান্দার তাদেরকে গাঁজা সেবনে মৌখিক ভাবে বাধা দিলে মোঃ মিজান ওরফে শাহিনসহ তার অন্যান্য সহযোগী মিলে সেকান্দারের উপর ক্ষিপ্ত হয়ে তাদের কাছে থাকা ধারালো ছুরি দিয়ে সেকান্দারের বুকে, পেটে ও শরীরের বিভিন্ন স্থানে এলোপাথাড়ি কুপিয়ে নৃশংসভাবে হত্যা করে ঘটনাস্থল থেকে পালিয়ে যায়।
পরবর্তীতে স্থানীয় লোকজন পুলিশকে সংবাদ দিলে গোপালগঞ্জ সদর থানা পুলিশ ভিকটিম সেকান্দারের মৃতদেহের সুরতহাল রিপোর্ট প্রস্তুত করে লাশ ময়না তদন্তের জন্য গোপালগঞ্জ সদর হাসপাতালের মর্গে প্রেরণ করে। এ হত্যাকান্ডের পর মৃত সেকেন্দার শেখ এর ভাই এনায়েত শেখ বাদি হয়ে গোপালগঞ্জ জেলার সদর থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন। যার মামলা নং-০৮, তারিখ-১৪/০১/১৯৯৪ খ্রিঃ, ধারা- ১০৯/৩০২/৩৪ দন্ডবিধি। মামলা রুজুর বিষয়টি জানতে পেরে হত্যাকাণ্ডে জড়িত সবাই আত্মগোপনে চলে যায়। ঘটনাটি জানতে পেরে র্যাব-১০ এর একটি আভিযানিক দল উক্ত চাঞ্চল্যকর চা দোকানদার সেকান্দার শেখ হত্যাকান্ডে জড়িত আসামিদের আইনের আওতায় নিয়ে আসার লক্ষ্যে গোয়েন্দা নজরদারি বৃদ্ধি করে।
এরই ধারাবাহিকতায় উক্ত আভিযানিক দল গতকাল ১৯ অক্টোবর ২০২৩ বিকাল আনুমানিক পাঁচটায় গোপন সংবাদের ভিত্তিতে রাজবাড়ী জেলার রাজবাড়ী সদর থানাধীন সজ্জনকান্দা এলাকায় একটি অভিযান পরিচালনা করে উক্ত চাঞ্চল্যকর চা দোকানদার সেকান্দার শেখ হত্যা মামলায় বিজ্ঞ আদালত কর্তৃক যাবজ্জীবন সাজাপ্রাপ্ত সাজা ওয়ারেন্টভুক্ত দীর্ঘ ২৯ বছর যাবৎ পলাতক আসামি মোঃ মফিজুর রহমান মাহফুজ (৫৭), পিতা- মৃত মোঃ হাবিবুর রহমান হালিম সেক, সাং-কাঠি, থানা-গোপালগঞ্জ’কে গ্রেফতার করে।
প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে, গ্রেফতারকৃত আসামি উক্ত হত্যাকাণ্ডের সাথে তার সম্পৃক্ততার সত্যতা স্বীকার করেছে। সে মামলা রুজুর পর থেকে রাজবাড়ীসহ দেশের বিভিন্ন এলাকায় তার নাম ও পরিচয় গোপন করে আত্মগোপন করে ছিল বলে জানা যায়। গ্রেফতারকৃত আসামিকে সংশ্লিষ্ট থানায় হস্তান্তর করা হয়েছে।