শিশুর উপর স্ক্রিন টাইমের ক্ষতিকর প্রভাব ও এর নিয়ন্ত্রন কৌশল
শিশুর উপর স্ক্রিন টাইমের ক্ষতিকর প্রভাব ও এর নিয়ন্ত্রন কৌশল একটা শিশু যতক্ষন ডিভাইসে টাইম স্পেন্ড করে সেটাই তার স্ক্রিন টাইম।
পিডি, ট্যাব, মোবাইল যেকোন কিছুই হতে পারে। লার্নিং এর জন্য একটি নির্দিষ্ট বয়সে কিছুক্ষন শিক্ষামূলক প্রোগ্রাম বা মজার কাটুর্ন, ছড়া গান এসব শিশু দেখতেই পারে। তবে স্ত্রিন টাইমের ক্ষেত্রে শিশু কী দেখছে, কতক্ষন দেখছে বা সেটা তার বয়স উপযোগী কিনা এসব বিষয় মাথায় রাখা খুবই গুরুত্বপূর্ন।
শিশুর উপর স্ত্রিন টাইমের ক্ষতিকর প্রভাব:
১। স্লিপিং প্যাটার্নে ব্যাঘাত ঘটে।
২। খাবার চিনতে না শেখা। খাবার সময় শিশুর হাতে ডিভাইস তুলে দেওয়াটা খুবই কমন। এতে শিশুর মনোযোগ খাবারে কমে আর স্ত্রিনে বেশি থাকে খাবার চিনতে ও শেখে না।
৩। আচার ব্যবহারে পরিবর্তন-শিশুরা অনুকরণ প্রিয়। ডিভাইসে যে কাটুর্ন বা ভিডিও চলছে তা থেকে প্রতিনিয়ত শিশুরা শিখছে তা ভালো হোক বা মন্দ। এতে তার সমগ্র আচার আচরন পরিবর্তন ও আসে। যা শিশুর বিকাশকে ব্যহত করছে।
৪। পরিবারের সাথে তার কম সময় কাটানো-যেসব শিশুর স্ক্রিন টাইম বেশি তারা পরিবারের সাথে কম সময় কাটাতে চায়। সামাজিক বন্ধন কম হওয়ার কারণে তাদের মানসিক বিকাশ দেরিতে অন্য শিশুদের সাথে সহজে মিশতে পারেন।
৫। শিশুর শারীরিক ও মানসিক স্বাস্থ্য বিকাশে বাঁধা হয়ে দাঁড়ায় অতিরিক্ত স্ত্রিন টাইম।
৬। খেলাধুলার প্রতি একদম আগ্রহ হারিয়ে ফেলে।
৭. শিশুর সৃজনশীলতা বিকাশে অন্যতম অন্তরায়।
স্ক্রিন টাইম নিয়ন্ত্রনের কৌশল:
১। শিশুকে পর্যাপ্ত সময় দিন।
২। শিশুর বিকাশে সহায়তা করে এমন খেলা তুলে দিন। যেমন: বিল্ডিং ব্লক, ছবি আঁকা ইত্যাদি।
৩। অমাচিত ভিডিও ব্লক করে দিন। ফ্রেন্ডলি সেটিংস দিয়ে রাখুন মোবাইল।
৪। শিশুকে আদরের পাশাপাশি সঠিক উপায়ে শাষন করাটাও জরুরী।
৫। ছুটির দিনে বাইেও ঘুরতে নিয়ে যান এবং অন্য বাচ্চাদের সাথে মেলামেশার সুযোগ করে দিন।
৬। ঘরের ছোটখাট কাজে আপনার শিশুকেও সাথে নিন, যাতে তার কাজ শেখার আগ্রহ বাড়ে। যেমন: গাছে পানি দেওয়া, কাপড় ভাজ করা ইত্যাদি।
৭। সর্বোপরি নিজেকে পরিবর্তন করুন। শিশুর সামনে অপ্রয়োজনে ডিভাইজ ব্যবহার করা থেকে বিরত থাকুন। একটা শিশু ভালোভাবে বেড়ে ওঠার সাথে আপনার নিজের, সমাজের ও দেশের সুন্দর ভবিষ্যৎ জড়িত। তাই শিশুর পরিপূর্ন বিকাশে অতিরিক্ত স্ত্রিন টাইমকে অন্তরায় হতে দিবেন না। ভালোভাবে বেড়ে উঠুক প্রতিটি শিশু। জান্নাত আরা, সহকারী শিক্ষক, ৪৩নং তেজদাসকাঠী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, পিরোজপুর, বরিশাল।