প্রাথমিকে ৪০ হাজার শিক্ষকের পদ শূন্য: নিয়োগ প্রক্রিয়ায় ধীরগতি

নিয়োগ প্রক্রিয়ায় ধীরগতির কারণে দেশের প্রাথমিক থেকে মাধ্যমিক পর্যায়ের বেশিরভাগ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান গুলোতে চলছে শিক্ষকসংকটে।
একটি নিয়োগ শেষ হতে না হতে বছর চলে যাচ্ছে। এতে নিয়োগপ্রক্রিয়া চলমান থাকলেও শিক্ষকসংকট যেন কাটছেই না।
সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয় ও অধিদপ্তর সূত্রে জানা যায়, ৩৮ হাজার শূন্যপদ নিয়ে চলছে দেশের সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়গুলো। মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদপ্তর-মাউশির আওতাধীন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোতে প্রায় দুই হাজার শিক্ষক পদ শূন্য। আবার গড়ে প্রতিদিন প্রায় ৪০ জন শিক্ষক অবসরে যাচ্ছেন। এছাড়াও কারিগরি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোতে ৭০ শতাংশ শিক্ষকের পদ ফাঁকা।
প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের সচিব ফরিদ আহামদ বলেন, ‘শিক্ষক নিয়োগে আগে দুই বছর সময় পার হয়েছে। সারা দেশে একসঙ্গে নিয়োগ পরীক্ষা হওয়ার কারণে বাড়তি কিছু সময়ের প্রয়োজন হয়।
প্রতিবছর প্রায় ছয় হাজার শিক্ষক অবসরে যান। ফলে দ্রুত নিয়োগপ্রক্রিয়া সম্পন্ন করতে আমরা ক্লাস্টার ভিত্তিতে নিয়োগ প্রক্রিয়া চালু করেছি, যাতে বছরে দুটি নিয়োগ দিতে পারি।’
শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের কারিগরি ও মাদরাসা বিভাগের অতিরিক্ত সচিব (প্রশাসন ও অর্থ) মো. রফিকুল ইসলাম বলেন, একটি নিয়োগপ্রক্রিয়া শেষ হতে না হতেই পুনরায় সমপরিমাণ পদ শূন্য হয়ে যাচ্ছে।
বাংলাদেশ সরকারি কর্ম কমিশনের (পিএসসি) মাধ্যমে কারিগরি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে শিক্ষক নিয়োগ দেয়া হয়ে থাকে। মানসম্মত শিক্ষক নিয়োগের ক্ষেত্রে কিছু নিয়ম মানা হয়। এসব দিক বিবেচনা করে অধিকতর যাচাই-বাছাই শেষে নিয়োগ সম্পন্ন করা হয়।
তিনি বলেন, ‘পদোন্নতির মাধ্যমে আমরা নিচের পদগুলো ফাঁকা করে থাকি। পরে এসব পদে দ্রুত নিয়োগ দেয়া হয়। এবারের পরিকল্পনায় কিছুটা ভুল ছিল, ফলে ফাঁকা পদের সংখ্যা বেড়ে গেছে। আশা করছি, আগামী দুই বছরের মধ্যে শিক্ষকসংকট আর থাকবে না।’
মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদপ্তর-মাউশির আওতাধীন সারা দেশে নিবন্ধিত সরকারি ও বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের সংখ্যা ২৩ হাজার ৪৩৬। এসব বিদ্যালয়ে কর্মরত শিক্ষকের সংখ্যা ৪ লাখ ৪১ হাজার ৬ জন।
নতুন শিক্ষাক্রমের ওপর এক দিনের অনলাইন ও তিন দিনের সরাসরি প্রশিক্ষণ দেয়া হয়েছে। এই স্তরে আরও ২৮ হাজার ১৯৩টি কিন্ডারগার্টেনে কর্মরত আছেন ২ লাখ ৪৬৭ জন শিক্ষক। এই শিক্ষকদের প্রশিক্ষণের আওতায় আনা সম্ভব হয়নি।
প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের আওতাধীন সরকারি ও বেসরকারি মোট ১ লাখ ১৫ হাজার শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে কর্মরত আছেন ৬ লাখ ৫২ হাজার শিক্ষক। এর মধ্যে ৬৫ হাজার ৫৬৬টি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে কর্মরত ৩ লাখ ৯০ হাজার ৪৫ জন শিক্ষককে প্রশিক্ষণ দেয়া হবে।
গত মাসের শেষ সপ্তাহে ২০ থেকে ৩০ জন শিক্ষকের কয়েকটি ব্যাচ নিয়ে সরাসরি প্রশিক্ষণ কার্যক্রম শুরু হয়েছে। বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের প্রায় আড়াই লাখ শিক্ষক এই প্রশিক্ষণ থেকে বঞ্চিত।
আজ বৃহস্পতিবার (৫ অক্টোবর) আন্তর্জাতিকভাবে পালিত হচ্ছে বিশ্ব শিক্ষক দিবস। দেশে প্রথমবারের মতো দিসবটি জাতীয় পর্যায়ে পালিত হচ্ছে। এবারের প্রতিপাদ্য ‘কাঙ্ক্ষিত শিক্ষা পেতে যেমন শিক্ষক চাই : শিক্ষকসংকট ঠেকাতে বৈশ্বিক উদ্যোগ’।
অর্থাৎ মানসম্মত শিক্ষা বাস্তবায়নে দক্ষ শিক্ষক নিয়োগ দিতে হবে।
সংবাদটি ভালো লাগলে শেয়ার করুন

বিষয়: * নিয়োগপ্রক্রিয়া * প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের সচিব * শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান
সর্বশেষ সংবাদ