নওগাঁর আত্রাইয়ে বানভাসিদের অনুদানের চাল বিতরণে অনিয়মের অভিযোগ
অভিযোগে জানা যায়, হাটকালুপাড়া ইউনিয়নের ৮নং ওয়ার্ডটি নদী বেষ্টিত হওয়ায় তারা বেশি ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছেন। কিন্তু সেখানকার বানভাসিদের অনুদানের চাল না দিয়ে পরিষদের চেয়ারম্যান নিজের ইচ্ছেমতো তার অনুগত লোকদের চাল দিয়েছেন। যেটা পুরোপুরি বেআইনি। যার কারণে প্রকৃত বানভাসিরা সরকারি অনুদান থেকে বঞ্চিত হয়েছেন। এছাড়া অনুদানের চাল কম দেওয়ারও অভিযোগ করেছেন তারা। তিনি ১০ কেজি না দিয়ে জনপ্রতি ৭-৮ কেজি করে চাল দিয়েছেন। আর চাল না পাওয়া প্রকৃত বানভাসিরা প্রতিবাদ করতে গেলে চেয়ারম্যান তার লোকজন দিয়ে তাদেরকে মারধর করেছে বলে অভিযোগে উল্লেখ করা হয়।
ভূক্তভোগী শাহিন মন্ডল বলেন, চেয়ারম্যান হাটুরিয়া, বাদ্যপাড়া লোকজনকে চাল দিচ্ছিলো। যারা কোনো কাজ বা বানভাসি ছিলো না। অথচ আমিসহ আমার এলাকার অনেক বানভাসি আছি এবং যারা দিনরাত পরিশ্রম করেছে। তাদেরকে না দিয়ে অন্যদের দিচ্ছিলো। আমি আমার নাম কোথায় জানতে চাইলে প্রথমে আমাকে ধাক্কা দিয়ে বলা হয় তুই কে? এরপর চেয়ারম্যানের নির্দেশে তার ভাগ্নে আমাকে মারধর করে। পাশাপাশি হাটকালুপাড়ার মেম্বারও আমাকে মেরেছে। আমি এর সঠিক বিচার চাই।
অভিযোগ দিতে আসা মাসুদ বলেন, যেখানে দূর্যোগ নাই, বা যারা কাজ করেনি চেয়ারম্যান তাদেরকে চাল দিয়েছে। আমি জানার পর সঙ্গে সঙ্গে চেয়ারম্যানকে বিষয়টি জানাই। চেয়ারম্যান তখন শনিবারে চাল দিতে চায়। কিন্তু এক পর্যায়ে শুক্রবার বিকেলেই চাল দেওয়ার কার্যক্রম প্রায় শের করে। তখন গ্রামের লোকজন সেখানে গিয়ে অনুদানের চাল চাইলে চেয়ারম্যান বলে তোদের জন্য কোনো চাল নেই। তিনি বলেন, এখানে ৪ শত লোকের জন্য সরকারিভাবে চাল দেওয়া হয়েছে। চেয়ারম্যান কতোজনকে চাল দিয়েছে সেটা তিনিই জানেন। তাই আমরা এর প্রতিকার চাইতে ইউএনও বরাবর লিখিত অভিযোগ দিয়েছি। আশাকারি তিনি সঠিক বিচার করবেন।
অভিযোগ দিতে আসা আরেকজন বান্দাইখাড়ার আনারুল জানালেন, আমার বাড়িতে যে কয়জন অনুদান পাওয়ার কথা তাদেরকে না দিয়ে আমার ভাতিজা আইয়ুবকে দেওয়া হয়েছে। তাও আবার পরিমাণে ৭ কেজি চাল দেওয়া হয়েছে। অনেক কষ্ট করে আমরা বাধটি রক্ষা করেছি। তারপরও কোনো অনুদান দিলো না চেয়ারম্যান।
এব্যাপারে ৮নং ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য আব্দুল খালেক বিশা বলেন, আমার ওয়ার্ডে বন্যায় সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে লোকজন। অথচ সেখানেই অনুদান দেওয়া হয়নি। আমি আমার গ্রামের লোকজন নিয়ে দিনরাত পরিশ্রম করেছি। এই ওয়ার্ডে বানভাসির সংখ্যা অনেক বেশি। অথচ চেয়ারম্যান আফজাল আমাকে কিছু না জানিয়ে তার ইচ্ছেমতো লোকজনকে দিয়েছে অনুদান। আমার গ্রামের ৮-১০ জন চাউল পায়নি। আমি এই বিষয়টি চেয়ারম্যানকে জানালে তিনি কোনো গুরুত্ব দিচ্ছিলো না। এক পর্যায়ে লক্ষীপুরের শাহিন চেয়ারম্যানকে বলে আমার বাড়িঘর ডুবে গেছে এবং দিনরাত কাজ করেছি। তখন বিষয়টি নিয়ে উত্তেজনা সৃষ্টি হয়। এবং শাহিনকে মারধর করা হয়।
অভিযোগ অস্বীকার করে হাটকালুপাড়া ইউনিয়নের চেয়ারম্যান আফজাল হোসেন বলেন, এটা বিশা মেম্বারসহ একাধিক ব্যক্তির উসকানিতে হচ্ছে। আপনারা সরেজমিনে খোঁজ নিতে পারেন, আমি কাদের চাল দিয়েছি?যারা প্রকৃত বানভাসি এবং কাজ করেছে তাদেরকেই দেওয়া হয়েছে।