নির্বাচন পর্যবেক্ষণে ‘এক্সপার্ট গ্রুপ’ পাঠাবে ইইউ

বাংলাদেশের আগামী জাতীয় নির্বাচনে পূর্ণাঙ্গ পর্যবেক্ষক দল না পাঠানোর সিদ্ধান্ত আগেই জানিয়েছিল ইউরোপীয় ইউনিয়ন।
তবে তারা নির্বাচন পর্যবেক্ষণের জন্য একটি ‘এক্সপার্ট গ্রুপ’ পাঠানোর ঘোষণা দিয়েছে। রোববার ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের প্রতিনিধিদের সঙ্গে বৈঠকে তারা এমন ঘোষণা দিয়েছেন বলে জানিয়েছেন আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য লেফটেন্যান্ট কর্নেল (অব.) ফারুক খান।
আজ বেলা ১১টার দিকে ঢাকায় নিযুক্ত ইউরোপীয় ইউনিয়নের রাষ্ট্রদূত চার্লস হোয়াইটলির গুলশানের বাসায় আওয়ামী লীগের প্রতিনিধি দলের সঙ্গে বৈঠকটি অনুষ্ঠিত হয়।
বৈঠকে ইইউ রাষ্ট্রদূতসহ ইইউভুক্ত ১০টি দেশের প্রতিনিধি উপস্থিত ছিলেন। আওয়ামী লীগের পক্ষে বৈঠকে নেতৃত্ব দেন দলটির সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য মুহাম্মদ ফারুক খান।
এ ছাড়াও আরও উপস্থিত ছিলেন আন্তর্জাতিক সম্পাদক শাম্মী আহমেদ, তথ্য ও গবেষণা সম্পাদক সেলিম মাহমুদ, কার্যনির্বাহী সদস্য তারানা হালিম, নির্মল চ্যাটার্জী, আন্তর্জাতিক উপকমিটির সদস্য সোহরাব হোসেন, তারিক হাসান সমী, খালেদ মাসুদ আহমেদ।
বৈঠকের পর ফারুক খান সাংবাদিকদের বলেন, আপনারা শুনে খুশি হবেন, ইউরোপীয় ইউনিয়ন ঘোষণা দিয়েছে, তারা একটা এক্সপার্ট গ্রুপকে নির্বাচন পর্যবেক্ষণ করতে পাঠাবে।
রাষ্ট্রদূতদের সঙ্গে ‘ভালো বৈঠক হয়েছে’ উল্লেখ করে ফারুক খান বলেন, ‘বৈঠকের শুরুতেই তারা বলেছেন, বাংলাদেশের সঙ্গে ইউরোপীয় ইউনিয়নের ৫০ বছরের কূটনৈতিক সম্পর্ক; এটা একটা চমকপ্রদ ব্যাপার।
আগামী কিছু দিনের মধ্যেই আমাদের প্রধানমন্ত্রী ইউরোপীয় ইউনিয়ন সফরে যাচ্ছেন। সেখানে আমাদের সঙ্গে পার্টনারশিপ চুক্তি হবে। এই কথাগুলো তারা শুরুতেই উল্লেখ করেছেন।’
দেড় ঘণ্টার মতো বৈঠক হয়েছে জানিয়ে আওয়ামী লীগের এই নেতা বলেন, ‘বৈঠকে মূলত আলোচনা হয়েছে- আগামী নির্বাচনে আওয়ামী লীগ কী পরিসরে, কী চিন্তায় অগ্রসর হচ্ছে?
আমরা তাদের বলেছি যে- আমাদের সংবিধান অনুযায়ী কিছু দিনের মধ্যেই অন্তর্বর্তীকালীন সরকার গঠিত হবে। তারপর নির্বাচন কমিশন ভোটের শিডিউল (তফসিল) ঘোষণা করবে এবং তারপর আমরা সেই মোতাবেক নির্বাচন করবো।’
আগামী নির্বাচন নিয়ে আওয়ামী লীগের অবস্থান জানতে চেয়েছে ইইউ বলে জানান মুহাম্মদ ফারুক খান। তিনি বলেন, কি চিন্তায় অগ্রসর হচ্ছে তা জানতে চেয়েছে ইইউ সদস্যরা।
আমরা বলেছি আমাদের সংবিধানের অনুযায়ী কিছুদিনের মধ্যে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার গঠিত হবে। নির্বাচন কমিশন তাদের তফসিল ঘোষণা করবে। আমরা আমাদের সিডিউল মোতাবেক নির্বাচন করব।
ফারুক খান বলেন, আজকের আলোচনার মাধ্যমে এটাই প্রমাণিত হয়েছে যে তারা বাংলাদেশে সুষ্ঠু নির্বাচন চায়, আমরা যেই সুষ্ঠু নির্বাচন করতে চাচ্ছি সেটাই তারা চাচ্ছে। সুষ্ঠু নির্বাচনের জন্য আমরা কি কি করব সেটাও তারা জানতে চেয়েছে।
বিএনপির বিষয়ে কোনো আলোচনা হয়নি বলে দাবি করেন আওয়ামী লীগের এ নেতা। তিনি বলেন, তবে বিএনপির একটি দায়িত্বশীল রাজনৈতিক দল, তারা আগামী নির্বাচনে আসবে বলে আমরা আশা করি।
তবে সংলাপের বিষয়ে কোনো আলোচনা হয়নি বলে জানান আওয়ামী লীগের এই সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য।
তিনি আরও বলেন, ‘শিক্ষা নিয়ে আমরা কী চিন্তাভাবনা করছি, দেশের অন্যান্য ডেভেলপমেন্ট নিয়ে, ইকোনমিক ক্রাইসিস নিয়ে আমরা কী চিন্তাভাবনা করছি— এই বিষয়গুলো আলোচনায় এসেছে, আমরা আলোচনা করেছি। আমি মনে করি খুবই ফলপ্রসু আলোচনা হয়েছে।’
ফারুক খান বলেন, ‘তারা প্রশ্ন করেছে, আগামী নির্বাচনে আমরা জয়লাভ করলে দেশটাকে কোন দিকে, কীভাবে চালাবো? তার জবাবে বলেছি— সেটার উত্তর আপনারা আমাদের মেনুফেস্টুতেই পাবেন।
আমাদের মেনুফেস্টুতেই তো লেখা থাকবে, আগামী ৫ বছর বাংলাদেশ কীভাবে চলবে, ডেমোক্রেসিকে কীভাবে এক্সটেন্ড করা হবে, জুডিশিয়াল সিস্টেমকে কীভাবে এক্সটেন্ড করা হবে, কীভাবে আমরা করাপশনের বিরুদ্ধে লড়বো; এসব কথা আমাদের ইলেকশন মেনুফেস্টুতে থাকবে।’
সংবাদটি ভালো লাগলে শেয়ার করুন

বিষয়: * ইউরোপীয় ইউনিয়ন * এক্সপার্ট গ্রুপ * নির্বাচন পর্যবেক্ষণ
সর্বশেষ সংবাদ