শিরোনাম
কালীগঞ্জে পৌষ সংক্রান্তির ঐতিহ্যবাহী মাছের মেলা অনুষ্ঠিত   » «    ফ‍্যাসিবা আ’ওয়ামী সরকারের সকল মামলায় খালাস “বাবর” মদনে আনন্দ মিছিল   » «    দৌলতপুরে ইউসুফ হত্যা মামলার প্রধান আসামি এলমেচ গ্রেফতার   » «    ভারত যাওয়ার পথে ইডেন ছাত্রলীগ নেত্রীসহ গ্রেফতার ২   » «    সবজিতে স্বস্তি ফিরলেও চড়া মাছ-মুরগি ও চালের বাজার   » «   

তিন দিন ধরে সৈয়দপুর ১০০ শয্যা হাসপাতাল চত্বরে তিন ফুট পানি

সৈয়দপুর, নীলফামারী প্রতিনিধি:
নীলফামারীর সৈয়দপুর পৌরসভার ড্রেনেজ অব্যবস্থাপনার করুণ পরিস্থিতির শিকার হয়ে তিন ফুট পানির নিচে পুরো হাসপাতাল চত্বর। তিন দিন ধরে চারপাশে থৈ থৈ পানির অবস্থানের ফলে হাসপাতালে ঢুকতে ও বের হতে চরম ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছে চিকিৎসা নিতে আসা লোকজনকে।  সেই সাথে সাপের উৎপাত বাড়ায় আতঙ্কের মধ্যে পড়েছে রোগীসহ স্বজন, চিকিৎসক ও কর্মচারীরা।
গত শনিবার থেকে শুরু বৃষ্টির কারণে হাসপাতাল চত্বর জুড়ে হাটুপানি জমে। রবিবার বিকেল থেকে বৃষ্টি থামায় কিছুটা কমলেও ড্রেন দিয়ে নিষ্কাশন না হওয়ায় পানি একেবারে কমছেনা। বরং উল্টা আশপাশের পানি এসে এখানেই পড়ছে। ফলে প্রায় তিনফুট পর্যন্ত স্থায়ী পানিবদ্ধতার সৃষ্টি হয়েছে। এতে হাসপাতালের মূলভবনসহ নতুন বিল্ডিং, স্টাফ কোয়ার্টার, মসজিদ, করোনা ইউনিট অর্থাৎ পুরো হাসপাতাল এলাকায় টুইটম্বুর অবস্থা। স্টাফ কোয়ার্টারের নিচতলায় পানি ঢুকে পড়েছে।
সোমবার (২৫ সেপ্টেম্বর) বেলা ১ টায় সরেজমিনে দেখা যায় হাসপাতালের প্রধান ফটক (গেট) থেকে জরুরী বিভাগ পর্যন্ত যেতে পানি মারিয়ে অতিকষ্টে চলাচল করতে হচ্ছে। এতে নারী-শিশু-বয়ষ্করা চরম ভোগান্তী পোহাচ্ছে। অনেকে বাধ্য হয়ে এই সামান্য (৪০ ফুট) পথ পাড়ি দিতে রিকশা ভাড়া নিচ্ছেন। নার্স-বয়সহ যারা স্টাফ কোয়ার্টারে থাকেন তারা বাসা ও হাসপাতালে যাতায়াতে হয় পানিতে পা ভিজিয়ে যাচ্ছেন অথবা এটুকু পথ যেতে অতিরিক্ত অর্থ খরচ করে রিকশা বা অন্য বাহন ব্যবহার করছেন।
হাসপাতালে চিকিৎসাধীম উপজেলার খাতামধুপুর ইউনিয়নের মুশরত এলাকার আবুল হোসেন বলেন, এইলা কোন কথা হইলো। দুই দিন ধরি হাসপাতালত আছু পানি ডিঙি যাবার আসির নাগিছে। এতবড় হাসপাতালের এ্যাইংকা দূরাবস্থা। মানুষ কষ্ট করেছে। পানি বেরকের কোন চেষ্টাই নাই। তার উপর রাইতোত সাপ ঢোকেছে। কখন যে কাক কামড়ায় বলা মুশকিল। মশাও উৎপাত করেছে।
কোলের শিশুকে নিয়ে চিকিৎসা নিতে আসা পাশ্ববর্তী দিনাজপুর জেলার চিরিরবন্দর উপজেলার গৃহিণী আরাফা বেগম বলেন, অসুস্থ বাচ্চা নিয়ে এসে পানির কারণে আরেক ভোগান্তিতে পড়েছি। অটো থেকে নেমে দেখি গেটের পরই হাটুপানি। বাধ্য হয়ে রিকশা নিতে হলো জরুরী বিভাগে যেতে। এটুকুর জন্য অতিরিক্ত ৪০ টাকা খরচ করতে হয়েছে। অনেকে পানি মারিয়েই যাচ্ছে। নোংরা পানিতে নামায় অসুস্থ হওয়ার আশঙ্কা আছে।
এব্যাপারে সৈয়দপুর ১০০ শয্যা হাসপাতালের আবাসিক মেডিকেল অফিসার (আরএমও) ডা. নাজমুল হুদা বলেন, আমাদের এই হাসপাতালটি বেশ নিচু জায়গায়। সড়ক থেকে প্রায় ৩ ফুট নিচু হওয়ায় চারপাশের পানি এসে এখানে জমে। আর ড্রেন দিয়ে পানি বের হয়ে যে ভাগাড়ে পড়ে সেটা ভরাট হয়ে পড়েছে। তাছাড়া ড্রেনগুলোও নিয়মিত পরিষ্কার না করায় পানি প্রবাহও বাধাগ্রস্ত হচ্ছে।
তিনি বলেন, যেভাবে পানি জমেছে তাতে খুবই দূরাবস্থার শিকার হয়ে পড়েছি। এই পানি নিষ্কাশন না হয়ে উল্টো ড্রেন দিয়ে বাইরের পানি ভেতরে ঢুকে পড়েছে। যা সহজে বের করে দেয়া অত্যন্ত দূরহ হয়ে দাঁড়িয়েছে। তাৎক্ষনিক কোন ব্যবস্থা নেয়ারও কোন সুযোগ নেই। রোগীরা বেশ কষ্ট করে আসছে। আমরা চেষ্টা করছি জরুরী বিভাগসহ ভর্তি রোগীদের যথাযথ চিকিৎসা দিতে।
আরএমও আরও বলেন, গত দুই দিনে সাপের উৎপাত বেড়েছে। ইতোমধ্যে ৯টি সাপ মারতে হয়েছে। পানিবদ্ধতা স্থায়ী হলে এই দুর্ভোগ আরও বৃদ্ধি পাবে। তিনি পৌর মেয়র সহ জনপ্রতিনিধি ও প্রশাসনকে অবগত করে সমস্যা সমাধানের দ্রুত কার্যকর ব্যবস্থা নেয়ার অনুরোধ জানিয়েছেন উল্লেখ করে বলেন, মেয়র লোক পাঠালেও কোন উন্নতি হয়নি। পুরো ক্যাম্পাসে মাটি ভরাট করে বিল্ডিংগুলো নতুন করে নির্মাণ করতে হবে বলেও মন্তব্য করেন তিনি।
সংবাদটি ভালো লাগলে শেয়ার করুন
বিষয়: * চরম ভোগান্তি * পানিবদ্ধতা
সাম্প্রতিক সংবাদ